ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা অনুযায়ী অনেকে আপনারা নিজেদের রূপ ও স্বাস্থ্য উন্নত করতে ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানে রূপ এবং স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে ই ক্যাপ জনপ্রিয় একটি নাম। ত্বক এবং চুলের যত্ন নিতে, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ও আমাদের স্বাস্থ্যের উপর ই ক্যাপের উপকারিতা অনেক। তবে কিছু বিশেষ মানুষের জন্য ই ক্যাপ অপকারী।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ই ক্যাপ বা ক্যাপসুল রূপচর্চার অংশ হিসেবে মুখে খাওয়া যেতে পারে এবং বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করলেও সমান উপকার রয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে যে সকল উপকার পাওয়া যায়, ই ক্যাপ ব্যবহারের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা এবং ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ই ক্যাপ এর উপকারিতা
ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে ই ক্যাপ ব্যবহারে ফলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় তা বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। আমাদের ত্বক চুল এবং সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ই ক্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ই ক্যাপের এই সকল উপকারী দিক আপনাদের জানানোর জন্য আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে আর্টিকেলটি শুরু করা যাক।
ত্বকের যত্নে ই ক্যাপের উপকারিতা
ই ক্যাপের উপকারী দিক গুলো আলোচনা করতে হলে প্রথমে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে তা হলো ত্বকের যত্নে এবং সুরক্ষায় ই ক্যাপের উপকারিতা সম্পর্কে। ত্বকের যত্নে এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে ই ক্যাপ তুলনাহীন। ই ক্যাপ ত্বকের যত্নে ব্যবহারের অল্প দিনের মধ্যেই আপনি আপনার ত্বকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ ব্যবহারের উপকারিতা গুলো এক নজরে দেখে নিনঃ
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে দারুন উপকারি। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আপনি যদি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চান, তাহলে এক্ষেত্রে ই ক্যাপ হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। ই ক্যাপ বিভিন্নভাবে আপনার ত্বকে ব্যবহার করে উপকার পেতে পারেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য ই ক্যাপ আপনি ক্যাপসুল হিসেবে খেতে পারেন অথবা বাহ্যিকভাবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে চলুন প্রথমে ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
ত্বকে আর্দ্র ভাব বজায় রাখবে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ বাহ্যিকভাবে ব্যবহারের ফলে ত্বকের আর্দ্র ভাব বজায় থাকবে এবং এর ফলে ত্বকের সজীবতা এবং প্রাণবন্ত ভাব বৃদ্ধি পাবে। কারণ ই ক্যাপ ত্বকে মশ্চারাইজার হিসেবে আপনার ত্বকের প্রয়োজনীয় আদ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের জন্য ই ক্যাপ আশিবাদস্বরূপ।
ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি যুগিয়ে ত্বকের সতেজ ভাব ফিরিয়ে আনতে ই ক্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের দাগ ছোপ দূর করতে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ ত্বকের যে কোন দাগ ছোপ দূর করতে অনেক কার্যকরি একটি উপাদান। ই ক্যাপে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে যেকোনো ধরনের দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ত্বকের যে কোন ধরনের ডার্ক স্পট, হাইপার পিকমেন্টেশন, মেলাজমা জনিত সমস্যায় ভুগলে, ই ক্যাপ ব্যবহারে উপকার পাবেন।
ত্বকের বলি রেখা দূর করবে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ এর সাহায্যে ত্বকের বলি রাখা দূর করুন সহজে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের অল্পবয়সে ত্বকে বলি রেখা পরতে দেখা যায়। আবার পরিবেশ দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্য ত্বকে সহসাই কুঁচকানো ভাব চলে আসে। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ই ক্যাপ হতে পারে একটি কার্যকরী সমাধান।
