তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে নিন

তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আমাদের দেশের একটি পরিচিত ফল তেতুল। টক মিষ্টি সাদের তেতুলের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। সাথে জানবো গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ।

ইমেজ

 পোস্ট সূচীপত্রঃতেতুল গাছ আমাদের দেশে এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে দেখতে পাওয়া যায় না। যারা টক খেতে ভালোবাসে তাদের প্রিয় ফল তেতুল। টকের সাথে যদি একটু মিষ্টি স্বাদের অনুভূতি দেয় তাহলে তো কথাই নেই। কিছুটা লম্বা জাতের এই ফল খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকার, আবার কোন কোন ব্যক্তির জন্য তেতুল অপকারিতাও হতে পারে।

তেতুলে কোন কোন ভিটামিন রয়েছে

অনেকে আছেন যারা তেঁতুল খেতে অনেক ভালবাসেন। বিভিন্নভাবে তারা তেতুল এর স্বাদ নিতে পছন্দ করেন। যেমনঃ রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য তেঁতুল, তেঁতুলের আচার, তেতুলের ভর্তা সহ বিভিন্নভাবে খেতে পছন্দ করেন। তাদের জন্য এটা খুব সুখবরই বটে, কারণ তেতুলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল এবং পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে।

এই ধরনের ভিটামিন তেতুলে প্রচুর পরিমাণে থাকায়, স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে। যারা তেতুল খেতে পছন্দ করেন না বা তেতুল খাওয়ার অতটা অভ্যাস নেই, তেতুলের ভিটামিন সম্পর্কে জানতে পারলে আজ থেকে আপনারাও তেঁতুল খাওয়া শুরু করবেন নিশ্চিত।

আরো পড়ুনঃ খালি পেটে যেসব খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমবে

তেতুলে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর ভরপুর ভান্ডার, রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্, বিভিন্ন খনিজ, পটাশিয়াম ইত্যাদি।তাহলে নিচে তেতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নিন

তেঁতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতার জন্যই, যুগ যুগ ধরে তেতুল ফল এবং তেতুল গাছের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তেতুলে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ প্রচুর পরিমাণে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাওয়ার সাথে সাথে সুসাস্থ রখখায় দারুন  কারযকরি। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তেতুল

তেতুল খাওয়ার উপকারিতা মধ্যে প্রথমে যে কথাটি না বললেই নয়, তা হলো তেতুল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তেতুলে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। জ্বর, সর্দি,  এবং সর্দি জনিত কফ ভালো করতে তেতুলের জুড়ি মেলা ভার।

তাই আপনি যদি সর্দি জনিত কফ ভালো করতে চান তাহলে নিয়মিত তেতুলের রস খেতে পারেন।

হজমে সহায়তা করে তেতুল

তেতুল প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ একটি ফল। তাই নিয়মিত তেতুল খেলে হজমজনিত যে কোন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। তেতুল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়। এছাড়া তেতুল পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে। তাই আপনি যদি হজম জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত তেতুল খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ওজন কমাতে সহায়তা করে তেতুল

যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত তেতুল খাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন সহজে। তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, ফলে তেঁতুল খেলে অনেকক্ষণ ধরে পেট ভরার অনুভূতি দেয়। যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।

ইমেজ

এছাড়া তেতুলে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা খিদে কমিয়ে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা থেকে দূরে রাখে। যার ফলে ওজন কমাতে সহজ হয়।

হার্টের সুস্থতায় তেতুলের ভূমিকা

তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টরেলের মাত্রা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে থাকে। ফলে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং হার্ট সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়।

আরো পড়ুনঃ  কিসমিস ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা

রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে হতে পারে এবং এজন্য হার্ট অ্যাটাকের ঝুকিও অনেকাংশে কমে আসে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে তেতুল

তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি ব্যাহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া তেতুলে থাকা মিথেনলিক এক্সট্রাক্ট ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। তাই নিয়মিত তেতুল খাওয়ার অভ্যাস করার মাধ্যমে ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধি রোগ থেকে দূরে থাকুন।

লিভারে সুস্থতায় তেতুল খাওয়ার উপকারিতা

লিভারকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম রাখতে নিয়মিত তেতুল খাওয়ার অভ্যাস করুন। তেতুলে রয়েছে ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম নামক উপাদান, যা লিভারকে ফ্রী রেডিক্যালের আক্রমণ হতে রক্ষা করতে সহায়তা করে। ফলে লিভার থাকে সুস্থ এবং চর্বি হীন। যা একজন মানুষের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ লিভার সুস্থ থাকা মানে আপনার শরীরও সুস্থ থাকা।

অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে তেতুল

তেতুলে রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে। এছাড়া তেতুলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই নিয়মিত তেতুল খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ডায়াবেটিস রোগীদের তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

ডায়াবেটিস রোগীরা তেঁতুল খাওয়ার মাধ্যমে সহজে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তেতুল রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে থাকে। তাই যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, এবং ঘরোয়া চিকিৎসায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা নিয়মিত তেতুল খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।

চোখের জন্য তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

চোখের জন্য তেতুল দারুন একটি উপকারী ফল। চোখের সমস্যায় ব্যবহৃত চোখের ড্রপ তৈরিতে তেতুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া চোখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বহু আগে থেকেই মানুষ তেতুলের ব্যবহার করে আসছে।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে তেঁতুলের উপকারিতা

তেতুলের ফলের সাথে সাথে তেতুল গাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি উপাদান হিসেবে অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে বিভিন্ন অঞ্চলে তেতুল গাছ ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় দারুন সুফল এনেছে। তেতুলে থাকা এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ত্বকের যত্নে তেতুলের উপকারিতা

তেতুল খেলে শুধু বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা মিলে না, তেতুল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। তেতুলের পাল্প দিয়ে তৈরি ফেস মাস্ক আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  এই মাস্ক ত্বকের মৃত কোষগুলোকে দূর করে ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের দাগ ছোপ দূর করতেও সহায়তা করে তেতুলের এই মাসক।

তেতুলে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া ত্বকের অকাল বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে তেতুল। তেতুলে রয়েছে পেকটিন নামক উপাদান যা ত্বকের ভেতর থেকে আদ্রতা বজায় রাখতে করে। যা সুস্থ এবং মসৃণ ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চুলের যত্নে তেতুলের উপকারিতা

ত্বকের যত্নের সাথে সাথে চুলের যত্নেও তেতুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিয়মিত তেতুল, তেতুলের রস মাথার ত্বকে লাগালে ফলিকলের উন্নতি ঘটে, ফলে চুলের গোড়া মজবুত এবং শক্ত হতে সহায়তা করে। এছাড়া তেতুলে থাকা ভিটামিন সি চুলের উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা বৃদ্ধিতে সহায়তে করে থাকে।

তেতুলার খাওয়ার অপকারিতা আছে কি

তেতুলে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল এবং খনিজ আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু তেতুল কি সবসময়ই আমাদের জন্য উপকার নিয়ে আসে, কিছু কিছু ব্যক্তির জন্য তেতুল খাওয়ার অপকারি দিক রয়েছে।

  • যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধ এবং ইনসুলিন গ্রহণ করছেন তাদের তেতুল খেলে অনেক সময় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ একদম কমে যেতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত তেতুল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • অনেক সময় বেশি তেতুল খেলে রক্তচাপ একদম কমে যেতে পারে, ফলে দুর্বল লাগা সহ মাথা ঘোরা এবং মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। এজন্য অবশ্যই অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • তেতুলে যাদের অ্যালার্জি প্রবণতা রয়েছে, তেঁতুল খাওয়ার ফলে তাদের অ্যালার্জি বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য অনেক সময় চুলকানি হতে পারে,র‍্যাশ হতে পারে, ফুলে যেতে পারে ইত্যাদি। তাই আপনি এলার্জি সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই তেঁতুল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হবেন।
  • ওজন কমানোর জার্নিতে বেশি তেঁতুল খেলে অনেক সময় ওজন দ্রুত কমে গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাধা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে অনেক সময় শরীরে ভেতরে রক্তপাত বৃদ্ধি করতে পারে।
  • অনেক সময় তেতুল খাওয়ার ফলে দাঁত নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও দেখা যায়।

তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর


প্রশ্নঃ সকালবেলা তেতুল খেলে কি হয়?

উত্তরঃ তেতুল রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন রক্তচাপ কমাতে তাদের জন্য তেতুল অত্যন্ত উপকারী। তাই সকালে তেতুল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।

প্রশ্নঃ তেতুল খেলে কি পেট খারাপ হতে পারে?

