রূপচর্চায় গোলাপজল এবং গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতা জানুন - গোলাপজল বানানোর নিয়ম

   

রূপচর্চায় গোলাপজল এবং গ্লিসারিনের উপকারিতা সম্পর্কে এখন সবাই জানতে আগ্রহী। কারণ প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে চাই।এছাড়া জানবো গোলাপ জল ঘরে কিভাবে সহজে তৈরি করা যায়।

ইমেজ

পোস্ট সূচীপত্রঃরূপচর্চায় গোলাপ জল এবং গ্লিসারিনের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা এখনো এই দুটি উপাদান ব্যবহার এর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে ঠিক মত জানিনা। তাদের জন্য আজকে আমার এই পোস্ট।

    রূপচর্চায় গোলাপজল ব্যবহারের উপকারিতা 

    রূপচর্চায় গোলাপজল ব্যবহারের উপকারিতা এত বেশি যে গোলাপজল কে ম্যাজিকাল ওয়াটার বলা হয়ে থাকে। কারণ আপনি যে কোনো ধরনের ত্বকের অধিকারী হন না কেন ,গোলাপজল এমন একটি প্রোডাক্ট যা সব ধরনের ত্বকের জন্য নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। সাধারণত গোলাপ জল খুবই মাইল্ড হওয়ায় আপনার ত্বক পরিচর্যায় এই প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে।

    আপনার ত্বক শুষ্ক, তৈলাক্ত বা সেনসিটিভ যেকোনো ধরনের হোক না কেন গোলাপজল রূপচর্চায় আপনার ত্বকে কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। রূপচর্চায় গোলাপ জলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

    ক্লিনজার এবং টোনার হিসেবে গোলাপ জলের উপকারিতাঃ গোলাপজল কে প্রাকৃতিক ক্লিনজার বলা হয়ে থাকে। এছাড়া প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও গোলাপজল ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এই প্রাকৃতিক ক্লিনজার এবং টোনার ত্বকে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকের পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। গোলাপ জল ত্বকে ব্যবহারের জন্য কোন কটনপ্যাডে নিয়ে খুব আলতো ভাবে রাব করলেই ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে।

    আরো পড়ুনঃ ত্বককে জেল্লাদার করতে চালের গুড়া ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

    গোলাপজল ত্বকে টোনার হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বকের আদ্র ভাব বজায় থাকবে দীর্ঘ সময়ের জন্য। ফলে ত্বক সহজে শুষ্ক হবে না, ত্বক থাকবে সুন্দর এবং সজীব। এবং টোনারের পর ময়শ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহারের জন্য ত্বক হবে পুরোপুরি প্রস্তুত।

    ত্বকের লাল ভাব কমাতে গোলাপ জলের উপকারিতাঃ গোলাপজল গোলাপজল ত্বকের যে কোন ধরনের লাল ভাব কমাতে সাহায্য করে থাকে। কোন কারনে তকে যদি লাল ভাব চলে আসে সেই রেড লেস কমানোর জন্য গোলাপজর ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ত্বকে যদি লাল ভাব আসার সাথে সাথে ইরিটেশন হয় সেটা কমাতেও গোলাপ জল অনেক কার্যকরী।

    এজন্য আপনারা গোলাপজল ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ঠান্ডা গোলাপ জল কোন কটন প্যাডে নিয়ে আলতো ভাবে ত্বকে ঘষতে বা মুছে নিতে পারেন। এছাড়া ইচ্ছে  করলে গোলাপ জল আপনারা আইস কিউব বানিয়েও ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে খুবই সাবধানে আলতো ভাবে আইস কিউব ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।

    নখ পরিষ্কার করতে গোলাপ জল ব্যবহারের উপকারিতাঃ গোলাপজল খুবই ভালো একটি ন্যাচারাল ক্লিনজার। তাই আপনি আপনার নখ পরিস্কার করতে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য প্রথমে গোলাপজল নখে স্প্রে করতে হবে অথবা কোন কটন পেডে নিয়ে নখ পরিষ্কার করতে হবে। নখের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য এটি আপনারা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।

    ময়শ্চারাইজার ক্রিমের সাথে গোলাপজল এর উপকারিতাঃ গোলাপজল কে আপনি আপনার রেগুলার ব্যবহার করেন এমন মশ্চারজার ক্রিম এর সাথে ব্যবহার করে ক্রিমের কার্যকারিতা বহু গুণে বাড়িয়ে তুলতে পারেন। সাথে পাবেন গোলাপজলের খুব সুন্দর একটি সুঘ্রাণ। এজন্য আপনি যতটুকু পরিমাণ ক্রিম মুখে ব্যবহার করবেন তার সাথে দুই তিন ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে নিলেই হবে।