নিয়মিত ত্বকে ই ক্যাপ ব্যবহার করলে ত্বকের বলিরেখা এবং কুচকানো ভাব দূর হয়। এবং অল্প বয়সে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
রাতের ক্রিমে ই ক্যাপ ব্যবহারের সুফল
ই ক্যাপ দিয়ে তৈরি করুন আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী নাইট ক্রিম। ত্বকের যে কোনো সমস্যার সমাধানের জন্য রাতের বেলায় ভালো মানের কোন নাইট ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়। এই ধরনের ক্রিমের সাথে যদি আপনি ই ক্যাপের এক ফোঁটা মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনার ক্রিমের কার্যকারিতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
তাই প্রতিদিনের নাইট স্কিন কেয়ার রুটিনে আপনার ব্যবহারকৃত ক্রিম এর সাথে ই ক্যাপ যোগ করে ত্বকের জন্য দ্বিগুণ সুফল বয়ে আনতে পারেন।
ই ক্যাপ প্রতিরোধ করবে নখ ভাঙ্গা
ই ক্যাপ ব্যবহার করে আপনার নখ ভাঙ্গা সমস্যা সহজেই দূর করুন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের অল্পতেই নখ ভাঙ্গার সমস্যা রয়েছে। নখের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবের জন্যই এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরনের নখ ভাঙ্গা প্রতিরোধ করতে ই ক্যাপ দারুন কার্যকরী।
ই ক্যাপ মুখে খাওয়ার সাথে সাথে ই ক্যাপের তরল অংশ সারারাত ভাঙ্গা নখের চারপাশে দিয়ে রাখলে কিছুদিনের মধ্যেই নখ ভাঙ্গা সমস্যা দূর হবে।
ই ক্যাপ দূর করবে সানট্যান
ই ক্যাপ ত্বকের সানট্যান দূর করতে দারুন উপকারী একটি উপাদান। অনেকেরই ত্বকে অল্পতেই সানট্যান পড়ার সমস্যা রয়েছে। এছাড়া অনেক সময় রোদে থাকার কারণে ও এই সানট্যান পড়তে দেখা যায়। এই ধরনের সমস্যায় নিয়মিত ই ক্যাপ ত্বকে ব্যবহারের ফলে উপকার মিলে। যে কোনো ধরনের সান ক্রিমের সাথে ই ক্যাপ মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে দ্রুত সানট্যান সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
ই ক্যাপ ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে
নিয়মিত ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। কারণ ই ক্যাপে থাকা ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। যা ত্বকের যে কোনো ধরনের ক্ষতি হাত থেকে রক্ষা করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর ফলে ত্বকের যে কোনো ধরনের ক্যান্সার হতেও দূরে থাকা সম্ভব হয়।
চুলের যত্নে ই ক্যাপ এর উপকারিতা
ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ যেমন উপকারী তেমনি উপকার রয়েছে চুলের যত্নেও। চুলের যে কোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে নিয়মিত ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে সুফল পাবেন। চুল পড়া বন্ধ করা সহ নতুন চুল গজাতে ই ক্যাপ এর কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে।
ই ক্যাপ চুল পড়া বন্ধ করবে
ই ক্যাপ এর চুল পড়া বন্ধ করতে উপকার রয়েছে। তাই যারা নিয়মিত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগেন তাদের জন্য একটি বেস্ট সলিউশন হলো ই ক্যাপের ব্যবহার। চুল পড়া বন্ধের জন্য নিয়মিত ই ক্যাপ খাওয়ার সাথে সাথে চুলেও ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার নিয়মিত হেয়ার অয়েলের সাথে আপনার চুলের ঘনত্ব অনুযায়ী ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলের গোড়ায় হালকা হাতে মেসেজ করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ত্বক চুলের যত্নে পেয়ারা পাতার কার্যকারিতা
২০ থেকে ৩০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে।
নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ চুল পড়া বন্ধের সাথে সাথে নতুন চুল গজাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নতুন চুল গজানোর জন্য ই ক্যাপ নিয়মিত চুলের গোড়ায় মেসেজ করে ব্যবহার করতে হবে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি আপনার চুলের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
