সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকের পোস্টে আলোচনা করতে চলেছি। সজনে পাতার গুড়া সঠিক নিয়মে খেলে পাওয়া যায় অনেক উপকার। এছাড়া জানবেন ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
সজনে গাছ আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই দেখা যায়। বিশেষ করে প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় এই সজনে গাছ দেখতে পাওয়া যায়। সজনে গাছের শুধু সজনে পাতা নয়, এর ডাটা,ফুল,ফল, বাকল সহ প্রতিটি অংশই খাওয়া যায়। আজকের পোস্টে আপনাদের জানাবো সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।পোস্ট সূচীপত্রঃ
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে পোস্টের শুরুতে আপনাদের জানাবো। সজনে পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা পাউডার বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে। আমরা প্রতিদিনের ডায়েটে সজনে পাতার গুঁড়ো যেভাবে রাখতে পারি তা নিচে আলোচনা করা হলো।
তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে-
সজনে পাতার গুঁড়ো দিয়ে চা বানিয়ে পান করুনঃ সজনে পাতার গুড়ো সাধারণত চা বানিয়ে খাওয়ার প্রচলন বেশি দেখা যায়। কারন চায়ের সাথে সজনে পাতার গুড়ো পুরোটা পানির সাথে মিশে যাওয়ায় এর পুষ্টি উপাদান সম্পূর্ণ পাওয়া যায়।
তাই প্রতিদিনে চায়ের অভ্যাস থাকলে আপনি চায়ের সাথে সজনে পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারন। আবার শুধু সজনে পাতার গুড়ো দিয়ে চা বানিয়েও খেতে পারেন।
সকালে খালি পেটে খান সজনে পাতার গুঁড়োঃ এছাড়া সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে এক থেকে দেড় চা চামচ সজনে পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে শরবতের মতো খেতে পারেন। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন তাহলে এতে কোনভাবেই চিনি বা মধু যোগ করা যাবে না।
সালাদ হিসেবে গরম ভাতের সাথে খেতে পারেনঃ এছাড়া সালাদে সজনে পাতার গুড়া মিশিয়ে সালাদ কে আরো পুষ্টিকর করে তুলতে পারেন। আবার গরম ভাতের সাথে সজনে পাতার গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।
সজনে পাতার গুড়ো খেতে পারেন স্যুপের সাথেঃ আপনার যদি নিয়মিত স্যুপ খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে এই সুপের সাথে সজনে পাতার গুড়া মিশিয়ে খেলে সুপের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।
সিরিয়াল জাতীয় খাবারের সাথে খান সজনে পাতার গুড়োঃ অনেকেরই সিরিয়াল জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এই জাতীয় খাবারের সাথে সজনে পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাবেন।
মোটকথা, আপনি যেভাবেই সজনে পাতার গুড়ো খাবেন সেভাবেই এর উপকারিতা বহু গুণে মিলবে। তাই সজনে পাতা থেকে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পেতে সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে আজকে থেকেই খাওয়া শুরু করুন।
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
সজনে পাতার গুরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে পোস্টের এই অংশে জেনে নিন। সজনে পাতার গুড়াতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান আরো অন্যান্য অনেক উপকার বয়ে নিয়ে আসে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে সজনে পাতা গুঁড়ো রাখলে মিলবে আরো অন্যান্য উপকারিতা, সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ইতিমধ্যে উপরে আলোচনা করেছি।
নিচে সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
বিভিন্ন ভিটামিনের পর্যাপ্ত উপস্থিতিঃ সজনে পাতার গুড়োতে বিভিন্ন ভিটামিনের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে এতে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে তা দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি এবং যে পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে তা দুধের চেয়ে দুই গুন বেশি। এছাড়া ভিটামিন এ রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে যা গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি।