    মেকআপের এরপর এবং তোলার জন্য গোলাপজল ব্যবহারঃ  গোলাপজল কে আপনি মেকআপ করার পর সেটিং স্প্রে হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ত্বকে মেকআপ খুব ভালোভাবে বসবে এবং একটি সুন্দর, এজন্য মসৃণ মেকআপ ফিনিশ পাবেন দীর্ঘ সময়ের জন্য। এছাড়া মেকআপ তোলার জন্য গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন নিয়মিত।

    এজন্য গোলাপজলের সাথে আপনার ত্বকের সাথে মানানসই নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে তারপর মেকাপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক দীর্ঘসময়ের জন্য সুন্দর এবং স্বাস্থ্যজ্জল থাকবে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ আসতে দিবে না।

    চুলে গোলাপজলব্যবহারের উপকারিতাঃ সুন্দর এবং মসৃণ চুল পেতে গোলাপ জল আপনি আপনার চুলে ব্যবহার করতে পারেন। যদি মনে হয় আপনার চুল অনেক শুষ্ক এবং রুক্ষ এবং এলোমেলো মত এলোমেলো তাহলে গোলাপজল হতে পারে আপনার জন্য সহজ একটি সমাধান। এজন্য চুলে ব্যবহারের জন্য ভালো মানের কোন গোলাপ জল স্প্রে করতে হবে।

    আরো পড়ুনঃ চুল পড়া রোধে মেথি ব্যবহারের উপকারিতা - নতুন চুল গজাতে মেথির ব্যবহার

    এছাড়া আপনি চাইলে গোলাপ জলের সাথে যে কোন ধরনের এসেনশিয়াল ওয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণটি ব্যবহারে আপনি খুব সহজে কোন ঝামেলা ছাড়াই পাবেন সুন্দর, ঝলমলে এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল।

    ব্রণ এবং ব্রণের দাগ কমাতে গোলাপজলের উপকারিতাঃ আপনার ত্বকে যদি ব্রণ থাকে এবং ব্রণের কারণে যেকোনো ধরনের দাগ থাকে তাহলে আপনি গোলাপ জলের সাথে ট্রি টি ওয়েল একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করে উপকার পেতে পারেন। এক্ষেত্রে গোলাপজলের সাথে ট্রি টি ওয়েল একসাথে মিশিয়ে প্রতিবার মুখ পরিষ্কার করে ধোয়ার পর কোন কটন প্যাডে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। সব ধরনের ব্রণের দাগ দূর হবে নিমিষে নিয়মিত ব্যবহারের কারনে।

    ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে গোলাপ জলের উপকারিতাঃ আপনার ত্বকে যদি বয়সের কারণে বলিরেখা, কুচকানো ভাব, চোখের চারপাশে কাকের পায়ের মতো কুঁচকানো ভাব চলে আসে তাহলে গোলাপজলের সাথে ব্যবহার করতে পারেন লেবেন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল। এই মিশ্রণটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকের বলিরেখা কুঁচকানো ভাব দূর হবে সাথে আপনার ত্বককে দিবে প্রয়োজনীয় আদ্রতা।

    ত্বকের জেলা ফিরিয়ে আনতে গোলাপজল ব্যবহারের উপকারিতাঃ আপনার ত্বকে যদি উজ্জ্বল ভাব নিয়ে আসতে চান তাহলে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপ জলের সাথে অরেঞ্জ এসেনশিয়াল অয়েল। কারণ অরেঞ্জ এসেনশিয়াল ওয়েলে আছে ভিটামিন সি, এজন্য নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের জেল্লা ফিরিয়ে আনার সাথে সাথে ত্বকের যেকোনো ধরনের দাগ দূর করবে।

    চোখের নিচের কালো দাগ এবং খোলা ভাব কমাতে গোলাপজলের ভুমিকাঃ আমাদের চোখের নিচে ত্বকগুলো খুব পাতলা এবং সেনসিটিভ হওয়ার কারণে সহজেই চোখের নিচে কালো দাগ এবং কফিনেস তৈরি হয়। এজন্য অল্পে কালো দাগ দৃশ্যমান হয়ে থাকে। এজন্য ফ্রিজে রাখার নিয়ে চোখের নিচে আলতোভাবে মুছতে হবে অথবা কটন প্যাড দুই চোখে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া গোলাপজল আইস কিউব করেও চোখে হালকা ভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।

