রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করবেন যেভাবে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ছাত্রছাত্রীরা তাদের মাতার নাম সহজে কিভাবে সংশোধন করবেন, সে সম্পর্কে অনেকেই বিস্তারিত জানতে চান। এছাড়া আমরা জানবো, মাতার নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

পোস্ট সূচীপত্রঃরাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি সার্টিফিকেটের কোনটায় যদি মাতার নাম কোন কারনে ভুল হয়ে থাকে, তাহলে তা সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। এই সংশোধন প্রক্রিয়া সহজে কিভাবে সম্পন্ন করা যায় তা নিয়ে আজকের পোস্টে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের আবেদন

শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের আবেদন করবেন যেভাবে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনেক সময়েই ছাত্র-ছাত্রীদের মাতার নাম সংশোধনের করার প্রয়োজন দেখা দেয়। ছাত্রছাত্রীদের জেএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি সার্টিফিকেট এ যেভাবে মাতার নাম লেখা আছে, কোন কারনে যদি মাতার এনআইডি নামের সাথে নামের অমিল দেখা দেয়, তখন শিক্ষা বোর্ডে সার্টিফিকেটের মাতার নাম সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে।

এক্ষেত্রে এনআইডি নামের সাথে সার্টিফিকেট এ মাতার নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করার প্রয়োজন পড়ে। বর্তমানে নাম সংশোধনের জন্য শুধুমাত্র অনলাইনে আবেদন ফর্মের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। অনলাইনে আবেদন পত্র যথাযথভাবে পূরণ করে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে সাবমিট করতে হয়।

এক্ষেত্রে মাতার নাম সংশোধনের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট এ (www.rajshahieducationboard.gov.bd) গিয়ে নাম সংশোধন অপশনে ক্লিক করে যথাযথভাবে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে ফরম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রথম পেজেই আপনারা নিচের তথ্য সম্পর্কিত অপশন গুলো দেখতে পাবেন। তারপর লাল মার্ক করা অংশে ক্লিক করলে একটি ফর্ম আসবে। এখানে আপনাকে নাম এবং বয়স সংশোধন অপশনে ক্লিক করতে হবে।




উপরোক্ত ফর্মে নাম এবং বয়স সংশোধন অপশনে ক্লিক করলে নিচের আবেদনপত্র মত একটি আবেদন পত্র ফর্ম যথেষ্টআসবে। এই আবেদন পত্রটি আপনাকে যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

আবেদন পত্রটির ছবি দেখে নিন:


উপরোক্ত আবেদন পত্রটি যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। আপনার পরীক্ষার নাম, পরীক্ষার সাল, রোল নাম্বার, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সঠিকভাবে পূরণ করে সিকিউরিটি কী অপশন পূরণ করতে হবে। আপনি যদি সিকিউরিটি কী প্রথমে বুঝতে না পারেন তাহলে রিলোড অপশনে ক্লিক করলে নতুন একটি সিকিউরিটি কী পাবেন।

সবগুলো অপশন যথাযথভাবে পূরণ করে সার্চ অপশনে ক্লিক করলে নিচের তথ্যাবলী সম্বলিত ফর্ম আসবে।



উপরোক্ত ফর্ম যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। যেহেতু আপনি মাতার নাম সংশোধন করবেন, তাই সঠিক মাতার নাম দেখানো অংশে যথাযথভাবে লিখতে হবে। পেমেন্ট অপশনের সবগুলো অপশনও যেভাবে দেখানো হয়েছে সেভাবে তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

ফটো অপশনে আপনার ছবি সংযুক্ত করতে হবে। আপনি যদি মিটিংয়ে উপস্থিত না হতে পারেন, তাহলে যিনি মিটিংয়ে উপস্থিত হতে পারবেন তার ছবি মিটিং পারসন্স ফটোতে সংযুক্ত করতে হবে। এরপর আপনার সিগনেচার প্রদান করতে হবে।

উপরোক্ত সব অপশন সঠিক ভাবে পূরণ করার পর নেক্সট অপশনে ক্লিক করতে হবে। নেক্সট অপশন এ ক্লিক করার পর আপনার আবেদন পূরণের একটি কপি বের হবে, আরেকটি বের হবে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ, যা সোনালী সেবা নামে পরিচিত। এই পর্যায়ে আপনাকে আবেদন পত্রটি নির্ভুল হয়েছে কিনা তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করতে হবে।

কারণ একবার ভুল হলে এই আবেদনপত্র সংশোধন করার সুযোগ নেই। ভুল হলে আবার প্রথম থেকে নতুন করে আবেদন পত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই আবেদন পত্র ভালোভাবে যাচাই করে টাকা জমা দিবেন।

আপনি আবেদন পত্রটি যে সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করেছেন, তা নিম্নোক্ত ফর্মটিতে দেখতে পারবেন-