একটি কলা থেকে আমরা যে পরিমাণ পটাশিয়াম পেয়ে থাকি তার দুই গুণ বেশি আমরা এই সজনে পাতার গুড়ো থেকে পেতে পারি। তাছাড়া পালং শাককে আয়রনের ভান্ডার বলা হয়ে থাকে। এই পালং শাকের চেয়ে তিনগুণ বেশি আয়রন রয়েছে সজনে পাতার গুঁড়ো বা মরিঙ্গা পাউডারে। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে এই ভিটামিনের ভরপুর সজনে পাতার গুড়ো রাখতে পারেন সহজে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতার গুড়ো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ সজনে পাতায় থাকা ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আমাদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। এই ফাইবার সাধারণত দ্রবণীয় এবং দ্রবণীয় হয়ে থাকে। ফলে শরীরে ভেতরে হজমে সহায়তা কারি বিভিন্ন এনজাইম গুলোকে সচল রাখতে সহায়তা করে থাকে। ফলে হজম প্রক্রিয়া হয় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে।
শক্তি বৃদ্ধিতে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতার গুড়ো তে বিভিন্ন ভিটামিন,খনিজ এবং মিনারেল এর পর্যাপ্ত উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়া রয়েছে আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, বি এবং সি। এ সকল পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই আপনি যদি দুর্বলতায় ভুগেন এবং শক্তি বৃদ্ধিকারী কোন সহজ খাবার খোঁজেন তাহলে সজনে পাতা হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ।
দাত এবং হাড় মজবুত করতে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতার গুড়োতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খনিজ। এছাড়া রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফলে নিয়মিত পাতা খেলে দাঁত এবং হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া খনিজ আমাদের শরীরকে দীর্ঘ সময় কর্মক্ষম রাখতে সহায়তা করে থাকে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতার গুড়োঃ নিয়মিত সজনে পাতার গুড়ো প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে রক্ত উৎপাদন বৃদ্ধি পায় সাথে রক্ত সঞ্চালন ভালো ভাবে হতে সহায়তা করে থাকে। ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে সজনে পাতার গুড়োঃ আমরা অনেক সময়ই পেটের গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যায় ভুগে থাকে। এই এসিডিটি সমস্যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে নিয়মিত সজনে পাতার গুড়ো খেলে পেটের যে কোন ধরনের গ্যাস ,এসিডিটি সমস্যা দূর করা যায় সহজেই।
আরো পড়ুনঃ সাবুদানা খাওয়ার যত উপকারিতা - সাবুদানা কি থেকে তৈরি হয়
রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতার গুড়ো নিয়মিত প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল বের করতে এবং রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। ফলে রক্ত ধারা মসৃণ ভাবে প্রবাহিত হতে পারে, কোলেস্টরলের পরিমাণ থাকে নিয়ন্ত্রিত এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমানো যায় অনেকাংশে।
ওজন কমাতে সজনে পাতার গুড়োঃ যারা অধিক ওজনের সমস্যায় ভুগছেন তারা এই সজনে পাতার গুড়ো ডায়েটে রাখতে পারেন নিয়ম করে। এতে ওজন কমানোর জন্য অন্য কিছু করার সাথে সাথে ডায়েটে সজনে পাতার গুড়ো রাখলে ওজন কমানোর গতি ত্বরান্বিত হয় অনেক বেশি।
কিডনি ভালো রাখতে রাখতে সজনে পাতার গুড়োঃ সজনে পাতার গুঁড়ো প্রতিদিন খাওয়ার মাধ্যমে যে রস আমাদের শরীরে যায় তা কিডনির পাথর হওয়া থেকে আমাদের অনেকটাই রক্ষা করে। ফলে কিডনি থাকে সুস্থ এবং সুরক্ষিত। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে সজনে পাতের গুড়ো রাখা অনেক উপকারী।
ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা উপরে জেনেছেন। পোস্টের এই পর্যায়ে জানবেন, ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়ো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত সজনে পাতার গুড়া খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নিন।
সজনে পাতায় থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে নিয়ম করে সজনে পাতার গুড়ো বা কাঁচা সজনে পাতা খেলে উপকার পাবেন।
