ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন

   

ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আজকের পোস্টে আলোচনা করব। ঢেঁকি ছাটা লাল চাল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি পরিপূর্ণ খাদ্যশস্য। এই লাল চালে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। সাথে রয়েছে ঢেঁকি ছাটা লাল চাল এবং বাদামী চাল এক কিনা সে বিষয়ে আলোচনা।

ঢেঁকিছাটা-লাল-চাল

এই চালের পুষ্টিগুণ এবং পুষ্টি উপাদান গুলো জানলে আপনিও আপনার ডায়েটে নিয়মিত রাখবেন। আজকের পোষ্টে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই চালের পুষ্টিগুণ এবং বিভিন্ন উপকারী উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। পোস্ট সূচীপত্রঃ

    ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর যত পুষ্টিগুণ

    ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে পোস্টের শুরুতে আপনাদের জানাবো। ঢেঁকি ছাটা লাল চাল পুষ্টিগণে ভরপুর একটি খাদ্যশস্য। সাদা যে কোনো চালের চেয়ে ঢেকি ছাটা লাল চালের পুষ্টিগুণ অনেক দিক দিয়ে বেশি। ঢেঁকি ছাটা চাল মসৃণ হয় না কারণ ঢেকি ছাটা চালের উপরে ধানের তুষের কিছুটা অংশ থেকে যায়। আর এই কারণে এই চাল পুষ্টির ভান্ডার।

    নিচে এই চালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিনঃ

    হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তাঃ ঢেঁকি ছাটা লাল চাল কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট হওয়ায় এতে থাকা Starch এবং ফাইবার শরীরের ভেতরে গিয়ে ধীরগতিতে হজম হয়। এ কারণে ক্ষুধার ভাব কম হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। আবার সারাদিন ধরে শরীরের শক্তি জুগিয়ে শরীরকে রাখে কর্মক্ষম। তাই এই চাল আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে।

    অ্যালজাইমা রোগ প্রতিরোধঃ ঢেকি ছাটা লাল চালে ভিটামিন- বি এবং ভিটামিন- ই পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। সাথে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে নিউরো ট্রান্সমিটার নিউট্রিয়েন্ট, যে কারণে অ্যালজাইমার মত রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি এই সমস্যায় ভুগলে এই চাল আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন।

    আরো পড়ুনঃ ফুলকপি পাতাকপির যত পুষ্টিগুণ - সারা বছর সংরক্ষণের উপায়

    কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ ঢেকি ছাটা লাল চালে অধিক মাত্রায় আশ থাকার কারণে হজমে সহায়তা করে এবং পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তা প্রতিরোধ করে। ফলে হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়ে থাকে। এছাড়া এই চালে ইনসলিউবল ফাইবার রয়েছে অনেক বেশি, যা হজমে সহায়তা করে থাকে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। 

    শক্তি বৃদ্ধি এবং হাড় দাঁত মজবুত করতেঃ ঢেঁকি ছাটা লাল চালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা শরীরের ভেতরে গিয়ে শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। তাই আপনি দুর্বলতায় ভুগলে আপনার ডায়েটে এই চাল রাখতে পারেন এবং উপকৃত হতে পারেন। এছাড়া ঢেঁকি ছাটা লাল চাল ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায়  আমাদের দাঁত এবং হাড়কে মজবুত করতেও সহায়তা করে থাকে।

    ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতেঃ এই চালে রয়েছে জটিল শর্করা যা আমাদের শরীরে গিয়ে ধীরে ধীরে ভেঙে সরল শর্করা পরিণত হয়। ধীরে ধীরে শোষণ হওয়ার ফলে শরীরের সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে  দূরে থাকতে চাইলে আপনার ডায়েটে এই চালের ভাত রাখতে পারেন নিয়মিত।

    হার্ট ভালো রাখতে এবং কোলন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখতেঃ এই চালে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকায় আমাদের শরীরে রক্তনালীতে কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি হতে দেয় না। ফলে রক্ত সঞ্চালন ভালো এবং মসৃণ ভাবে হতে পারে। এবং এর ফলে হার্ট ও ভালো এবং সুস্থ রাখা সম্ভব হয়। এছাড়া এই চাল পর্যাপ্ত ফাইবার যুক্ত হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে পাইলস এবং কোলন ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সহজে।

    বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে মুক্তি পেতেঃ এই চালে থাকা সেলেনিয়াম  আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন এবং এনজাইমের একটি বড় অংশ। আর এসব উপাদান শরীরকে বিভিন্ন ধরনের আঘাত, ক্ষত থেকে ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এছাড়া এই প্রোটিনের কারণে প্রজনন ক্ষমতা এবং থাইরয়েড হরমোনের বিপাকের উন্নতি ঘটাতেও সহায়তা করে থাকে।

