সাবুদানা খাওয়ার যত উপকারিতা - সাবুদানা কি থেকে তৈরি হয়

 

সাবুদানা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী একটি খাবার। সাদা মুক্তোর মত ছোট্ট দানা টি পরিমিত গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। এছাড়া সাবুদানা কি থেকে তৈরি হয় তা আমরা জানবো।

ইমেজ

পোস্ট সূচীপত্রঃসাবুদানা কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অধিক হওয়ায় কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া এই খাবারটি অনেক সুফল বয়ে নিয়ে আসে। তাই আমাদের সবার পরিচিত এই খাবারটি আমরা আমাদের প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারি নিয়ম করে।

সাবুদানা কি

সাবুদানা ছোট একটি সাদা গোলাকার মুক্তোর মত দানাদার খাদ্যদ্রব্য যা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা বিভিন্নভাবে উপকার পেয়ে থাকি। এই সাবুদারাকে অনেকে "ম্যাজিকাল বল" বলে উল্লেখ করে থাকে। কারণ এই ছোট ছোট বলের মতো দানাদার খাদ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। সাধারণত Cassava এক ধরনের গাছের মূল থেকে এই সাবুদানা তৈরি করা হয়ে থাকে।

সাবুদানা খাওয়ার যত উপকারিতা জানুন

সাবুদানা সবার পরিচিত একটি খাবার। ধবধবে সাদা এই ছোট দানা কার্বোহাইড্রেট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এজন্য যারা শরীরে শক্তি বাড়াতে চান তারা সহজেই সাবুদানা ডাইটে রেখে রাখতে পারেন। এছাড়া অনেকে ব্যায়াম করার আগে বা পরে সাবুদানা খেয়ে থাকেন। এতে ইনস্ট্যান্ট এনার্জি পাওয়া যায়। এছাড়াও সাবুদানা খেলে আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়। সেগুলো নিজে আলোচনা করা হলোঃ

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাবুদানাঃ সাবুদানা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। কারণ সাবুদানা রয়েছে এক ধরনের জলীয় ফাইবার। যা শরীরে ভেতরে গিয়ে পৌষ্টিক নারীকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এজন্য কোলন ক্যান্সারের মতো রোগ দূরে থাকে।

শক্তি বৃদ্ধিতে সাবুদানাঃ সাবুদানা যেহেতু পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে তাই সাবুদানা নিয়মিত ডায়েটে রাখলে শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। সাবুদানায় থাকা শর্করা শরীরে গিয়ে দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হতে পারে, এজন্য যারা ইনস্ট্যান্ট এনার্জি চান তারা সাবুদানা খেতে পারেন। এছাড়া অসুস্থতার পর শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য আপনার ডায়েটে সাবুদানা রাখতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ঢেঁকি ছাটা চালের যত পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাবুদানাঃ সাবুদানায় রয়েছে নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং তা নষ্ট করে শরীরের বাহিরে পাঠিয়ে দেয়। এজন্য ক্যান্সারের মতো রোগ সৃষ্টিকারী এই ফ্রী রেডিকেল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এবং ক্যান্সার থেকে দূরে থাকার জন্য ডায়েটে সাবুদানা রাখতে পারেন।

হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সাবুদানাঃ সাবুদানা রয়েছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে। তাই অনেকেই যারা একটু বয়স্ক হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ডায়েটে সাবুদানা রাখেন। এই সাবুদানা হারকে ক্ষয় রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে। এছাড়া দাঁত মজবুত করতেও সাবুদানা নিয়মিত ডায়েটে রাখতে পারেন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাবুদানাঃ একটি সমীক্ষায় প্রমাণিত যে, পটাশিয়াম আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করে থাকে। আর সাবুদানায় রয়েছে পটাশিয়াম। তাই নিয়মিত সাবুদানা খেলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

শরীরে কোষ বৃদ্ধিতে সাবুদানাঃ সাবুদানা রয়েছে অল্প পরিমাণ প্রোটিন। এই প্রোটিন আমাদের শরীরে বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সাবুদানা নিয়মিত পরিমাণ মতো ডায়েটে রাখলে শরীরে বৃদ্ধির জন্য উপকার পাওয়া যাবে।

