বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তন সম্পর্কে আমাদের বিশেষ সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে বয়ঃসন্ধিকাল সম্পর্কে অনেকেই এখনো পুরোপুরি সচেতন না। এছাড়াও বয়:সন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের কিভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয় সে ব্যাপারেও জানতে হবে।
পোস্ট সূচীপত্রঃআজকের এই পোস্টে বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনাদের এই পোস্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে।
বয়ঃসন্ধিকাল কি
বয়ঃসন্ধিকাল প্রত্যেক মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। প্রতেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কে জীবনের এই সময়টা পার করে আসতে হয়। একটি ছেলে বা একটি মেয়ের শিশুকাল থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হওয়ার সময়কে বয়ঃসন্ধিকাল বলে। এ সময় তাদের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা তৈরি হয়। এটি শারীরিক ও মানসিক বিকাশের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
এই সময়কে ছেলে ও মেয়েদের সেনসিটিভ সময় বলা হয়ে থাকে। এ সময় ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য কনফিউশিং একটি সময়, কারণ এই সময় তারা না শিশু না পরিপূর্ণ নারী বা পুরুষ। তাই বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েদের প্রতি আমাদের বিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত।
বয়ঃসন্ধিকাল কখন শুরু হয়
মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল ছেলেদের থেকে আগে শুরু হয়। মেয়েদের যেখানে ৮ বছর বয়স থেকে শুরু হয় ছেলেদের সেখানে ১০ বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়। মেয়েদের ১৩ বছর বয়স ও ছেলেদের ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন দেখা যায়। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর দৃষ্টিতে, ১০-১৯ বছর বয়সকাল ছেলে ও মেয়ের উভয়েরই ্বয়ঃসন্ধিকাল হয়ে থাকে।
বয়সন্ধিকাল কি দেরিতে শুরু হতে পারে
বয়সন্ধিকালে ছেলেদের কিশোর এবং মেয়েদের কিশোরী বলা হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল দেরিতে শুরু হতে পারে, এজন্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাধারণত ১৩ বছর থেকে মেয়েদের শরীরের বয়স লুকানোর প্রভাব শুরু হয়, তবে এক্ষেত্রে কারো কারো দেরি হতে পারে। এছাড়া ক্যান্সারের কেমো থেরাপি বা রেডিও থেরাপি, ডিম্বাশয় এর প্রদাহ, থ্যালাসেমিয়া বা অন্য কোন কারণে যাদের ব্লাড নিতে হয় তাদের বয়সন্ধিকাল দেরিতে শুরু হতে পারে।
এছাড়া ভৌগোলিক এবং পারিবারিক কারণেও দেরিতে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হতে পারে। আবার শরীরের পুষ্টিহীনতা থাকলে এই সময় দেরিতে শুরু হতে পারে। এছাড়া যেসব শিশুর অতিরিক্ত শিশুশ্রম করতে হয় তাদেরও বয়ঃসন্ধিকাল দেরিতে শুরু হতে পারে। কিন্তু এ কারণে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ এটি একটি প্রাকৃতিক নিয়ম এবং যে কোনো কারণে দেরি হতে পারে তাতে কোন সমস্যা নেই।
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলো জীবনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে পরিবারের বড় রা কিশোর-কিশোরীদের সাথে আগে থেকেই আলোচনা করা ভালো। এতে তারা এই সময় সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারবে। এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার ১০ টি কার্যকরী উপায়
শারীরিক পরিবর্তনগুলো
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরী উভয়েরই স্বাভাবিক কিছু শারীরিক পরিবর্তন আসে প্রকৃতির নিয়মে। এই শারীরিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষে পরিণত হতে থাকে। এই সময়ে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে যে শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে কি সেগুলো হলোঃ
