গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয় - লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা
passiondrivefiona
৮ জুল, ২০২৪
গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয়, লেবু পানি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যাবে তা নিয়ে অনেকেই বিস্তারিত জানতে চান। এছাড়া দৈনিক কতটুকু লেবু খাওয়া উচিত, অতিরিক্ত লেবু খেলে কি হয় এই ধরনের অনেক প্রশ্ন মনে আসে। আজকের পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আশা করি সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃলেবু একটি টক জাতীয় ফল। সাইট্রাস এই ফলটি গর্ভাবস্থায় অনেক নারী দৈনিক খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবে রাখতে পছন্দ করেন। গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে মুখের রুচি ফিরিয়ে দেয়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্যের জন্য মিলে অনেক উপকার। কিন্তু লেবু খাওয়ার পরিমাণ হতে হবে পরিমিত।
লেবুতে কি কি ভিটামিন রয়েছে
লেবু বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি সাইট্রাস ফল। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লেবু খেলে ভিটামিন সি এর চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়। কারণ লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। গর্ভাবস্থায় যে সকল ভিটামিন শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, ভিটামিন সি তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া অনেক গর্ভবতী মহিলা মুখের রুচি বৃদ্ধির জন্যও এই সময় লেবু খেতে পছন্দ করেন।
লেবুতে ভিটামিন সি ছাড়াও আরো অন্যান্য অনেক উপকারী ভিটামিন রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। যেমনঃ
ক্যালসিয়াম
ম্যাগনেসিয়াম
ভিটামিন বি৬
রিবোফ্লাবিন
নিয়াসিন
ফোলেট
এই সকল ভিটামিন এবং খনিজ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার শারীরিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া গর্ভস্থ শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্যও এই সকল ভিটামিন এবং মিনারেলসের প্রয়োজন রয়েছে।
গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে যে সকল উপকার পাওয়া যায়
গর্ভাবস্থায় আপনি যখন নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে লেবু বা লেবুর রস পান করবেন, আপনি আপনার শরীরে কিছু অভূতপূর্ব উপকার লক্ষ করতে পারবেন। একটি মাঝারি সাইজের লেবুতে দুই গ্রামের বেশি ভিটামিন সি রয়েছে, যা একজন গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিনের ভিটামিন সি চাহিদার জন্য অপরিহার্য। মূলতঃ লেবুতে থাকা এই ভিটামিন সি এর পর্যাপ্ততা এবং অন্যান্য ভিটামিন, মিনারেলসের উপস্থিতির কারণেই এই উপকারগুলো আপনি পাবেন।
গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে যে সকল প্রকার পাওয়া যায় তা এক নজর দেখে নিন-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লেবু খেলে গর্ভবতী নারীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান, আর লেবুতে ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লেবু খাওয়ার ফলে সর্দি, সর্দি জনিত জ্বর, গলার কফ ইত্যাদি থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
মুখের রুচি বৃদ্ধিতে লেবু
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে অনেক মহিলার মুখে রুচি নষ্ট হয়ে যেতে দেখা যায়। কোন কিছু খেলেই তাদের মুখে যেন স্বাদ পায় না। এই অবস্থায় এক গ্লাস পানিতে দুই টুকরো লেবুর রস সাথে অল্প একটু মধু মিশিয়ে খেলে মুখে রুচি ফিরে আসবে। এছাড়া এই সময় অনেকে রুটিনের খাদ্যের অংশ হিসেবে লেবু খাওয়া পছন্দ করেন।
অনেকে আবার খাবার আগে শুধু লেবু চিপে খেতে ভালোবাসেন, এতে পরবর্তী খাবারের জন্য মুখের রুচি বৃদ্ধি পায়।
বমি ভাব নিয়ন্ত্রণে লেবু
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বেশিরভাগ মহিলা আরেকটি যে সাধারণ সমস্যায় ভুগেন, তা হল বমি বমি ভাব এবং বমি করা। এই সময় নিয়মিত লেবু খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব অনেকটাই কাটানো সম্ভব। অনেকে আবার লেবু খাওয়ার সাথে সাথে লেবুর ঘ্রাণ নিতেও এই সময় পছন্দ করেন। এতে অনেকটাই বমি বমি ভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