United states Department of Agriculture এর মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম সাবুদানার  পুষ্টি উপাদান সম্পর্কিত তথ্য নিচে দেওয়া হলঃ

পুষ্টি উপাদানের নামপুষ্টির পরিমান
শক্তি:358 kcal
জল:11 g
শর্করা:88.7 g
প্রোটিন:0.19 g
ফ্যাট:0.02 g
তন্তু বা ফাইবার:0.9 g
ক্যালসিয়াম ( Ca ):20 mg
আয়রন ( Fe ):1.58 mg
ম্যাগনেসিয়াম (Mg):1 mg
ফসফরাস ( P ):7 mg
পটাসিয়াম ( K ):11 mg
সোডিয়াম ( Na ):1 mg
ভিটামিন B1:0.004 mg
ভিটামিন B5:0.135 mg
ভিটামিন B6:0.008 mg

শিশুদের সাবুদানা খাওয়া কতটুকু উপকারী

সাবু দানা প্রায় পুরোটাই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার। অর্থাৎ সাবুদানায় কমপ্লেক্স স্টারস রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। শিশুদের জন্য সাবুদানা উপকারী তবে যেহেতু সাবুদানায় কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি তাই শুধুমাত্র সাবুদানা উপর নির্ভর না করে শিশুদের অন্যান্য খাবার পরিমাণ মতো খাওয়াতে হবে। তাই আপনার শিশুকে অন্যান্য খাবারের সাথে সাবুদানা দিতে পারেন পরিমাণ মতো।

বলা হয়ে থাকে, প্রতি ১০০ গ্রাম সাবুদানায় ৩৫০ ক্যালোর রয়েছে। অর্থাৎ শিশুকে ১০০ গ্রাম সাবুদানা খাওয়ালে ৩৫০ ক্যালোরি পাবে। যা একটি শিশুর জন্য যথেষ্ট। এতে খুবই অল্প পরিমাণে ফ্যাট এবং প্রোটিন রয়েছে। এসব পুষ্টি উপাদান ছাড়াও সাবুদানায় অল্প পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে।

ইমেজ

সাবুদানায় যেহেতু ক্যালোরের পরিমাণ বেশি থাকে তাই যেসব মায়েরা বাচ্চাদের ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন বা যেসব শিশুর বয়সের তুলনায় ওজন তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে, সেসব শিশুদের ডায়েটে সাবুদানা রাখতে পারেন। এতে তাদের তাদের ওজন বাড়বে। তাই যেসব মায়েরা বাচ্চাদের ওজন নিয়ে চিন্তিত, তারা শিশুর খাবারের সাবুদানা রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে।

সাবুদানা সহজে হজম হয় এমন একটি খাবার। তাই শিশুর হজমে সমস্যা থাকলে এই খাবারটি তাদের ডায়েটে রাখতে পারে। এতে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো হবে। তাই নিয়ম করে শিশুর খাবার ডায়েটে সাবুদানা রাখতে পারেন।এছাড়া সাবুদানায় রয়েছে আয়রন, যা রক্তস্বল্পতায় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।

সাবুদানায় পলিফেমিল নামে এক ধরনের এন্টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আর আমরা জানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই শিশুরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পরিমাণ মতো সাবুদানা তার ডায়েটে রাখতে পারেন। এছাড়া সাবুদানাই রয়েছে ক্যালসিয়াম যা শিশুর হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করবে।

আরো পড়ুনঃ বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীদের পরিবর্তন সম্পর্কে জানুন

সাবুদানায় যদিও অল্প পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে তবুও এই প্রোটিন শিশুর শরীরে বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সাবুদানায় রয়েছে ফসফরাস যা হার্টের যেকোনো রোগ এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে থাকে।

তবে সাবুদানায় যেহেতু কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অনেক বেশি, তাই শুধুমাত্র সাবুদানার উপর নির্ভর না করে শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে সব ধরনের খাবার তার ডায়েটে রাখতে হবে।কারন শিশুর খাদ্যে শুধুমাত্র সাবুদানা রাখলে , শিশু অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারে, শিশুর শরীর ফুলে যেতে পারে শিশুর শরীরে পানি আসতে পারে। শিশুর খাবারের অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে না পারেন তাহলে শিশুর শরীরে অপুষ্টি আসতে পারে।