- এই সময়ে ছেলে ও মেয়ের দ্রুত উচ্চতা বাড়ে
- তাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে
- তাদের শারীরিক গঠন প্রাপ্ত বয়স্কদের মত হওয়া।
- ত্বক ও চুলের পরিবর্তন হওয়া।
- শরীরের বিভিন্ন জায়েগায়ে লোম গজানো।
- মুখমন্ডলে ব্রণ উঠা।
- তাদের কন্ঠস্বরের পরিবর্তন হওয়া।
ছেলেদের আরো কিছু পরিবর্তনঃ
কিশোরদের এই সময় হরমোন কিছু পরিবর্তনের কারণে তাদের নিজস্ব কিছু শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি স্বাভাবিক এবং সহজ একটি প্রক্রিয়া। যেমনঃ
- ছেলেদের কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যাওয়া
- মুখে দাড়ি বা গোঁফ গজানো
- বেশি শক্ত এবং সুগঠিত হওয়া
- কাজ ও বুক চওড়া হওয়া
- বীর্যপাত হওয়া
মেয়েদের আরও কিছু পরিবর্তনঃ
কিশোরদের মত কিশোরীদের শরীরেও হরমোনের পরিবর্তনে কারণে এ সময় তাদের নিজস্ব কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে, যে পরিবর্তনের কারণে একজন কিশোরী প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের পরিণত হতে পারে। আর এ পরিবর্তন হলো স্বাভাবিক ভাবে নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে যাতে তারা ভয় না পেয়ে সহজ ভাবে তাদের এই সময়টা উপভোগ করতে পারে আনন্দের সাথে।এবং আগামী দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে।
কিশোরীদের এই সময় আরো যে পরিবর্তনগুলো হয়ে থাকে তা হলঃ
- শরীর ভারী হওয়া এবং বিভিন্ন অংশের আকৃতির পরিবর্তন হওয়া
- মাংসপেশি সুগঠিত হওয়া
- ঋতুস্রাব শুরু হওয়া
- সাদা স্রাব হতে পারে
মানসিক পরিবর্তনগুলো
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক মানসিক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। মূলতঃ এই সময় তারা মানসিকভাবে পরিপক্কতা লাভ করতে শুরু করে। যেমন-
- এই সময়ে কিশোর কিশোরীরা কাছের মানুষের কাছ থেকে সব বিষয়ে মনোযোগ পেতে চায়।
- এই সময়ে তাদের অধিক যত্ন, ভালবাসা পাওয়ার ইচ্ছা হয়।
- এই সময়ে তাদের অল্পতেই রাগ,অভিমান অ কষ্ট হয়ে থাকে।
- তাদের আবেগপ্রবণতা অনেক বেড়ে যায়।
- বয়ঃসন্ধিকালেই তারা তাদের নিজস্ব ব্যক্তিসত্বা হিসেবে পরিচিত হতে চায়।
- এই বয়সে ছেলেমেয়ের একে ওপরের প্রতি কৌতুহল সৃষ্টি হয়।
- এই বয়সে তারা মানসিকভাবে পরিপক্ক হয়ে থাকে
- এই বয়সে কিশর-কিশরী যেকোনো সময়ে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, যাকে য়াম্রা মুড সুয়িং বলি।
- বয়ঃসন্ধিকালে কিশর-কিশরীরা নিজের সৌন্দরযের প্রতি সচেতন হয়ে উঠে।
আচরণগত পরিবর্তন
বয়সন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের মধ্যে অনেক আচরণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। আচরণের মাধ্যমে তারা প্রকাশ করতে চায় যে তারা পরিপক্ক একজন মানুষ। তাদের যেসব আচরণগত পরিবর্তন হয়ে থাকেঃ
- বয়ঃসন্ধিকালে আচরণগত পরিবর্তনের মধ্যে একটি মূল পরিবর্তন হচ্ছে কিশোর কিশোরীরা বড়দের মতো আচরণ করতে পছন্দ করে।
- অনেক সময়ই তারা তাদের নিজেদের মতামত বা সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
- তারা নিত্যনতুন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে।
- এই সময় তারা নিজেদের যে আলাদা একটি ব্যক্তি সত্তা আছে সেটা প্রকাশ করতে পছন্দ করে।
- বয়সন্ধিকালে কিশোর কিশোরীরা পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়।
- তারা প্রায় সময়ই একা থাকতে পছন্দ করে।
সামাজিক পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের মাঝে বিভিন্ন সামাজিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। অনেক সময় নিজেদের শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে ঘরের ভিতর নিজেকে বন্দী করে ফেলে। বাইরের মানুষের কাছ থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করে। অনেক সময় বাইরের মানুষের হঠাৎ কোনো কটু কথায় তারা নিজেদের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে।