    নার্ভাস সিস্টেম ভালো রাখতেঃ এই চাল পূর্ণ আঁশযুক্ত অদ্রবনীয় হওয়ায় যারা এই চালের ভাত তাদের ডায়েটে রাখেন তাদের পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই। এছাড়া এই চালের ভাত খেলে নার্ভাস সিস্টেম ভালো থাকে যা রিলাক্স থাকতে সাহায্য করে। এছাড়া সেক্স হরমোন তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে এই ঢেঁকিছাটা চাল।

    ঢেঁকি ছাটা লাল চালের পুষ্টি উপাদান

    ঢেঁকিছাটা লাল চালের পুষ্টির ভান্ডার কারণ এই চালে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি উপাদান ভরপুর পরিমাণে। ঢেঁকি ছাটা চাল এমন একটি চাল যেখানে চালকে সাদা চালের মত পলিশ করা হয় না। অর্থাৎপুরোপুরি ভাবে পরিশোধন করা হয় না। এ কারণে চালের উপরিভাগে তুষের কিছুটা অংশ থেকে যায়। আর এই কারণে এই চাল অনেক পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ।

    আরো পড়ুনঃ সহজ উপায়ে ওজন কমানোর কাঁচকলা ডায়েট সম্পর্কে জানুন

    ঢেঁকি ছাটা লাল চালে রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইডেট এবং ফাইবার। এছাড়া এই চালে আছে যথেষ্ট পরিমানে ভিটামিন- বি, ভিটামিন- ই, সেলেনিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। এই চালে আরো রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, আমিষ ও পটাশিয়াম। এছাড়া এই চাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এ ভরপুর। সাধারণত এই চালের উপরিভাগের পুরোটা সরানো হয় না বলে এই চাল পুষ্টির ভান্ডার।

    এফ ডি এর মতে, আমাদের দেহের কোষের সব ধরনের কাজের জন্য প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাধারণত কোন চাল থেকে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন পাওয়া যায় না। কিন্তু লাল চাল থেকে এই প্রোটিন কিছুটা হলেও পাওয়া যায়। 

    এক কাপ রান্না করা লাল চালের ভাতে রয়েছে ২১৮ ক্যালোরি, ৪.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ৪৫.৮ গ্রাম কার্বোহাইডেট। যেখানে সাদা চালের ভাতে রয়েছে ২৪২ ক্যালোরি, ৪.৪ গ্রাম প্রোটিন এবং ৫৩.৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট।

    তাছাড়া এই লালচাল কে ফেনেলিক যৌগ গুলির ভরপুর উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন- ফেরুলিক এসিড, যা পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।

    সাধারণত এই যৌগ গুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে, যা দীর্ঘস্থায়ী কোন প্রদাহ এবং ক্যান্সার, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন রোগের মূল অবদানকারী।

    এই লাল চালের উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই নিয়মিত এই  চালের ভাত ডায়েটে রাখলে উপকার পাওয়া যাবে বিভিন্ন দিক দিয়ে।

    ঢেঁকি ছাটা চাল মানেই কি লাল চাল

    ঢেঁকি ছাটা চালের এতো পুষ্টিগুণের কারণ হল- সাধারণত ঢেঁকিতে ছাটার ফলে চালের উপরিভাগ থেকে পুরোপুরি ভাবে তুষ সরানো হয় না। এ কারণে তুষের কিছুটা অংশ চালের উপরিভাগে থেকে যায়। তাই চাল লাল হয়ে থাকে।

    আবার কিছু কিছু চাল আছে যেগুলো প্রকৃতিগত ভাবে লাল যেমন- আমন, লাল বিরুই, গানজিয়া, আউশ, বোরো, জলি, নানা বিরুই ইত্যাদি। আদি জাতের আমন ধান কে সাধারণত বর্তমানে বিরুই বলা হয়ে থাকে। এই চাল সিলেটের হাওয়ার অঞ্চলে চাষ হয় বেশি।

    ঢেঁকি ছাটা লাল চাল এবং বাদামি চাল কি এক

    ঢেঁকি ছাটা লাল চাল এবং বাদামি চাল প্রায় একই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। লাল চাল এবং বাদামি চালের মধ্যে যে প্রধান পার্থক্য দেখা যায় তা হল এর রং, স্বাদ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপাদানের ভিত্তিতে। তবে এই দুই ধরনের চাল ই পূর্ণ শস্য যুক্ত চাল এবং অন্যান্য চাল থেকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং ফাইবার বেশি থাকে এবং স্বাস্থ্যকর।