    এলোভেরা জেলের সাথে গোলাপজলব্যবহারের উপকারিতাঃ আবার ত্বকে এলোভেরা জেল এর সাথে গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে মেসেজ করলে ত্বকে আসবে দারুণ জেল্লা। এছাড়া তোকে মুখেScrub করার সময় মুখ গোলাপজল দিয়ে প্রথমে ভিজিয়ে নিয়ে Scrub করলে উপকার পাওয়া যাবে। আবার মুখে ফেস মাস্ক ব্যবহার করার পর ফেস মাস্ক তোলার জন্য গোলাপজল দিয়ে রিমুভ করলে উপকার পাওয়া যাবে।

    সহজেই ঘরে তৈরি করে নিন গোলাপজল

    গোলাপজল ব্যবহারের উপকারিতা বহুগুণ হওয়ায় অনেকেই গোলাপজল ঘরে তৈরি করতে চান। কারণ গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে আপনি ঘরে তৈরি করতে পারেন দারুন কার্যকরী গোলাপজল। এজন্য নিতে হবে ২০ থেকে ৩০ টি টাটকা গোলাপ ফুল। ফুল গুলোকে ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে যাতে কোন ধরনের ময়লা ভিতরে না থাকে। এবার পাপড়ি গুলোকে আলাদা করে ফেলতে হবে। এখন যেকোনো ধরনের পরিষ্কার কোন পাতিলে পাপড়ি গুলোকে রাখতে হবে। 

    এরপর পাতিল এর ভিতরে মাঝখানে দিতে হবে যে কোন ধরনের একটি লোহার স্ট্যান্ড বা বাটি। এখন পাতিলে দিতে হবে এক জগ পরিমাণ মতো পানি। পানি দেওয়ার পর স্ট্যান্ড বা বাটির উপরে রাখতে হবে আরেকটি মাঝারি ধরনের আকৃতির বাটি যা পাতিলে সহজেই ধরে যাবে। উপরে দিতে হবে কাঁচের কোন ঢাকনা। ঢাকনাটি উল্টো করে দিতে হবে।

    ইমেজ

    এবার চুলা জ্বালিয়ে পাতিল টি গরম হলে চুলার আঁচ লো থেকে মিডিয়ামের মধ্যে রাখতে হবে। এবং ঢাকনার উপরে রাখতে হবে কয়েকটি বরফের টুকরো। পাতিল এর ভেতরে পানি বাষ্পীভূত হয়ে ঢাকনা থেকে উপরের বাটিতে একটু একটু করে পড়বে। এতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। ২৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখতে পাবেন উপরের বাটিতে গোলাপ জল দিয়ে পরিপূর্ণ।

    এভাবেই খুব সহজে ঘরে তৈরি করতে পারেন গোলাপ জল। এখন কোন বোতলে গোলাপজলটি সংরক্ষণ করতে হবে। এই গোলাপ জল আপনি একমাস ব্যবহার করতে পারবেন। আর যদি ফ্রিজে রাখেন তাহলে পাঁচ থেকে ছয় মাস নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যাবে। 

    গোলাপজল ব্যবহারের অপকারিতা আছে কি

    আমরা জানি গোলাপজল আমাদের ত্বকে ব্যবহারের ফলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গোলাপজল ব্যবহারে অপকারিতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেমনঃ গোলাপজল এবং বেকিং সোডা দুইটাই ত্বকে ব্যবহার আলাদাভাবে উপকারী। কিন্তু গোলাপ জলের সাথে বেকিং সোডা ব্যবহার করলে ত্বকের পিএইচ এর বিপরীতে কাজ করার ফলে তো অনেক সময় ত্বক সংবিধানশীল হয়ে যেতে পারে।

    আরো পড়ুন: ত্বক  চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার কার্যকারিতা জানুন - পেয়ারা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

    ভিনেগার সাধারণত ত্বকের যেকোনো ধরনের দাগ কমাতে সাহায্য করে থাকে এবং ব্রণ কমাতেও সহায়তা করে। কিন্তু ভিনেগারের সাথে গোলাপজল ব্যবহার করলে ত্বকের পিএইচ এর মাত্রা পরিবর্তন হতে পারে। এজন্য এই দুটি উপাদান একসাথে ত্বকে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

    আবার গোলাপজলের সাথে লেবুর রস ব্যবহারও অনেক সময় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া সুগন্ধি জাতীয় জিনিসে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদেরও গোলাপ জলের সাথে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার কিছু ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। এজন্য তাদেরও এসেনশিয়াল তেল এবং গোলাপজল একসাথে ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

