মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার ১০ টি কার্যকরী উপায় জানুন
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকগুলো কার্যকরী উপায় রয়েছে যা আমাদের ভালোভাবে জানতে হবে। তাহলে আমরা সহজেই এই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারবো। এছাড়া আমরা জানবো মানসিক চাপে লক্ষণগুলো সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃমানসিক চাপ বর্তমান সময়ে এই কথাটা প্রায়ই আমরা শুনে থাকি। মানসিক চাপ ব্যক্তির মনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আজকের এই পোষ্টে মানসিক চাপ থেকে কিভাবে মুক্ত হওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
মানসিক চাপ কি
কোন ঘটনাকে একজন ব্যক্তি চাপ হিসেবে নিতে পারে আবার অন্য আরেকজন ব্যক্তি চাপ হিসেবে নাও নিতে পারে। আসলে এটি একটি মানসিক প্রতিক্রিয়া। সাধারণত মানসিক চাপ শারীরিক এবং মানসিক প্রতিক্রিয়ার সাথে জড়িত। যে কোনো ঘটনা স্বাভাবিকের তুলনায় যদি ভিন্নভাবে আমাদের সামনে উপস্থিত হয় এবং সেই ঘটনাকে যদি আমরা চাপ দায়ক মনে করি তখন তা মানসিক চাপের সৃষ্টি করে।
আরো পড়ুনঃ পায়ের নখের ফাঙ্গাস দূর করুন ছয়টি ঘরোয়া উপায়ে
অন্যভাবে বলা যায় কোন ঘটনার সাথে আমরা যে প্রত্যাশা করি সেটা যদি পূরণ না হয় তাহলে আমরা মানসিক চাপ অনুভব করি। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন কাজকে সফলভাবে করার জন্য মনের ভেতর থেকে যে অনুভূতি সৃষ্টি করে তাই মানসিক চাপ। এই মানসিক চাপ অনেক সময় ব্যক্তি সুস্থ থাকার উপর বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে দশটি কার্যকরী উপায়
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যদি আমরা কতগুলো উপায় অনুসরণ করি তাহলে সহজেই এই চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি। বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তাই অনেকগুলো কাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এই পর্যায়ে মানসিক চাপ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই ব্যাপারে আলোচনা করব।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমরা মনকে সতেজ রাখতে পারি। এটা হতে পারে আধাঘন্টা ব্যায়াম করা বা হাটা। আবার মেন্টাল এক্সারসাইজ বা মাইন্ডফুল মেডিটেশনের মাধ্যমেও আমরা আমাদের মানসিক চাপ কমাতে পারি। এজন্য দিনের নির্দিষ্ট একটি সময়েBreathing এক্সারসাইজ করা যেতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে স্ট্রেস হরমোন যা আমরা কটিসোল হরমোন নামে চিনি সেই হরমোনকে ব্যালেন্সে রাখা সম্ভব। আর ট্রেস হরমোন যখনই ব্যালেন্স থাকবে আমাদের মানসিক চাপ ততই কমে যাবে।
সব সময় মাইন্ডফুল থাকা
এক্ষেত্রে যখন যে কাজ করা হয় সেই কাজে পুরোপুরি মনোযোগ দেওয়াকে বুঝিয়ে থাকে। কারন যখন কোন কাজে আমরা কোন কাজ একাগ্রতা নিয়ে করে থাকি তখন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।
নিজের অনুভূতিগুলো লিখা
আপনি যদি বাসায় একটি নির্দিষ্ট খাতায় বা নোটপ্যাডে নিজের অনুভূতিগুলো লিখে রাখতে পারেন তাহলে সেটি হবে একটি ভাল প্র্যাকটিস মানসিক চাপ কমানোর জন্য। এজন্য ধীরে ধীরে প্র্যাকটিস বা এক্সারসাইজের মাধ্যমে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
নন ভায়োলেট কমিউনিকেশন
অনেক সময় আপনি খেয়াল করবেন আপনার আশেপাশের মানুষ জনের সাথে আপনার যোগাযোগ ভালো হচ্ছে না যে কোন কারনে। যেমন তাদের সাথে হয়তো কথা বলতে ভালো লাগছে না বা কথা বললেও হয়তো রুঢ় ভাবে কথা বলছেন। এই কারণেও মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে। এই ধরনের ব্যবহার সাধারণত হয়ে থাকে কোন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য বা নিজের পরিবারের আপন জনের কারো দীর্ঘদিনের অসুস্থতার তার কারণে।