সাবুদানায় যেহেতু কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্যান্য পুষ্টি উপাদান খুবই অল্প পরিমাণে থাকে, তাই শিশুর মায়েদের অতিরিক্ত সাবুদানা খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার বজায় রেখে সাবুদানা পরিমিত পরিমাণে শিশু ডায়েটে রাখতে হবে। এছাড়া প্রোটিন জাতীয় কোন খাবারের সাথে সাবধানে মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারেন। 

সাবুদানা কি থেকে তৈরি হয়

আমাদের সবার পরিচিত সাবুদানা আসলে কি থেকে তৈরি হয়ে থাকে অনেকেই জানতে চান। কেউ মনে করেন সাবুদানা মিষ্টি আলু থেকে তৈরি আবার কেউ ভাবেন ভুট্টা থেকে তৈরি হয়। আসলে সাবুদানা তৈরি হয় ট্রপিও কা বা Cassava নামক এক ধরনের শক্ত কাণ্ডওয়ালা গাছের মূল থেকে। বাৎসরিক ফসল হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা এবং এশিয়ার কিছু দেশে এই গাছ ব্যাপক হারে চাষ করা হয়ে থাকে।

এই Cassava গাছ বিভিন্ন জাতের হতে পারে। কিছু কিছু গাছ বিষাক্ত হতে পারে আবার এমনও দেখা যায় ভাল জাতের Cassava ঠিকমতো প্রসেসিং না করলে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। তাসাড়া এই কাজটি অনেক কষ্ট সহিষ্ণু কাজ, কারণ প্রচন্ড খরায় এই কাজটি করতে হতে পারে। সাধারণত Cassava গাছ লাগানোর এক বছর পর মূল সংগ্রহ করা হয়।

এই মূল দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের মিষ্টি আলুর মত। মূল থেকে উপরের ময়লা পরিষ্কার করে মেশিনের সাহায্যে গুঁড়ো করে ময়দার মতো তৈরি করা হয়। এরপর এই অংশ থেকে মেশিনের সাহায্যে বিশেষ প্রক্রিয়ার  মাধ্যমে ছোট ছোট মুক্তোর মত সাবুদানা তৈরি করা হয়ে থাকে।

ত্বক পরিচর্যায় সাবুদানার ভূমিকা কি

সাবুদানায় থাকা ফ্যানোলিক এসিড এবং হ্যাভনয়েড উপাদান এন্টিঅক্সিডেন্ট এর চমৎকার উৎস। যা ফ্রী রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে, আমাদের ত্বকের নতুন কোষ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া ত্বকের যে কোন ধরনের কুঁচকানো ভাব, বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া সাবুদালায় থাকা  অ্যামিনো এসিড কোলাজেন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। আর এই কোলাজের আমাদের ত্বকের মসৃণ এবং স্বাস্থ্যজ্জল করতে সহায়তা করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় গোলাপজল এবং গ্লিসারিন ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

যারা নিয়মিতট  ত্বকে ব্রণের সমস্যায় ভুগেন, সাবুদারায় থাকা টেনিন  নামের উপাদান নির্দিষ্ট মাত্রার ব্রণ কমাতে সহায়তা করে থাকে। তাই মধু এবং সাবুদানার পেস্ট মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া এই মিশ্রণটি ব্রনের জন্য তৈরি দাগ এবং কালো দাগ কমাতে সহায়তা করে থাকে।

 চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাবুদানার ভূমিকা

সাবুদানা চুলের জন্য বিশেষ উপকার বয়ে নিয়ে আসে। কারণ সাবুদানা রয়েছে অ্যামিনো এসিড যা নিয়মিত গ্রহণে এবং হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে সাবুদানার পেস্ট এর সাথে হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারেন। এই প্যাকটি  চুল পড়া রোধ করা সহ, চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