আয়রন শোষণে লেবুর ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে যে ভিটামিনের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় তা হল লৌহ বা আয়রন। আয়রনের ঘাটতি জনিত কারণে গর্ভাবস্থায় অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার মত ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই এই সময় নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াটা জরুরী।
আবার শুধু আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেলেই হবে না, এই খাবার থেকে প্রয়োজনীয় আয়রন শোষণের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা আয়রন শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে লেবু
লেবু শুধু গর্ভবতী মহিলার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর ভালো প্রভাব ফেলে তাই নয়, গর্ভস্থ শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্যও ভিটামিন সি এর গুরুত্ব রয়েছে। নিয়মিত লেবু খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি এর চাহিদা অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব, এর ফলে গর্ভস্থ শিশুর সঠিক ওজন বজায় থাকে এবং সেই সাথে উচ্চতা বৃদ্ধির হারও সঠিক থাকে।
হাড়কে মজবুত করতে লেবু
লেবুতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এর মত গুরুত্বপূর্ণ কিছু খনিজ, যা গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার হাড়ের সুরক্ষা প্রদানের সাথে সাথে গর্ভস্থ শিশুর হাড়ের সঠিক গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে লেবুর ভূমিকা
গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হল ফোলেট। একটি মাঝারি সাইজের লেবুতে যে পরিমাণ ফলেট রয়েছে তা গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক সহ স্নায়ুবিক এর পরিপূর্ণ গঠনের জন্য অপরিহার্য। এছাড়া গর্ভবতী মহিলার সার্বিক সুস্থতার জন্যও এই পরিমাণ পুষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়া কতটুকু নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়া কতটুকু নিরাপদ তা অনেকেই জানতে চান। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা হতে হবে যথাযথ পরিমাণে, এই সময় কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো ফল বয়ে আনবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। লেবু পানিতে মুখে রুচি বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেক স্বাস্থ্য উপকার মিললেও, এই সময় তা পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে সারা দিনে কয়েক বার অল্প অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস করাটা ভালো হবে। না হলে বমি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এছাড়া বেশি পরিমাণ লেবু পানি খাওয়ার ফলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে জলীয় উপাদানের পরিমাণ বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এছাড়া লেবু পানি খাওয়ার সময় স্বাদ বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেকেই বাজার থেকে প্রক্রিয়াজাত লেবু পানি কিনে খেতে পছন্দ করেন, এটাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার জন্য সবসময় তাজা লেবুর রস দিয়ে লেবু পানি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। অনেকে আবার লেবু পানি ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে খেতে পছন্দ করেন। এতে ঠান্ডা জ্বর ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হতে পারে। এজন্য সব সময় ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া আপনি চাইলে কুসুম গরম পানিতেও লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়া গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার পরিমাণ কতটুকু হলে নিরাপদ হবে এ ব্যাপারে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
লেবু পানি খাওয়ার ফলে যে সকল উপকারিতা মিলবে
গর্ভাবস্থায় অনেকেই লেবুর রস দিয়ে তৈরি লেবু পানি খেতে পছন্দ করেন। লেবু পানি গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থার পুরোটা সময় সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া গর্ভস্থ শিশুর জন্যও রয়েছে অনেক উপকার।
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার ফলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় তা এক নজর দেখে নিন-
সকালের অসুস্থতা দূর করবে লেবু পানি