চুলকে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত করতে ই ক্যাপ
ই ক্যাপ নিয়মিত ব্যবহারে যাদের চুল অতিরিক্ত রুক্ষ, শুষ্ক এবং প্রাণহীন দেখায় তারা চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারেন। ই ক্যাপে থাকা ভিটামিন ই চুলের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখার সাথে সাথে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দিতে দারুণ কার্যকরী।
চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে এবং চুল পরা বন্ধে ই ক্যাপ যেভাবে ব্যবহার করবেন-
ই ক্যাপ চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে এর উপকারিতা অনেক। এখন আপনাদের ই ক্যাপ দিয়ে একটি হেয়ার মাস্ক সম্পর্কে জানাবো। এই হেয়ার প্যাকটি চুলের যে কোন সমস্যা সমাধানে দারুন কার্যকরী। তাহলে চলুন জেনে নেই ই ক্যাপ দিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করার নিয়মঃ
আপনার নিয়মিত তেলের সাথে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল, একটি ডিমের কুসুম এবং দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপ একসাথে ভালোভাবে মিক্সড করে নিন। চুলকে অল্প অল্প করে ভাগ করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সমান ভাবে এপ্লাই করুন। এই হেয়ার প্যাকটি চুলে পনেরো থেকে বিশ মিনিট রাখার পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
একবার ব্যবহারেই আপনার চুলের পরিবর্তন দেখে আপনি নিজেই অবাক হবেন। চুল হবে উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত এবং চকচকে, সেই সাথে চুল পড়াও ধীরে ধীরে কমে যাবে। এবং নিয়মিত এক মাস ব্যবহারেই আপনার চুল পড়া অনেকাংশে কমে যাবে। তাই নিয়মিত আপনার চুলে এই উপকারী হেয়ার প্যাকটি ব্যবহার করতে ্পারেন।
শরীরের যত্নে ই ক্যাপ এর উপকারিতা
ই ক্যাপের উপকারিতা পাবেন শরীরের যত্নেও। ই ক্যাপ ত্বক এবং চুলের যত্নের পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে ই ক্যাপ এর ভূমিকা অনেক। নিয়মিত ই ক্যাপ গ্রহণে শারীরিক বিভিন্নভাবে উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মত নির্ধারিত পরিমাণের ই ক্যাপ গ্রহণ করতে পারেন।
নিয়মিত ই ক্যাপ গ্রহণের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ এতে রয়েছে উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকেও আমাদের রক্ষা করে। এছাড়া শরীরের যেকোনো ধরনের সংক্রমণজনিত প্রদাহ থেকেও রক্ষা পেতে ই ক্যাপ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃ টানটান এবং তারুণ্য দীপ্ত ত্বকের জন্য বিট্রুট খাওয়ার নিয়ম
ই ক্যাপ আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমনঃ হার্টের রোগ, ক্যান্সার, আলঝাইমার মতো রোগ থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে। এছাড়া ত্বকের যেকোনো ধরনের ক্ষত দ্রুত ভালো করতে ই ক্যাপ দারুন কার্যকরী।
যে কোন ধরনের ক্ষত সারাতে নিয়মিত ই ক্যাপ গ্রহণের ফলে ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে।অনেকেই আছেন যারা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যায় ভুগেন। এই ধরনের রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ই ক্যাপ গ্রহণ করলে উপকার পাবেন। কারণ ই ক্যাপ রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে।
এছাড়া নিয়মিত ই ক্যাপ গ্রহণের ফলে পেশির কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সহায়তা করে থাকে। ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সঠিকভাবে জানা থাকলে এই উপকারিতা গুলো গ্রহণ করতে আপনার কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ই ক্যাপের অপকারিতা আছে কি
ই ক্যাপ এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন। এখন আপনাদের নিশ্চয়ই জানার আগ্রহ রয়েছে, ই ক্যাপের অপকারিতা আছে কিনা সে সম্পর্কে। দেখুন, যে কোন জিনিস ব্যবহারের ফলে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়। সব জিনিসের যেমন উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে তেমনি ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।