আবেদন পত্রটি নির্ভুল হলে প্রিন্ট অপশনে ক্লিক করে এর একটি কপি প্রিন্ট করতে হবে এবং তা ভালোভাবে চেক করে নিতে হবে। এবং এই ফর্মটি বোর্ডে অন্যান্য সকল কাগজপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। এর সাথে একটি টাকা জমা দেওয়ার রশিদ পাবেন, যেখানে তিনটি অংশ থাকবে। এই টাকা জমা দেওয়ার রশিদ নিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে।

টাকা জমা দেওয়ার পর এই তিনটি অংশের একটি অন্যান্য সকল কাগজপত্রের সাথে বোর্ড অফিসে জমা দিতে হবে, একটি ব্যাংকের নিকট থাকবে এবং অন্য অংশটি আপনার কাছে থাকবে।

নিচের অংশটি শিক্ষা বোর্ডে জমা দিতে হবে-

নিচের অংশটি জমা কারি নিকট থাকবে-

এবং নিচের অংশটি ব্যাংকের নিকট থাকবে-

যে সকল কাগজপত্রের কপি জমা দিতে হবে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের আবেদনের জন্য, অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করার পর তার কপি বোর্ড অফিসে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সকল কাগজপত্রের কপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে মূল কপি জমা দেওয়ার দরকার নেই। যে সকল কাগজপত্রের কপি জমা দিতে হবে তা দেখে নিন-

  • জন্ম নিবন্ধনের কপি
  • পিইসি সনদের কপি
  • প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্রের কপি
  • ভর্তি রেজিস্টার এর কপি
  • মাতার এসএসসি সনদ এর কপি( যদি থাকে)
  • মাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি
  • পিতা-মাতার কাবিননামার কপি
  • ভাই বোন থাকলে তাদের এসএসসি সনদের কপি (যদি থাকে)
  • এফিডেভিট (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক)
উপরোক্ত সকল কাগজপত্রের কপি আবেদন ফরমের সাথে টাকা জমা দেয়ার রশিদ সহ বোর্ড অফিসে জমা দিতে হবে।

বোর্ড অফিসে কখন উপস্থিত হতে হবে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের আবেদন করার কিছুদিন পর, আপনার মোবাইলে একটি বোর্ডে ও উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে এসএমএস যাবে। এই এসএমএসের মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে বোর্ড অফিসে উপস্থিত হওয়ার সময়। এছাড়া আপনি বোর্ডের ওয়েবসাইটের সোনালী সেবার অপশনে গিয়ে এই সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবেন।

বোর্ডে উপস্থিত হওয়ার দিন আপনাকে অবশ্যই সকল কাগজপত্রের মূল কপি সাথে নিয়ে আসতে হবে। ভোট অফিস সংশোধন কমিটি আবেদন পত্র এবং আবেদনপত্রের সাথে আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের মূল কপি ভালোভাবে যাচাই করার পর, যদি সবকিছু সঠিক মনে করেন তাহলে এই পর্যায়ে আপনার কাজ শেষ হবে।

আবার অনেক সময় আপনাকে সশরীরে বোর্ড অফিসে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে। কারণ অনেক সময় অটোমেটিক ভাবে আপনার আবেদনপত্র এবং কাগজপত্র যাচাই করা হতে পারে এবং সংশোধন করা হতে পারে। আপনি আগের মতই বোর্ডের ওয়েবসাইটের সোনালী সেবার অপশনে গিয়ে এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

সংশোধিত নামের তালিকা কিভাবে দেখবেন

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড অফিসে উপস্থিত হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পর বোর্ডের ওয়েবসাইটে সোনালী সেবার যাচাই অপশনে গিয়ে আপনার মাতার নামের সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এই পর্যায়ে যদি স্ট্যাটাস ফিনিশড আসে তাহলে তারিখ এবং সিরিয়াল নাম্বার অনুযায়ী সংশোধিত নামের তালিকা থেকে আপনার মাতার নামের সংশোধন দেখতে পারবেন।আবার কাজটি যদি প্রক্রিয়াধীন থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার কাজটি এখনো শেষ হয়নি।

এই আদেশ হওয়ার পর এই পর্যায়ে আপনার মার্কশিট, মূল সনদ, প্রবেশপত্র এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ডে সংশোধিত মাতার নাম লিখতে হবে। সাধারণত এখানে হাতে কেটে সংশোধিত নাম লেখা হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি ফ্রেশ কপি চান তাহলে ৫০০ টাকা দিয়ে নতুন করে ফ্রেশ কপির জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর আপনি সংশোধিত মূল কপি পাবেন।

পরিশেষে

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মাতার নাম সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন ফরমের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের কপি এবং ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ সহ বোর্ড অফিসে যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করলে খুব সহজেই মাতার নাম সংশোধন কাজটি করা সম্ভব। যদিও কাজটি একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তবে সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করলে খুব সহজেই কাজটি সম্পন্ন করা যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url