    ঢেঁকিছাটা-লাল-চাল

    তবে লাল চালে প্রাকৃতিক এন্থাসায়ানিন এর পরিমাণ বেশি যে কারণে এই চালের রং লাল হয়ে থাকে। এবং এই কারণে লাল চালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি। আর এই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে এই চাল শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, ইনফ্লেমেটরি এবং ক্রনিক ডিজিজ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে থাকে।

    আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নির্মলের মহা ঔষধ সজনে পাতার গুড়ো খাওয়ার নিয়ম জানুন

    একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, লাল চালে বাদামি চালের তুলনায় দশ গুণ বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। লাল  চাল এবং বাদামি চালের স্বাদের মধ্যেও কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। যেমন- লাল চালের তুলনায় বাদামি চাল অনেকটা অল্প মিষ্টি জাতীয়।

    লাল চালে বাদামী চালের তুলনায় ফ্লেবোয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘনত্বের পরিমাণও বেশি থাকে। আর এই কারণে লাল চাল এর ফ্রি রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বেশি।

    তবে এই দুই ধরনের চাল ই অত্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর। এই দুই ধরনের চালই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আপনি যে কোন চালই পছন্দ করতে পারেন আপনার ডায়েটের অংশ হিসেবে।

    ঢেঁকি ছাটা লাল চাল ও কালো চাল

    ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর পুষ্টিগুণ কালো চাল থেকে বেশি হয়ে থাকে। তবে লাল চাল এবং কালো চাল দুইটাই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। সাধারণত লাল চাল ও কালো চালের মধ্যে এন্থাসায়ানিন উপাদানের তফাৎ এর কারণে রঙের পার্থক্য হয়ে থাকে। এটি মূলত ক্যাটেচিন এবং  এপিকেটেবিন এর পরিমাণ এবং প্রকারের কারণে হয়ে থাকে। 

    তবে ঢেঁকি ছাটা লাল চালে অন্য চালের তুলনায় বেশি আয়রন এবং জিংক থাকে। এজন লাল চালের ভাত কালো চালের ভাত এর থেকে বেশি উপকারি। রান্নার ক্ষেত্রেও লাল চালের তুলনায় কালো চালে সাধারণত সময় বেশি লেগে থাকে। কালো চালের ভাত রান্না করতে প্রতি এক কাপ চালের জন্য তিন কাপ পানির প্রয়োজন হয় এ কারণে সময়ও বেশি লাগে।

    গর্ভাবস্থায় লাল চালের উপকারিতা

    ঢেঁকি ছাটা লাল চালের যে পুষ্টিগুণ তা গর্ভাবস্থায় অনেক উপকারি। তাই গর্ভাবস্থায় লাল চালের ভাত খেলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। ঢেঁকি ছাটা লাল চালে রয়েছে জিঙ্ক যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে গর্ভবতী মহিলা লাল চালের ভাত নিয়মিত ডায়েটে রাখলে বাচ্চার পুষ্টিগত স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো হয়।

    গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা আরেকটি যে সমস্যায় ভোগেন তা হল কোষ্ঠকাঠিন্য। আর এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকতে লাল চাল খেতে পারেন নিশ্চিন্তে। কারণ এই চালে রয়েছে ভিটামিন বি, এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে থাকে। এছাড়া এই লাল চালে থাকা ভিটামিন ই রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

    হার্টের সুস্থতায় ঢেঁকি ছাটা লাল চাল

    ঢেঁকি ছাটা লাল চাল এর পুষ্টিগুণ আমাদের হার্টের সুস্থতা বজায় রাখতে সুফল বয়ে আনে। তাই হার্টের সুস্থতার বজায় রাখার জন্য আমরা আমাদের ডায়েটে নিয়মিত এই লাল চাল রাখতে পারি। সাধারণত এই চালে থাকা ভিটামিন ই আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো এবং মসৃণ ভাবে করতে সহায়তা করে থাকে এবং রক্তনালীতে কোন প্রকার জমাট বাধা প্রতিরোধ করে থাকে।

    এছাড়াও এই চালে রয়েছে উচ্চমাত্রার এন্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উপাদান রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে ফলে হার্টও ভালো থাকে।

    ঢেঁকি ছাটা লাল চাল কিভাবে শুরু করবেন

    ঢেঁকিছাটা লাল চাল পুষ্টি তে ভরপুর হওয়ায় অনেকেই হঠাৎ করে ডায়েটে রাখতে চান বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়ার জন্য। কিন্তু এই চালের ভাত ডায়েটে রাখতে চাইলে কিছূ বিষয় মনে রাখতে হবে। যেমনঃ লাল চালে জটিল কার্বোহাইড্রেট পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে।