যদিও ই ক্যাপ এর অপকারিতা খুব একটা নেই, তবু ব্যবহারের সময় আপনাকে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে।
নিচে ই ক্যাপের অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো জেনে নিনঃ
- বিশেষ করে যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের ই ক্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। কারণ ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে আপনার এলার্জি সমস্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
- ই ক্যাপ যদিও আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবে যারা সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী তাদের জন্য সরাসরি ই ক্যাপ ত্বকে ব্যবহার না করাই ভালো হবে। এক্ষেত্রে আপনার ত্বকের যত্নের কোন প্রসাধনীর সাথে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে ই ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
- অতিরিক্ত পরিমাণে ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মাথা ঘুরানো এবং ঝিমঝিম এর মত সমস্যা হতে দেখা যায়।
- এছাড়া একটানা ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে পেটের পীড়া জনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত ই ক্যাপ গ্রহণের সময় সীমা নির্ধারণ করতে হবে।
ই ক্যাপ খাওয়ার নিয়ম জানুন
ই ক্যাপ ব্যবহারের উপকারিতা যথাযথা ভাবে পাওয়ার জন্য এর খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানতে হবে।আপনি যদি ই ক্যাপ মুখে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত সঠিক মাত্রা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া ভালো হবে। তবে চিকিৎসকগণ সাধারণত ই ক্যাপ গ্রহণের সঠিক সময় বলে থাকেন রাতে।
তবে আপনি চাইলে সকাল বেলাও ই ক্যাপ গ্রহণের সময় নির্ধারণ করতে পারেন। সাধারণত ই ক্যাপ সারা বছর এক টানা খাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হয় না। এক্ষেত্রে আপনি দুই থেকে তিন মাস ই ক্যাপ গ্রহণের পর ২-৩ মাস বিরতি দিয়ে আবার খাওয়া শুরু করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আবার অনেক ক্ষেত্রে আপনি কি উদ্দেশ্যে ই ক্যাপ গ্রহণ করছেন সেটাও বিবেচনায় এনে অর্থাৎ সেই উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত ই ক্যাপ গ্রহণ করার কথা বলা হয়ে থাকে। যেমনঃ আপনি যদি চুল পড়া রোধের জন্য ই ক্যাপ খাওয়া শুরু করেন, তবে চুল পড়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ই ক্যাপ খাওয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আবার চিকিৎসকগণ কোন ব্যক্তির স্বাস্থ্য কেমন, বয়স এর উপর এবং লিঙ্গ ভেদে ই ক্যাপ হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য প্রতিদিন ৪০০ (আইইউ) এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার জন্য প্রতিদিন ৩০০ (আইইউ) পরিমান খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তা না হলে ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা ভুল ভাবে আপনার শরীরে প্রয়োগ হবে।
ই ক্যাপ কেন এত জনপ্রিয়
ই কাপ কেন এত জনপ্রিয় অনেকের মাথায় এই কথা আসে ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা না জানার কারণে। সাধারণত ই ক্যাপ খাবারের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে মুখে খাওয়া যায় এবং বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। আপনি যেভাবেই ই ক্যাপ ব্যবহার করুন না কেন এর মাধ্যমে উপকার পাবেন নিশ্চিত।
ই ক্যাপ একটি ক্যাপসুল আকারের ফর্মে থাকে, যার ভেতরে রয়েছে চর্বি বা তেল এবং যা দ্রবণীয় ভিটামিন সমৃদ্ধ, এবং এটা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ই ক্যাপে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিন খেলে ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হয়
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সাথে সাথে ত্বককে সতেজ এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও ই ক্যাপের জুরি মেলা ভার। বর্তমানে তাই ই ক্যাপ দিয়ে ত্বকের যত্ন নিতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে এবং বিভিন্ন ত্বক পরিচর্যা কারী প্রসাধনের মধ্যেও ভিটামিন ই এর পর্যাপ্ততা লক্ষ্য করা যায়।