উত্তরঃ যেহেতু তেতুলে ফাইবারে পরিমাণ অত্যন্ত বেশি, তাই অনেক সময় তেতুল অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রশ্নঃ তেঁতুল খেলে কি মোটা হয়?

উত্তরঃ তেঁতুলে রয়েছে ফাইবার এবং ফ্যাট ফ্রি উপাদান যা ওজন কমাতে সহায়তা করে থাকে। তাই তেতুল খেলে মোটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতটুকু তেতুল খাওয়া উচিত?

উত্তরঃ তেতুল যেহেতু শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, তাই অতিরিক্ত তেতুল না খেয়ে প্রতিদিন একজন ব্যক্তির জন্য ১০ গ্রাম তেতুল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কাঁচা তেঁতুল খাওয়া কি ভালো

তেতুলে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ প্রচুর পরিমাণে থাকায় এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এখন আমাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, পাকা তেতুল খাওয়া ভালো না কাঁচা তেঁতুল খাওয়া ভালো। কেউ কেউ আছেন যারা পাকা তেতুল খেতে পছন্দ করেন, আবার অনেকে তেতুল কাঁচা অবস্থায় খেতে বেশি পছন্দ করেন।

আপনি যে তেতুলি খান না কেন, শুধু আপনার স্বাদের অনুভূতির পরিবর্তন ছাড়া ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদানের কোন পরিবর্তন হবে না। সব ধরনের ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান আপনি দুই ধরনের তেতুল থেকে পেতে পারেন। তাই যে কোন ভাবে আপনি তেঁতুল খেয়ে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো নিশ্চিত করতে পারেন। 

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

তেতুলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল এবং খনিজ ভরপুর পরিমাণে। এছাড়া তেতুলে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, পটাশিয়া্ম, সোডিয়াম, ফাইবার সহ আরো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যা একজন গর্ভবতী  মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। তবে গর্ভাবস্থায় এই ফলটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ মত গ্রহণ করতে হবে।
ইমেজ
  • গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • তেতুলে রয়েছে এন্টিবায়ক মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা গর্ভ অবস্থায় পা ফুলে যাওয়া, গোড়ালি ব্যথা হওয়া ইত্যাদি দূর করতে সহায়তা করে।
  • তেতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, তাই তেতুল হজমে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে থাকে।
  • তেতুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গর্ভাবস্থায় ক্যান্সার হুমকি রোধে সহায়তা করে।
  • সকাল বেলার বমি ভাব কমাতে এক টুকরো তেঁতুল খেয়ে নিতে পারেন
  • গর্ভাবস্থায় অনেক সময় খাওয়ার রুচি চলে যায়, এই সময় তেতুল খেলে খাওয়ার রুচি বৃদ্ধি পায়

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার অপকারিতা


গর্ভাবস্থায় তেতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা থাকলেও, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া অতিরিক্ত তেতুল খেলে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত তেঁতুল খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। 
  • গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে অনেক সময় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে। যেসব মায়ের আগে থেকেই ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা রয়েছে তারা অবশ্যই তেঁতুল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কবে যেতে পারে, যার ফলে মাথা ঘুরানো সহ মাথা ঝিমঝিম এবং অনেক সময় জ্ঞান হারানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে অনেক সময় শরীরে পানি পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গর্ভস্থ শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় তেঁতুল গ্রহণের সময় তেতুল এবং কিছু বিশেষ ধরনের ওষুধ কোনভাবেই এক করা যাবে না।
মোটকথা গর্ভাবস্থায় তেতুল খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই চিকিৎসকের সঠিক দিক নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। দিনে কতটুকু তেতুল খাওয়া যাবে কিভাবে খাওয়া যাবে কখন খেলে ভালো হবে সে ব্যাপারে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলার চেষ্টা করতে হবে। যেহেতু গর্ভাবস্থা একজন মায়ের জন্য খুব সেনসিটিভ একটি সময়, তাই যেকোনো খাবার গ্রহণের ব্যাপারে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে।

পরিশেষে

তেতুল খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তেঁতুলে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারী দিক দেখা গেলেও নিয়ম মেনে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ তেতুল খাওয়া যেতে পারে।

এছাড়া গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা থাকলেও , কিছু কিছু ব্যাপারে অবশ্যই যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তেতুল আমাদের দেশের পরিচিত একটি ফল যা সবাই খেতে পছন্দ করে, সাথে বিভিন্ন ভিটামিন আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগানের কাজ করে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url