    রূপচর্চায় গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারী দিক

    রূপচর্চায় গ্লিসারিনের ব্যবহারের উপকারিতা আমরা কম বেশি সবাই জানি। সাধারণত গ্লিসারিন চর্বি এবং তেল দিয়ে তৈরি রংহীন এবং গন্ধহীন তরল একটি ভারী পদার্থ যা ত্বকের জন্য দারুন কার্যকারী। কারণ গ্লিসারিনে থাকা বাতাস থেকে ময়শ্চার কে টেনে এনে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং এই আর্দ্র ভাবকে ধরে রাখতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক কখনো শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে যায় না, ত্বক থাকে প্রাণবন্ত।

    ইমেজ

    রূপচর্চায় গ্লিসারিনের ব্যবহারের উপকারিতা নিচে দেওয়া হলঃ

    ময়েশ্চার হিসেবে গ্লিসারিন এর ব্যবহারের উপকারিতঃ গ্লিসারিন কে আমাদের ত্বকে Moisture হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গ্লিসারিনের Texture এর কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য ত্বকে আদ্র ভাব বজায় থাকে। তাই আপনি যদি শুষ্ক ত্বকের অধিকারী হন তাহলে গ্লিসারিনের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে উপকার পাবেন। আর আপনি তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী হলে মুখে এবং শরীরে গ্লিসারিনের সাথে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে।

    টোনার হিসেবে গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতাঃ গ্লিসারিন আপনি টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই টোনার আপনার ত্বকে আদ্র ভাব ধরে রেখে পিএইচ লেভেল ঠিক রেখে ব্যালেন্স রাখে ফলে ত্বক হয় হেলদি। এছাড়া ত্বকের পোরসগুলো টাইট করতেও সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে টোনার তৈরি করার জন্য লাগবে ৮ চামচ গোলাপ জল এবং ৪ চামচ গ্লিসারিন এই টোনার আপনি কটন প্যাডে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন অথবা স্প্রে বোতলে নিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।

    গ্লিসারিন এর তৈরি ক্লিনজার ব্যবহারের উপকারিতাঃ গ্লিসারিন দিয়ে ক্লিনজার ঘরে তৈরি করতে পারেন এই ক্লিনজার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে কোন কেমিক্যাল এবং অ্যালকোহল নেই। এটা ঘরে তৈরি হওয়ার কারণে কটন পেটে নিয়ে মুখে আলতোভাবে মুছতে ত্বকের সব ধরনের ধুলাবালি ময়লা জীবাণু ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সহায়তা পরে। ফলে ত্বক থাকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল।

    এন্টি এজিং উপাদান হিসেবে গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতাঃ গ্লিসারিন এন্টি এজিং উপাদান হিসেবেও দারুণ কার্যকরী। ত্বকে যেকোনো ধরনের বলিরেখা, কুচকানো ভাব বয়সের আগে বয়সে ছাপ পরলে সেটা কমাতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য আপনি গ্লিসারিন সরাসরি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া গ্লিসারিন দিয়ে তৈরি করতে পারেন দারুন উপকারি ফেস মাস্ক। এজন্য আপনার লাগবে একটি ডিম, মধু, এবং গ্লিসারিন। সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে এপ্লাই করে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

    ত্বকের দাগ কমাতে গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতাঃ ত্বকে যেকোনো ধরনের দাগ ছোপ কমানোর জন্য গ্লিসারিন দারুল কার্যকরী। এজন্য ভালো মানের ভেসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলির সাথে গ্লিসারিন মিক্সড করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ গ্লিসারিন এবং এক চামচ পেট্রোলিয়াম জেলি ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে রেখে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকে যে কোন ধরনের scars থাকলেও তা দূর করে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলেই উপকার লক্ষ্য করতে পারবেন।

    ত্বকের ব্ল্যাকহেড এবং হোয়াইটহেড দূর করতে গ্লিসারিনের ব্যবহারঃ ত্বক থাকা  হোয়াইটহেড এবং ব্ল্যাকহেড দূর করতে সাহায্য করে গ্লিসারিন। এছাড়া গ্লিসারিন কোর্সগুলোকে আনক্লোফট করতেও সহায়তা করে থাকে। এজন্য মুলতানি মাটির সাথে দুই চামচ গ্লিসারিন এবং এক চামচ গোলাপ জল ব্যবহার করে উপকার পাবেন।