এ সময় তারা আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে। এবং অনেক সময় দেখা যায় আত্মীয়-স্বজনের সামনে তারা যেতে চায় না, নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। এমনকি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে অনেক সময় তারা নিজেদের দূরে রাখতে পছন্দ করে।
বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের যত্ন
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। এজন্য এ সময় কিশোর কিশোরীদের শরীরের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। শরীরে পুষ্টি যোগায় এমন পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এ সময় খাবারের যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, মিনারেল, খনিজ লবণ ইত্যাদি আছে কিনা সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এ সময় তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শরীরের জন্য উপযোগী ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, এতে শরীর ও মন দুটাই ভালো থাকবে।
বয়ঃসন্ধিকালে ত্বকের যত্ন
বয়ঃসন্ধিকাল এমন একটা সময় যে সময় কিশোর কিশোরীদের ত্বকে যেমন পরিবর্তন আসে, তেমনি এই সময়ে সৌন্দর্যের সাথে অন্য যে কোনো বয়সের সৌন্দর্য হার মানবে। যদিও এই সময় কিশোরীদের ত্বকে এমনিতে সুন্দর, সজীব এবং মসৃণ থাকে, তবু হঠাৎ কিছু শারীরিক, মানসিক পরিবর্তনের কারণে ত্বকে আসতে পারে ব্রণ।
তাছাড়া এই বয়সে ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে, রোদ, ধুলাবালিতে থাকার কারণেও ত্বকে বাড়তে পারে ব্রণের সমস্যা সহ আরো কিছু ত্বকের সমস্যা।তাই এই সময়ে কিশোর কিশোরীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বাইরে থেকে এসে মাইড কোন ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সাথে ব্যবহার করতে হবে এই বয়সের উপযোগী ময়েশ্চারাইজার।
এ ছাড়া বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই সান ব্লক ইউজ করতে হবে। নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। সাথে পর্যাপ্ত ঘুম এবং ফলমূল, শাকসবজি ডায়েটে রাখতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। তাহলেই কিশোর কিশোরীদের ত্বক থাকবে হাস্যজ্জল, সুন্দর এবং মসৃণ।
বয়ঃসন্ধিকালে মনের যত্ন
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের যেহেতু অনেক মানসিক পরিবর্তন হয় এজন্য শরীর এবং ত্বকের যত্নের পাশাপাশি তাদের মনেরও যত্ন নেওয়া বিশেষ প্রয়োজন। যেহেতু বয়ঃসন্ধিকালে তাদের হরমোন গত কারণে মানসিক পরিবর্তন ঘটে, এ কারণে হঠাৎ পরিবর্তনে তাদের মনের উপর চাপের সৃষ্টি হয়। তাই এ সময় এমন কিছু কাজ করতে হবে যাতে তাদের মন সবসময় ভালো এবং যত্নশীল থাকে।
তাই এ সময় তাদের বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, ভালো কোন মুভি দেখা যা তাদের মনের উপর ভালো প্রভাব ফেলে, ভালো বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করা, খেলাধুলা করা, পরিবারের সবার সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি অভ্যাসগুলো তাদের মন ভালো রাখতে সহায়তা করে।
বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি
বয়সন্ধিকাল যেহেতু ছেলে ও মেয়ের উভয়ের জন্য সেনসিটিভ একটি সময়, তাই কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। যেমন- পরিমিত ঘুম। রাতে অন্তত আট থেকে দশ ঘণ্টা ঘুম ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। এতে শরীর এবং মন দুইটাই চাঙ্গা থাকবে এবং পরবর্তীতে যে কোন কাজ করতে উৎসাহ পাবে। এজন্য রাতের বেলা টিভি স্ক্রিন এবং অন্যান্য ডিভাইস দূরে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ পুরুষ এবং মহিলাদের মেথি খাওয়ার উপকারিতা