এ ছাড়া যাদের খুশকি সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য সাবুদানার প্যাক উপকারী হতে পারে। এছাড়া সাবুদানায় থাকা অ্যামিনো এসিড এবং কেরোটিনয়েট উপাদান, এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টি মাইক্রোবিয়াল হিসেবে কাজ করে যা খুশকিযুক্ত মাথার তালু পরিষ্কার করতে, চুলকানি রোধ করতে, শুষ্ক চুলে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে এবং চুলের আগা ভাঙ্গা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে।

সাবুদানা কি ওজন বৃদ্ধি করে

সাবুদানা একটি সরল শর্করা জাতীয় খাবার। সাবুদানায় কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ অনেক বেশি রয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকলেও তা পরিমাণে খুবই কম। তাই সাবুদানা যেহেতু শর্করা জাতীয় খাবার এবং এতে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি থাকে, যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য সাবুদানা হতে পারে একটি আদর্শ খাবার।

আরো পড়ুনঃ সহজ উপায়ে ওজন কমানোর কাঁচকলা ডায়েট সম্পর্কে জানুন

তাই আপনার যদি কাঙ্খিত ওজন বাড়াতে চান তাহলে আপনার খাদ্য তালিকায় সাবুদানা নিয়মিত রাখতে পারেন। এজন্য সাবুদানা আপনি বিভিন্নভাবে আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন। যেমনঃ দুধের সাথে সাবুদানা এবং বিভিন্ন ফল মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার বিভিন্ন সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খেতে পারেন। এখন অনেকে সাবুদানা দিয়ে বড়া বানিয়ে খেয়ে থাকেন।

ইমেজ

সাবুদানা কি ওজন কমাতে কার্যকরী

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাবুদানা খুব একটা কার্যকরী হয় না। কারণ এতে উচ্চ ক্যালরি এবং starch রয়েছে যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নেগেটিভ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা ওজন কমাতে চান তাদের ডায়েটে নিয়মিত সাবুদানা না  রাখাই ভালো হবে। তবে দৈনিক একটি পার্সেন্টেজ হিসেবে সাবুদানা নেওয়া যেতে পারে।

সাবুদানা স্বাস্থ্যের জন্য কি ক্ষতিকর

সাবুদানা একটি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার হওয়ায় যাদের ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে, যাদের ক্যালরি পরিমাণ কম নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে তাদের জন্য সাবুদানা বিশেষ উপযুক্ত নয়। অতিরিক্ত সাবুদানা গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের পরিমাণ বাড়তে পারে এর ফলে শরীরে ফোলা ভাব চলে আসতে পারে।

সাবুদানা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত হওয়ায় শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং খোদার পরিমাণ বাড়াতে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এবং ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয় তাদের দৈনিক সাবুদানা গ্রহণ না করার পরামর্শ রয়েছে। এছাড়া হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের সাবুদানা পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গর্ভাবস্থায় সাবুদানা খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় সাবুদানা খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা রয়েছে। কারণ সাবুদানা রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা গর্ভবতী মহিলার নিয়মিত গ্রহণের ফলে তার নিজের শক্তি বৃদ্ধিতে সাথে সাথে শিশুর শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া সাবুদানায় থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে এই সময় গর্ভবতী মহিলাকে রক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে।

তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মত নিয়ম মেপে নির্দিষ্ট পরিমাণ সাবুদানা গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিনের ডায়েটে রাখা যেতেই পারে।

পরিশেষে

সাবুদানা খায়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ সাবুদানায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদন। বিশেষ করে এতে ক্যালোরি পরিবার খুবই বেশি। আমাদের ছেলেবেলার অন্যান্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার সাথে সাথে সাবুদানাও নিয়মিত খাওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ওজন বৃদ্ধির জন্য এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলার জন্য অনেক মায়েরাই তাদের শিশুকে সাবুদানা খাইয়ে থাকেন।

এছাড়া সাবুদানা আরো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকায় অনেকেই এটাকে তাদের প্রতিদিনের ডায়েটে রেখে থাকেন। কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাবুদানা খাওয়ার সমস্যা হলেও পরিমিত গ্রহণের মাধ্যমে আমরা সবাই এই খাবার থেকে উপকার পেতে পারি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url