    মাথার খুশকি দূর করতে গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতাঃ আপনার মাথার ত্বকে খুশকি দূর করতে গ্লিসারিন সহায়তা করে থাকে। এজন্য দরকার দুই তিন ফোটা ট্রিটি ওয়েল এবং গ্লিসারিন। দুটি উপাদান ভালোভাবে মিক্সড করে মাথার তালুতে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। গ্লিসারিনে থাকা এন্টিফাঙ্গাল উপাদান আর ট্রিটি ওয়ালে থাকা অ্যান্টিসেপ্টিং উপাদান মাথার খুশকি দূর করতে দারুন ভাবে কার্যকরী।

    আরো পড়ুন: গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষায় আইস কিউবের কার্যকরী ৮টি ব্যবহার জানুন

    ঠোটের পরিচর্যায় গ্লিসারিন এর ব্যবহারঃ ঠোটের পরিচর্যায়ক গ্লিসারিন দারুন ভাবে উপকারী। ঠোঁটের জন্য গ্লিসারিনের সাথে মধু দিয়ে লিপ মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করে করতে পারেন। এক চামচ গ্লিসারিন এর সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে ২০ মিনিট পর ঠোঁটে রেখে ধুয়ে ফেলতে এতে হবে। এতে ঠোঁট হবে দারুন সফট এবং গোলাপি। এই মিশ্রণটি বিশেষ করে শুষ্ক লীপের জন্য খুবই কার্যকরী।

     স্ক্রাব হিসাবে গ্লিসারিনের ব্যবহারঃ আপনি যদি ঘরে তৈরি প্রাকৃতিক Scrub ব্যবহার করতে চান তাহলে গ্লিসারিন ব্যবহার করেও করতে পারেন। এতে লাগবে এক চামচ গ্লিসারিন এবং এক চামচ চিনির সাথে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল। তিনটি উপাদান প্রপারলি মিক্সড করার পর ফেস এবং বডিতে ভালোভাবে এপ্লাই করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে আপনার ত্বক থাকবে হেলদি এবং জিল্লাদার তার।

    ত্বকের ট্যান দূর করতে গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতাঃ ত্বকে যে কোন ধরনের Tan দূর করার জন্য গ্লিসারিন দিয়ে তৈরি করতে পারেন দারুন কার্যকরী Face mask. ত্বকে বা শরীরে যে কোন ধরনের Tan দূর করতে এই  মাস্ক টি সহায়তা করে থাকে। এজন্য একটি পাকা কলা ভালোভাবে ম্যাশ করে সাথে দিতে হবে পরিমাণ মতো গ্লিসারিন। এই মিশ্রণটি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ত্বকে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

    এই প্যাকটি সেনসিটিভ স্কিনের অধিকারীরাও ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ এটা একদম হারবাল প্যাক। এতে ত্বকে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না।

    গ্লিসারিন ব্যবহারের অপকারিতা জেনে নিন

    গ্লিসারিন এমন একটি উপাদান যা ত্বকে ব্যবহারে উপকার বয়ে নিয়ে আসে সবসময়ই। গ্লিসারিন ব্যবহারের অপকারিতা খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। তবে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা ব্যবহারে সাধারণত অবলম্বন করতে পারেন। কারণ এতে ব্যবহারে ত্বকে রেশ, চুলকানি বা লাল হয়ে যেতে পারে। এছাড়া গ্লিসারিন দিয়ে রোদে বাইরে না যাওয়াই ভালো হবে। কারণ এতে ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে। আবার গ্লিসারিন খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

    পরিশেষে

    রূপচর্চায় গোলাপজল এবং গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে জানলাম।ত্বকে ব্যবহারের জন্য গোলাপজল এবং গ্লিসারিন এই দুটি হল আশীর্বাদ। গোলাপজল একটি প্রাকৃতিক মৃদু উপাদান যা সব ধরনের ত্বকেই ব্যবহার করা যায়। গোলাপজল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি ঘরে তৈরি গোলাপজল অথবা বাজার থেকে যেকোন ভালো মানের গোলাপজল কিনে ব্যবহার করতে পারেন।

    গ্লিসারিন রংহীন একটি ভারী পদার্থ যা আমাদের ত্বকে ব্যবহারে অনেক উপকার নিয়ে আসে। আপনি ইচ্ছে করলে ত্বকে শুধু গ্লিসারিন দিতে পারেন আবার গ্লিসারিনের সাথে গোলাপজল মিক্সড করে ব্যবহার করেও অনেক উপকার পেতে পারেন। এই দুই উপাদান ত্বকে ব্যবহারে আমাদের যে উপকার বয়ে নিয়ে আসে আপনি কিছুদিন ব্যবহার করলেই লক্ষ্য করতে পারবেন।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

    comment url