বয়: সন্ধিকাল কাছের মানুষজনকে পজিটিভ ভূমিকা পালন করতে হবে। এ সময় তাদের সাথে বাসার অভিভাবকগণ বন্ধুর মত আচরণ করতে হবে। তাদের মধ্যে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা বা কোন বিষয়ে তারা জানতে চায় কিনা সে বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে হবে। মোটকথা বাড়ির পরিবেশ এমন হতে হবে যাতে কিশোর-কিশোররা তাদের যে কোন সমস্যা বাড়ির বড়দের সাথে শেয়ার করে হালকা হতে পারে।
এ সময় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে মানসিক চাপ থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যেমন ওদের শখের কাজগুলো জেনে সে কাজগুলো করতে উৎসাহ দেওয়া। এই সময় কেউ বাগান করতে পছন্দ করে, কেউ বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পছন্দ করতে পারে, কেউ কেউ আবার সাইকেল চালানো বা স্কেটিং ইত্যাদি পছন্দ করতে পারে।
মোটকথা এই সময় তাদের এসব কাজে বেশি যুক্ত রাখতে হবে যাতে তারা এই বয়সের যে কোন মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে পারে।
কিশোর কিশোরীদের প্রতি পরিবারের ভূমিকা
বয়ঃসন্ধিকাল কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তনের সময় পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের সচেতন থাকতে হবে। কারণ প্রতিটা মানুষের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই পরিবারের কোন ছেলে ও মেয়ের বয়ঃসন্ধিকালে পরিবারের বাকি সদস্যদের পজিটিভ ভূমিকা পালন করা উচিত যাতে তাদের বয়ঃসন্ধিকাল হয় সুখময় এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়।
একটি পরিবারের ছেলে মেয়ের বয়ঃসন্ধিকালে যে ভূমিকা গুলো রয়েছে তা নিচে দেওয়া হলঃ
- পরিবারের অভিভাবকরা এই সময়ে ছেলে-মেয়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করতে হবে। যাতে তারা স্বাস্থ্য বিষয়ে যে কোন কথা বলতে দ্বিধাবোধ না করে।
- বয়সন্ধিকালে ছেলেমেয়েরা নিজের মতামত কে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এতে অনেক সময়ই অভিভাবকরা রেগে যান এবং তাদের কথা শুনতে অনীহা প্রকাশ করেন। কিন্তু এটা না করে তাদের কথা বা মতামত কে গুরুত্ব সহকারে শোনা উচিত।
- ছেলে মেয়ের বয়সন্ধিকালে খাবারের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। এই সময় তাদের বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার যেমন- রঙিন শাকসবজি, ফল মূল, ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদি তাদের ডায়েটে পরিবার মত রাখতে হবে।
- বয়সন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের যেহেতু হরমোন গত পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় তাদের মুড সুইং হয় বা মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। এ সময় অভিভাবকদের উচিত তাদের প্রতি বেশি চাপ না দেওয়া এবং তাদের সাথে কোমল ব্যবহার করা। তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া।
পরিশেষে
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের যে পরিবর্তন হয়ে থাকে তা প্রাকৃতিক কারণে হয়ে থাকে। এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে যদি আমরা আগে থেকেই তাদের সচেতন করি বা জানিয়ে রাখি তাহলে তাদের এই সময়টা হতে পারে অনেক আনন্দের। কারণ অনেকেই এই সময়ে অনেক ভীতিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে পার করে যা আমাদের মোটেই কাম্য নয়।
তাই বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর কিশোরীদের সময়টা আনন্দময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে ওরা পাবে একটি নিরাপদ, সুন্দর সময়। বয়ঃসন্ধিকাল যেন তাদের ভয়ের কোন কারণ না হয়ে সহজ, স্বাভাবিক সময় হিসেবে নিতে পারে এজন্য আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url