শরীর এবং ত্বকের যত্নের সাথে সাথে চুলের যত্নেও ই ক্যাপের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে রয়েছে। চুল পড়ার রোধে, চুলকে ঘন কালো এবং মজবুত করতে বিভিন্নভাবে ই ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া চুলের যত্নে উৎপাদনকারী বিভিন্ন তেল, শ্যাম্পুতেও ই ক্যাপ এর ব্যবহার রয়েছে। সত্যি কথা বলতে, ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা জানা থাকলেই নিয়মগুলো সহজ হয়ে যায়।
ই ক্যাপ দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ ব্যবহারের উপকারিতা কতটুকু তা উপরে জেনেছেন। ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে ত্বক হয় সুন্দর, সজীব, দাগ মুক্ত এবং যেকোনো ধরনের বলিরেখা মুক্ত। নিয়মিত ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে ত্বকের অকাল বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ই ক্যাপ ব্যবহার করে কি ফর্সা হওয়া যায়?
ত্বকের জন্য এত এত উপকার যে ই ক্যাপ এর সাহায্যে পাওয়া যায়, তাহলে কি ত্বক ফর্সা করার কাজটিও ই ক্যাপ দিয়ে করা যাবে?
আরো পড়ুনঃ ত্বককে জেল্লাদ্বার করতে চালের গুড়া ব্যবহারের উপকারিতা
সত্যি কথা বলতে আমাদের জন্মগত যে ত্বকের রং তা কোনভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে কিছু কিছু উপাদান রয়েছে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং নিয়মিত ত্বকের যথাযথ যত্ন নিলে ত্বক অনেকটাই উজ্জ্বল এবং গ্লোয়িং করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ত্বক পরিচর্যার রুটিন টি নিয়মিতভাবে করে যেতে হবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী ফেসপ্যাকটি দেখে নিন-
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ত্বকের যেকোনো ধরনের দাগ দূর করে ত্বককে সজীব এবং মসৃণ করতে এই ফেসপ্যাকটি বানাতে আমাদের লাগবেঃ
- ১ থেকে দেড় চা চামচ এলোভেরা জেল
- দুই থেকে তিন ফোঁটা লেবুর রস
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল
সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিক্সড করে পরিষ্কার ত্বকে সমানভাবে এপ্লাই করতে হবে। এই ফেস প্যাকটি ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর নরমাল টেম্পারেচার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই প্যাকটি ত্বকে লাগাতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
তবে বাহ্যিকভাবে শুধু ত্বক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা না চালিয়ে আপনাকে পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে, ভিটামিন সি এবং ই যুক্ত খাবার আপনার প্রতিদিনে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে, পরিমাণ মতো ঘুম এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকলেই আপনি পাবেন উজ্জ্বল এবং গ্লোয়িং স্কিন।
পরিশেষে
আজকের আর্টিকেলে ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। ই ক্যাপ আমাদের ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারী উপাদানে সমৃদ্ধ একটি ক্যাপসুল। ই ক্যাপ এর ব্যবহারের অপকারিতা কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকলেও এর উপকারী দিকই অনেক বেশি। তাই নিশ্চিন্তে আপনি আপনার ত্বকের যত্ন নিতে, চুলের যত্নে ই ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
নিয়মিত ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের সাথে সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দিন দিন ত্বক সচেতন মানুষের কাছে ই ক্যাপের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বর্তমানে ত্বক এবং চুলের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য চিকিৎসকগণ ই ক্যাপ খাওয়া এবং ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটিই ছিল ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতার সাথে সংযুক্ত আরও কিছু তথ্য।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url