সজনে পাতায় রয়েছে ক্লোরোজেনিক এসিড নামক উপাদান, ফলে সজনে পাতা খাওয়ার পর শরীরে ভেতরে গিয়ে রক্তে শর্করা পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া এতে থাকা আইসো থ্যাসেনিম নামক উপাদান শরীরের ভেতরে গিয়ে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এজন্য ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন নিয়ম করে সজনে পাতার গুঁড়ো ডায়েটে ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে থাকে এবং এর ফলে ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিসের অন্যতম একটি কারণ হলো শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণের কমে যাওয়া। সজনে পাতায় থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে এসকরবিক এসিড শরীরে ইনসুলিন বাড়াতে সহায়তা করে থাকে ফলে ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরো পড়ুনঃ পেয়ারা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন
বিভিন্ন গবেষণা দেখা গেছে যে, সজনে পাতায় যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে তা শরীরে রক্তের ফলে শর্করার পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও সজনে পাতাতে থাকা বেশ কিছু ভিটামিন এবং খনিজ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে থাকে। এজন্য সজনে পাতার গুড়ো ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিনের ডায়েটে রাখা খুবই ভালো ফলাফল বয়ে আনবে।
৬ জন ব্যক্তি নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয় যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, গবেষণা দেখা যায় তাদের খাবারে প্রতিদিন ৫০ গ্রাম করে সজনে পাতার গুড়ো রাখার ফলে তাদের রক্তের শর্করার পরিমাণ ২১ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছে। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিনের ডায়েটে কিছুটা হলেও সজনে পাতার গুঁড়ো রাখা উচিত।
সজনে পাতার গুড়া কি
পোষ্টের এই পর্যায়ে জেনে নিন, সজনে পাতার গুড়া কি সে সম্পর্কে। মূলতঃ সজনে গাছের পাতা শুকিয়ে গুড়া করে সজনে পাতার গুড়া তৈরি করা হয়। বর্তমানে অনেকে একে মরিঙ্গা পাউডার হিসেবে চিনে থাকেন। সজনে পাতার গুড়ো কে পুষ্টির ভান্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কারণ সজনে পাতার যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন বিদ্যমান তা অনেক খাবারে পাওয়া যায় না। এজন্য সজনে কে অনেকে ভেষজ উদ্ভিদ বলা থাকে এর অসাধারণ পুষ্টিগুণের উপাদানের উপস্থিতির জন্য।
সজনে পাতার বিভিন্ন ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অনেক বেশি কার্যকরী হওয়ায় একে "সুপারফুড" বলা হয়। সুজনে পাতার গুড়োতে বিভিন্ন উপাদান বিশেষ করে এমিনো এসিডের এবং বিভিন্ন খনিজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।
সজনে পাতার গুড়োতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি সহ আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ অসাধারণ ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন ভেষজ গাছ তেলাকুচার ১৫ টি উপকারিতা জানুন
সাধারণত সজনে গাছের ডাটা সবজি হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে। তবে সজনে ডাটার চেয়ে সজনে পাতার পুষ্টি গুন অনেকাংশে বেশি। এ কারণে বিভিন্ন রোগে বিশেষ করে ডায়াবেটিস, বহুমূত্র রোগে সজনে পাতার ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
ত্বকের যত্নে সজনে পাতার গুঁড়ো ব্যবহার
ত্বকের যত্নেও সজনে পাতার গুড়োর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ সজনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পর্যাপ্ত ভান্ডার। এই এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে, ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধিতে, ত্বকের যেকোনো ধরনের দাগ ছোপ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া ত্বকের যে কোনো ধরনের ব্রণ বা একনি সমস্যা হতে মুক্ত পাওয়ার জন্য সজনে পাতার গুরু ব্যবহার করতে পারেন নিয়মিত।
এছাড়া সজনে পাতায় প্রোটিন থাকায় এটি ত্বকে নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের পোরের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় অনেকটাই। ত্বকের যত্নে সজনে পাতার গুঁড়ো দিয়ে তৈরি একটি কার্যকরী ফেসপ্যাক আপনাদের সুবিধার্থে নিচে দেয়া হলো-
এক থেকে দেড় চা চামচ সজনে পাতার গুঁড়ো, সামান্য মধু এবং দুই তিন ফোঁটা লেবুর রস। সবগুলো উপাদান পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পরিষ্কার ত্বকে এপ্লাই করতে হবে।