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে প্রতিটি নতুন মায়ের একটি সাধারণ সমস্যা হল সকালে ঘুম থেকে উঠেই বমি বমি ভাব, অনেকে আবার মাথা ঘোরা সহ নানা ধরনের সমস্যায় ভুগেন। সকালের এই অসুস্থতা থেকে মুক্তি দিতে পারে লেবু পানি। আপনার যদি লেবু পানি খাওয়ায় কোন সমস্যা না থাকে, তাহলে সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস খেলে আরাম পাবেন।
এছাড়া এই লেবু পানি আপনাকে সারাদিন সতেজ রাখতে সহায়তা করবে, সাথে ক্লান্তি ভাব দূর করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে লেবু পানি
লেবু হল ভিটামিন সি এর ভরপুর ভান্ডার। প্রতিদিন সকালে আপনি যদি লেবু পানি খেতে পারেন তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাই এই সময় সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর, গলা ব্যথা ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সুদৃঢ় হবে।
মুখের রুচি বৃদ্ধি করবে লেবু পানি
গর্ভাবস্থায় অনেকেই খাওয়ার রুচির দুর্ভিক্ষে ভোগেন। কোন কিছু খেতেই যেন তাদের মুখে রুচি আসে না। আর শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার না খাওয়ার ফলে এই সময় বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়।তাদের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে লেবু পানি।
লেবু পানি রুচি বর্ধক বা স্বাদ বৃদ্ধিকারী হিসেবে দারুণ একটি পানীয়। চাইলে লেবু পানির সাথে অল্প একটু মধু মিশে খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিবে লেবু পানি
গর্ভাবস্থায় যারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যায় ভুগেন তাদের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে প্রতিদিন সকালে লেবু পানি। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে লেবু পানি খেলে হজম প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়।
এছাড়া হজম জনিত যে কোন সমস্যা দূর করতেও লেবু পানি খেতে পারেন।
লিভারের সুস্থতায় লেবু পানি
লেবু পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভরপুর ভান্ডার। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে লিভার থাকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে লেবু পানি
গর্ভাবস্থায় অনেকেরই উচ্চরক্তচাপ এর মত সমস্যায় ভোগেন। এই সময় নিয়মিত লেবু পানি পান করলে রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এছাড়া নিয়মিত লেবু পানি পান করার ফলে শরীরের ভেতরে রক্ত ক্ষরণ রোধেও কাজ করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবে লেবু পানি
গর্ভাবস্থার সময় স্বভাবতই একজন গর্ভবতী মহিলা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে এই সময় বাড়তি খাবার প্রয়োজন রয়েছে। এর ফলে অনেকেরই এই সময় রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমান বৃদ্ধির সমস্যা দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত সকালে লেবু পানি পান করতে পারেন। লেবু পানি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিডনির সুরক্ষায় লেবু পানি
লেবু পানিতে মুত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য থাকায় কিডনির সুস্থতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত লেবু পানি পান করলে কিডনি সুস্থভাবে কার্যাবলী সম্পন্ন করতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থার সময় অনেকেরই জননাঙ্গে জ্বালাপোড়া এবং সংক্রমণ হতে দেখা যায়। এ সমস্যা থেকেও মুক্তি দিবে লেবু পানি।
গর্ভাবস্থায় শরীরের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা করে লেবু পানি
গর্ভাবস্থার সময় শরীরের পিএইচ ব্যালেন্স রক্ষা করাটা অতি জরুরী। নিয়মিত লেবু পানি পান করার ফলে শরীরের পিএইচ মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। শরীরের প্রতিটি কোষে প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন থাকা এবং শরীরের শরীর সুস্থতার জন্য রক্তে পিএইচ এর মাত্রা বজায় থাকা জরুরী। আর এই কাজটি করবে লেবু পানি।
বলা হয়ে থাকে, গর্ভাবস্থায় নিয়মিত লেবু পানি পান করলে এই সময়ের একটি যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা পা ফুলে যাওয়ার হাত থেকে সহসায় রক্ষা পাওয়া যায়। সবার ক্ষেত্রে এই সমস্যা হবে এটি নাও হতে পারে, তবে যাদের পা ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত লেবু পানি খেলে উপকার পাবেন।