আবার আপনার মেন্টাল আঘাত হলে এক ধরনের ট্রমা আসতে পারে। যেমন নিজের পরিচিত কেউ মারা গেলে যাকে আপনি অনেক ভালোবাসেন সেটা হচ্ছে বড় ধরনের ট্রমা বা আপনার ব্যবসায় বড় ধরনের কোন ক্ষতি হলে বা চাকরি চলে গেলে। আবার ছোট ছোট ট্রমা হল একই ছাদের নিচে বাস করলেও সম্পর্ক ভালো না থাকা।
এক্ষেত্রে আপনার মনের কথাগুলো অপরজনকে খুলে বলতে পারেন। আপনার অনুভূতির কথা, চিন্তার কথা খুলে বললে, আসলে আপনি কি চাচ্ছেন তাহলে আপনার ট্রেস হরমোন অনেকটাই ব্যালেন্সে থাকবে । এবং আপনি মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন।
একঘেয়েমি কাজ কমানো
অনেক সময় দেখা আমাদের প্রতিদিনই কিছু কিছু কাজ থাকে যেগুলো নিয়মমাফিক করতে হয়। এসব কাজ করতে করতে অনেক সময় আমাদের মধ্যে একঘেয়েমি ভাব চলে আসে। এজন্য দেখা যাচ্ছে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে যে কোন কাজ করতে গিয়ে রাগ হতে পারে আবার আশেপাশে মানুষদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকি। কারণ আমরা তখন মানসিক চাপ অনুভব করি।
আরো পড়ুন: বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর - কিশোরীদের পরিবর্তন সম্পর্কে জানুন
এজন্য এই একঘেয়েমি ভাব কমাতে মাঝে মাঝে আমাদের কাজ থেকে ব্রেক নেওয়া যেতেই পারে। এই সময় নিজেকে নিজের সময় দেওয়া যেতে পারে, নিজের শখের কাজগুলো করা যেতে পারে বা ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন।
কাইন্ডনেস
অনেক সময়ে কাইন্ডনেস প্রকাশ করার মাধ্যমে আমাদের মনকে আমরা সহজে ভালো রাখতে পারি। এক্ষেত্রে আমরা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখতে পারি যে প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের কাইন্ডনেস প্রকাশ করব। যেমন কাউকে কোন কাজে সাহায্য করা সেটা হতে পারে আর্থিক বা নিজের পরিশ্রম দিয়ে।এতে মন ভালো হয় এবং মানসিক চাপ কমানো যায়।
স্ক্রিন টাইম কমানোর মাধ্যমে
বর্তমান সময়ে আমরা এত বেশি সময় ডিভাইসে দেই যে অনেক সময় এই কারণে কোটি সোল হরমোন বেড়ে যেতে পারে। কারণ এতে আমরা মানসিক চাপ অনুভব করি। এক্ষেত্রে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ডিভাইস ব্যবহার করার জন্য টার্গেট নেয়া যেতে পারে। এতে মানসিক চাপ কমানো যাবে অনেকটাই।
মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা
এক্ষেত্রে আমরা লিখে রাখতে পারি আমরা কি কি কারণে মানসিক চাপ অনুভব করে থাকি। সেই স্পেসিফিক সমস্যার যদি আমরা সমাধান বের করতে পারি তাহলে আমরা মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারি। যেমন, যদি আমাদের কোন রিলেশনের কারণে মানসিক চাপ অনুভব করি তাহলে সেই রিলেশন কিভাবে ভালো করা যায় সেটা লিখে রাখা যায়।
মানে অল্টারনেটিভ সলিউশন বের করতে পারলে অনেকটাই চাপমুক্ত থাকা যায়। এক্ষেত্রে আবার বিভিন্ন এক্সারসাইজ করেও মানসিক চাপ কমানো যায়।
এখানে আরেকটি বিষয় আসতে পারে সেটি হচ্ছে সময় ব্যবস্থাপনা। অর্থাৎ আমরা আমাদের নির্দিষ্ট কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করব।কাজ জমা না করে যদি নিয়মিত কাজ করে কাজ শেষ করতে পারি তাহলে অনেকটাই মানসিক চাপ মুক্ত থাকা যায়। আবার আমাদের কাজের যেকোনো একটি গোল সেট করেও মানসিক চাপ কমানো যায়।
ফ্যামিলি টাইম