    এজন্য যারা নিয়মিত সাদা ভাত বা সাদা রুটি খেতে অভ্যস্ত তারা এই চালের ভাত খাওয়া শুরুতে অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। এজন্য তারা ইচ্ছে করলে এই চালের ভাত ডায়েটে  অল্প পরিমাণ দিয়ে শুরু করতে পারেন।

    আরো পড়ুনঃ সাবুদানা খাবার যত উপকারিতা - সাবুদানা কি থেকে তৈরি হয়

    এছাড়া সাথে রাখতে পারেন আপনার নিয়মিত খাওয়া সাদা চালের ভাত বা রুটি অল্প পরিমাণে, এতে আপনার ধীরে ধীরে অভ্যস্ততা তৈরি হবে। আবার দেখা যায় এই চাল যেহেতু বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর তাই অনেকেই বেশি পরিমাণ দিয়ে খাওয়া শুরু করেন।

    কিন্তু এই চালও আপনার ডায়েটে পরিমাণ মতো রাখতে হবে। এতে আপনার শরীর পুষ্টির সবগুলো উপাদান পরিমান মত পাবে কোন সমস্যা ছাড়াই।

    ঢেঁকিছাটা-লাল-চাল

    অনেকের এই চালের ভাতে অভ্যস্ত হতে দেরি হতে পারে। আবার স্বাদ একটু অন্যরকম হওয়ায় অনেকেই প্রথমে পছন্দ নাও করতে পারেন। এজন্য এর সাথে রাখতে পারেন অন্য কোন হোল গ্রেন খাবার যেমন সকালের নাস্তায় আপনি ওটস রাখতে পারেন। এতে আপনার ধীরে ধীরে এই চালের খাবারে অভ্যাস তৈরি হবে। 

    ঢেঁকি ছাটা লাল চালের অপকারিতা

    ঢেঁকিছাটা লাল চাল এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা জানলাম। অনেকে ভাবতে পারেন তাহেল এই লাল চালের অপকারি কোনো দিক নেই? বাস্তব কথা হলো এই চালের অপকারিতা খুব একটা নেই বললেই চলে। নিয়মিত ডায়েটে পরিমান মত এই চাল রাখলে অপকারিতার চেয়ে উপকার বেশি মিলবে। কিন্তু কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে।

    যেমন যাদের চালে এলার্জি রয়েছে তারা এই চাল ডায়েটে রাখলে শরীরে র‍্যাশ হতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে, চুলকানি হতে পারে, মুখ জীবা ফুলে যেতে পারে ইত্যাদি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মত আপনি আপনার ডায়েটে এই চাল রাখতে পারেন। এছাড়া এই চালের সাথে আপনি অন্য পূর্ণ শস্য যুক্ত খাবার রাখতে পারেন। যেমন লাল আটার রুটি, ওটস মিল ইত্যাদি।

    আবার অন্যান্য চালের মতো এই চালেও কিছুটা আর্সেনিকের পরিমাণ থাকতে পারে। এই আর্সেনিক সাধারণত খুব একটা ক্ষতিকর নয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই চাল ডায়েটে রাখলে হয়তো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই এই চাল রান্নার সময় কিছুটা বেশি পানি দিয়ে ফুটিয়ে পানিটুকু ফেলে দিয়ে ভাত রান্না করতে পারেন। 

    পরিশেষে

    ঢেঁকিছাটা লাল চালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করার সাথে সাথে আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ মাত্রই নিজেকে ফিট রাখতে চান সব দিক দিয়ে। এজন্য তারা তাদের ডায়েটে এমন খাবার রাখতে চান যা তাদের পুষ্টির চাহিদা পুরোপুরি ভাবে পূরণ করবে সাথে মিলবে আরো অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা।

    আর এক্ষেত্রে আপনাদের প্রথম পছন্দ হতে পারে এই ঢেঁকি ছাটা লাল চাল। কিছুদিন আগেও এই চালের  পর্যাপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, বর্তমানে  এই চাল জনপ্রিয় হয়ে উঠায় এই চাল দেশের সব জায়গায়সই খুব সহজে পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক অনলাইন শপেও এই চাল পাওয়া যাচ্ছে। তাই আপনার সুবিধামতো যে কোন জায়গা থেকে এই চাল কিনে আপনার ডায়েটের অংশ হিসেবে রাখতে পারেন নিয়মিত।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

    comment url