ফেস প্যাকটি মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর শুকিয়ে আসলে নরমাল পানি দিয়ে বা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহারেই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। বিশেষ করে নির্জীব, প্রাণহীন এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য এই প্যাকটি বিশেষ উপকারী।
চুলের যত্নে সজনে পাতার গুঁড়ো ব্যবহার
ত্বকের যত্নের সাথে সাথে চুলের যত্ন সহজে পাতার গুঁড়ো ব্যবহার জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সজনে পাতার গুঁড়ো দিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুলের নানাবিধ সমস্যা দূর হবে। সজনে পাতার গুড়োতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এবং ভিটামিন সি এবং ই থাকায় চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে এবং চুলকে করে ঝকঝকে এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল।
সজনে পাতার গুঁড়ো পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে শ্যাম্পু করার পর চুলের ব্যবহার করলে চুল হবে মসৃণ এবং চকচকে। তাই চুলের যত্নে আপনারা সজনে পাতার গুড়ো ব্যবহার করতে পারেন নিয়মিত।
গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার গুঁড়ো খাওয়া যাবে কি
ডায়াবেটিস ভালো করার সাথে সাথে সজনে পাতার গুড়োতে বিভিন্ন ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের ডায়েটে প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে বিভিন্ন ধরনের উপকার মিলবে।
সজনে পাতার গুড়োতে ফাইবার থাকায় গর্ভাবস্থায় হজমে সহায়তা হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মিলবে। এছাড়া সজনে পাতার গুঁড়ো নিয়মিত খেলে এসিডিটির পরিমাণ কমে যাবে অনেকটাই।
সজনে পাতার গুড়োতে শক্তি বৃদ্ধিকারী উপাদান থাকায় গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের দুর্বলতা কাটাতে সহায়তা ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া সজনে পাতার গুড়োতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং মিনারেল পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় গর্ভবতী মহিলার উপকারে পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মত খাওয়ায় ভালো হবে।
শিশুর সজনে পাতার গুঁড়ো খাওয়া যাবে কি
সজনে পাতা গুঁড়ো খাওয়ার অপকারিতা
সজনে পাতায় এমন কিছু পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে যা অন্যান্য অনেক খাবার থেকেও বেশি। কিন্তু এই সজনে পাতার গুড়ো অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে অনেকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
যেমনঃ কারো কারো ক্ষেত্রে বমি বমি ভাববে, ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে, পেটে গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ফুলকপি বাঁধাকপির যত পুষ্টিগুণ - সারা বছর সংরক্ষণের উপায় জেনে নিন
আবার সজনে পাতার গুঁড়ো যেহেতু রক্তের গ্লুকোজে পরিমাণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, তাই যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে তাদের সজনে পাতার গুড়ো এড়িয়ে চলাই ভালো হবে।
যারা লিভার সমস্যায় ভুগছেন তারাও এই সজনে পাতার গুড়ো এড়িয়ে চলবেন।
এছাড়া যাদের সজনে পাতার গুড়োতে এলার্জির প্রবলতা রয়েছে তাদের এড়িয়ে চলাই ভালো হবে।
পরিশেষে
প্রিয় পাঠক, সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকের পোস্টে বিস্তারিত ভাবে জেনেছেন।সজনে পাতা আমাদের দেশে সহজলভ্য হওয়ায়, আমরা সহজেই এই পাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে আমাদের ডায়েটে রাখতে পারি কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই। এই সজনে পাতা আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান।
সজনে পাতার গুড়ো বা মরিঙ্গা পাউডার আমরা যে নামেই চিনি না কেন, ডায়াবেটিস নির্মূলে এই সজনে পাতার গুড়ো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া এই সজনে পাতার গুড়োতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় শরীরের যে কোন সমস্যা প্রতিরোধে আমরা এই সজনে পাতার গুড়ো ব্যবহার করতে পারি।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url