মানসিক চাপ কমানোর জন্য পরিবারের সময় দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বর্তমান সময়ে একটি পরিবারের সবাই বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এ কারণে তাদের মধ্যে কমিউনিকেশন গ্যাপ চলে আসতে পারে। এক্ষেত্রে পরিবারের সবাইকে একটি সময় মেইনটেইন করতে হবে। যেমন নির্দিষ্ট একটি দিনে পরিবারের সবাই একসাথে ঘুরতে যাওয়া বা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় একসাথে খাবার খাওয়া। এভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় অনেকটাই।
বাটারফ্লাই পদ্ধতি
অনেক সময় আমরা খুব বেশি টেনশন বা মানসিক চাপ ফিল করি। এই সময় বাটারফ্লাই হ্যান্ড পদ্ধতি এর মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে নিজেই নিজেকে বলা যে আমি পজিটিভ থাকবো, নিজের মধ্যে পজেটিভ দিকগুলো নিয়ে আশা আমি খুব ইম্পরট্যান্ট একজন মানুষ। এতে স্ট্রেস হরমোন অনেকটাই কমে যায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় অনেকটাই।
মানসিক চাপ কমাতে খাবারের ভূমিকা
মানসিক চাপের কারণে আমাদের শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- সব সময় মাথাব্যথা করা, কোন কাজে মনোযোগ কমে যাওয়া, হঠাৎ রেগে যাওয়, ক্ষুদার ভাব হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা কমে যেতে পারে, হাট হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে বা কমে যেতে পারে, হঠাৎ রেগে যাওয়া, বিষন্নতা এবং উদ্বিগ্নতা, কোন কাজ করতে উৎসাহ না পাওয়া, মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করা ইত্যাদি।
তাই সুস্থ জীবন যাপন করতে মানসিক চাপ কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। অন্য অনেক কিছু ভালো অভ্যাস ছাড়াও কিছু কিছু খাবার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। কারণ কিছু কিছু খাবারে যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা স্ট্রেস হরমোন কটিছল কমাতে সাহায্য করে, আর কর্টিসোল হরমোন কমলে মানসিক চাপ কমতে পারে।
এ তালিকায় প্রথমেই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সাইট্রাস ফল যেমন, লেবু ও কমলা জাতীয় ফল, আঙ্গুর ইত্যাদি। আবার যেসব খাবার চিবিয়ে খেতে হয় এবং মচমচে শব্দ হয় সেসব খাবার খেলে মানসিক চাপ কমতে পারে। যেমন, গাজর আপেল ইত্যাদি। মানসিক চাপের কারণে চোয়ালের সংকোচন বেড়ে যেতে পারে, এই জাতীয় খাবার খেলে চোয়ালের সংকোচন ও কমে।
আরো পড়ুনঃ ওসিডি রোগের ওষুধ কত দিন খেতে হয় - ওসিডি থেকে মুক্তির উপায়
বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন ঢেঁড়স, পালং শাক ইত্যাদি খাবার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। পালংশাকে শরীরে ডেপোমিন তৈরি করে যা আমাদের মেজাজকে ঠান্ডা রেখে ফুরফুরে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও গ্রিন টি, ডার্ক চকলেট, স্যালমন মাছ এই জাতীয় খাবার খেলেও মানসিক চাপ কমে। তাই মানসিক চাপ কমাতে এই জাতীয় খাবার আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে।
মানসিক চাপ কমাতে ইসলাম
মানসিক চাপ কমাতে ইসলামে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। ইতিবাচক চিন্তা করা এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোন সমস্যার সমাধান এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। এটি দ্বারা আল্লাহ সুবহানা তায়ালার প্রতি বিশ্বাস এবং সর্বশক্তিমান সম্পর্কে গভীর চিন্তার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ আমাদের আল্লাহ সুবহান তায়ালার প্রতি ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।