প্রসবকালীন যন্ত্রণা কমাবে লেবু পানি
প্রসবের সময় একজন নতুন মায়ের সত্যিই অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। প্রসবকালীন এই যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমাবে নিয়মিত লেবু পানি পান করলে। বলা হয়ে থাকে, নিয়মিত লেবু পানির সাথে মধু মিশিয়ে পান করলে প্রসবকালীন যন্ত্রণা অনেকটাই কমে যায়।
লেবু পানি কিভাবে পান করবেন
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি পান করার জন্য আপনাকে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভাবস্থায় এমন একটি সময় যখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত সাবধানতা আপনার জন্য সুফল বয়ে আনবে। লেবু পানি খাওয়ার ক্ষেত্রেও আপনাকে কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমনঃ
লেবু পানি উপকারী হলেও আপনাকে গর্ভাবস্থায় অবশ্যই অল্প পরিমাণ দিয়ে শুরু করতে হবে।
ধীরে ধীরে আপনি লেবু পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াবেন।
কোনভাবেই এক বৈঠকে অতিরিক্ত লেবু পানি পান করা যাবে না।
লেবু পানি খাওয়ার ফলে যদি আপনার এসিডিটির মত সমস্যা হয় তাহলে তা এড়িয়ে চলাই ভালো হবে অথবা দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ফ্রিজে রাখা লেবু পানি বা ঠান্ডা লেবু পানি কোনভাবেই পান করা যাবে না।
লেবু পানি অবশ্যই টাটকা লেবুর রস দিয়ে তৈরি করতে হবে।
লেবু পানি সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে পান করলে দ্বিগুণ উপকার পাবেন।
লেবু পানি আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। এতে আপনার স্বাদ এর পরিবর্তন হবে এবং আপনি খেয়ে ভালো অনুভব করবেন।
কুসুম গরম পানিতে দুইটি লেবুর টুকরোর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস এবং সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে স্বাদের পরিবর্তন হবে।
লেবু পানির সাথে সামান্য আদা মিশিয়ে খেতে পারেন, যদি না আপনার কোন সমস্যা হয়।
লেবু পানির সাথে দারুচিনি লবঙ্গ মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেবু পানি খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার অনেক উপকার মিললেও, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এবং লেবু পানি খাওয়ার ফলে কোনরকম সমস্যা হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাটা জরুরী।
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার ফলে যে সকল সমস্যা হতে পারে তা এক নজর দেখে নিন-
গর্ভাবস্থায় লেবু পানি খাওয়ার ফলে আপনার যদি এসিডিটি বা বুক জলার মত সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় আপনি যদি লেবু না খেতে পারেন তাহলে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো হবে।
গর্ভাবস্থায় অনেকেরই ঘ্রাণের সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি লেবুর ঘ্রাণ সহ্য করতে না পারেন তাহলে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
এই সময় কোনভাবেই অতিরিক্ত লেবু পানি খাওয়া যাবে না। লেবু পানি খাওয়ার সঠিক পরিমাণ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শমতো গ্রহণ করতে হবে।
কোনভাবেই ফ্রিজে ঠান্ডা লেবু পানি পান করা যাবে না। এতে জ্বর ঠান্ডা কাশি জনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে।
লেবু পানি খাওয়ার সময় অতিরিক্ত চিনি দেওয়ার বদলে, সামান্য মধুর মিশে খাওয়ার চেষ্টা করাটা ভালো সিদ্ধান্ত হবে।
লেবু পানি খাওয়ার পর অবশ্যই ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে, না হলে দাঁতের এনামেল এর ক্ষতি হতে পারে।
পরিশেষে
গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয় সাথে লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এই পোস্টে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শরীরের সুস্থতার জন্য এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য নিয়মিত লেবু বা লেবু পানি খেতে পারেন। কারণ লেবু ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানের সমৃদ্ধ।
গর্ভাবস্থায় লেবু এবং লেবু পানি খাওয়ার ব্যাপারে কিছু কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এবং পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করার ফলে উপকার পেতে পারেন। তাই গর্ভাবস্থায় লেবুকে আপনার প্রতিদিনের ডায়েটের অংশ করে নিন।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url