এ বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, "অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ কর অভিযোগ করা বন্ধ কর"। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস স্থাপন এবং ভরসা স্থাপন এর কথা বলেছেন।তাই মানসিক চাপ কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলতে পারি।
এছাড়া আমরা অধিক পরিমাণে দোয়া করতে পারি। কারণ কোন কিছু পাওয়ার জন্য দোয়া করার কোন বিকল্প নেই। সবকিছু দেওয়ার মালিক আল্লাহ। এটা আমাদের পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে এবং আল্লাহর উপর ভরসা থাকতে হবে। এজন্য আমরা বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করতে পারি, কোরআন পাঠ করতে পারি, বেশি বেশি দরুদ পড়তে পারি, নামাজে আরো অধিক যত্নবান হতে পারি ইত্যাদি।
মানুষের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করে আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের জন্য যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। তাই আমাদের ভালো-মন্দ সবকিছু আল্লাহর উপর ছেড়ে দিতে হবে। আমরা যখন অনেক বেশি প্রত্যাশা করি কোন বিষয়ে সেটা না পেলে হতাশ হয়ে যাই, এক্ষেত্রেও আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আবার কারো জন্য কিছু করে তার প্রতিদানের আশা না করে আমরা আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করব।
অনেক সময় আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের আশেপাশে মানুষের সাথে আমরা তুলনা করে থাকি এবং কষ্ট পেয়ে থাকি। আমরা মনে করি আমি আমরা তাদের তো কেন নই। কিন্তু এটা না করে আমাদের আশেপাশে আরো অনেক মানুষ রয়েছে যারা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত তাদের দিকে তাকানো উচিত এবং এর জন্য আমরা যে অবস্থায় আছি শুকরিয়া আদায় করলে আমাদের জীবন অনেকটাই চাপমুক্ত হবে এবং সহজ হবে।
আমাদের জীবনে যখন সমস্যা আসে তখন আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। কি করব বুঝতে বুঝতে পারি না। এজন্য অনেক সময় আমরা এ সমস্যার ব্যাপারে কারো সাথে শেয়ার না করে নিজের ভিতর রেখে দেই এবং মানুষ মানসিক চাপে ভুগি। এক্ষেত্রে আমরা একজন সৎ এবং আল্লাহ ভীরু মানুষের সাথে পরামর্শ করতে পরি।
তিনি আমাদের সৎ এবং ভালো কোন পরামর্শ দিতে পারেন যা আমাদের জন্য ভাল ফলাফল নিয়ে আসতে পারে। ইসলামে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
মানসিক চাপ কত রকম হতে পারে
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের জানতে হবে মানসিক চাপ কত রকম হতে পারে। কারণ মানসিক চাপের ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন রকম পন্থা অবলম্বন করতে পারি এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। বৈজ্ঞানিকভাবে মানসিক মানসিক চাপ সাধারণত দুই রকম ভাবে আসতে পারে-
- নিয়মিত চাপঃ আমরা প্রতিদিনের কাজের জন্য যে সহজ ভাবে মনের ভেতর থেকে চাপ অনুভব করি এটাই নিয়মিত মানসিক চাপ।এই চাপ হতে পারে বাসায় বা অফিসে যেকোন কাজের জন্য। বা যে কোন সহজ ঘটনা যেগুলো আমাদের চারপাশে সবসময়ই ঘটে থাকে অর্থাৎ আমরা প্রতিদিনের কাজের জন্য মনের ভিতর থেকে যে চাপ অনুভব করি এটাই নিয়মিত মানসিক চাপ।
- আকস্মিক চাপঃ আকস্মিক চাপকে হঠাৎ আসা কোন চাপকে বোঝানো হয়ে থাকে।যে ঘটনার কথা আমরা কখনোই আমাদের মন থেকে ভাবি না কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের জীবনে চলে আসে সেটাই হচ্ছে আকস্মিক চাপ বা এক্সট্রা অডিরারি চাপ।
মানসিক চাপ কেন তৈরি হয়
বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। যেমন মানসিক চাপ তৈরি হওয়ার জন্য কোন ঘটনার যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেই ঘটনাকে ব্যক্তি কিভাবে দেখছে এবং ঘটনার কারণে ব্যক্তির মানসিক প্রতিক্রিয়া কি হচ্ছে। অর্থাৎ ব্যক্তি কোন ঘটনায় কি ধরনের প্রত্যাশা করছে এবং যদি সে প্রত্যাশা পূরণ না হয়ে থাকে তখন সে ব্যক্তি মানসিক চাপ অনুভব করে।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নির্মলের মহৌষধ সজনে পাতার গুড়ো খাওয়ার নিয়ম
কোন ব্যক্তি ঘটনাকে চাপ দায়ক মনে করছে কিনা এবং এই ঘটনার উপর ব্যক্তির ভালো থাকা যদি নির্ভর করে তাহলে তখন মানসিক চাপ তৈরি হয়।
মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়া
- ব্যক্তি অস্থির হয়ে
- যাওয়া ভয় পাওয়া
- ব্যক্তির টেনশন হয়ে থাকে
- ব্যক্তির মন খারাপ হতে পারে
মানসিক চাপের লক্ষণ
মানসিক চাপের কারণে কোন ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আমরা লক্ষণ দেখতে পাই। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি মানসিক চাপে আছে কিনা তার বিভিন্ন কার্যকলাপ দেখে আমরা বুঝতে পারি। এক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায় সেগুলো হলঃ
- ব্যক্তির মধ্যে ভুলে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া হতে পারে
- ব্যক্তির ঘুম কম হতে পারে এজন্য সে অন্য কাজে মনোযোগী নাও হতে পারে
- ব্যক্তির মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে
- ব্যক্তির মধ্যে বিষন্নতা, উদ্বিগ্নতায় আসতে পারে
মানসিক চাপ কি সব সময় ক্ষতির কারণ
মানসিক চাপ থেকে আমাদের মুক্তি পাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। কারণ মানসিক চাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত। মানসিক চাপ অনেক সময়ে আমাদের জীবনের ক্ষতি নিয়ে আসতে পারে কিন্তু অনেক সময়ই কোন ব্যক্তি কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য চাপ তৈরি করতে হয়। এর জন্য আবার কতগুলো বিষয়ে কাজ করে। যেমনঃ
- কোন কাজের জন্য ব্যক্তির ইন্টারেস্ট বাড়ানোর জন্য
- কাজটা যে সে ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন সেটা তাকে বুঝানোর জন্য
- কাজটা দিয়ে সে ব্যক্তি কিছু করবে তার জন্য মনের ভিতর Desire তৈরি করার জন্য চাপ তৈরি করা হয়ে থাকে।কোন কাজের জন্য যে চাপ তৈরি হয় তখন সে ব্যক্তি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।
কিন্তু চাপ যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ এর চেয়ে বেশি হয়ে যায় তখন ব্যক্তির কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায় না। অর্থাৎ মনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হলে ব্যক্তির পারফরম্যান্স কমে যেতে পারে। আবার অতিরিক্ত চাপ না হয়েও যদি চারটা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে সেটাও ব্যক্তির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পরিশেষে
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার ১০ টি কার্যকরী উপায় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আমরা বর্তমানে একটি অস্থির সময় পার করছি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা প্রতিদিন এত মানসিক চাপে থাকি যে নিজেদের কন্ট্রোল করা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু কাজ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি অনেকটাই।
উপরে আলোচনা করা এই উপায়গুলো মেনে চললে আপনাকে মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই রেহাই দিবে। তাই মানসিক চাপ কমিয়ে একটি সুস্থ জীবন যাপনের জন্য আপনি এই উপায় গুলো মেনে চলতে পারেন।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url