সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম গুলো জেনে নিন

 
সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম গুলো জানতে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। সুস্বাস্থ্য রক্ষায় উচ্চ আঁশ যুক্ত খাবার আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। এজন্য জানতে হবে কোন খাবার গুলিতে আঁশের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সাথে জানবেন বেশি আঁশযুক্ত খাবার কেন খাবেন সে সম্পর্কে।
সবচেয়ে-বেশি-আঁশযুক্ত-খাবারের-নাম

আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে সকল খাবার রাখি প্রায় সব খাবারের মধ্যেই আঁশ বা ফাইবার রয়েছে। তবে কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবারে আঁশের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এই ধরনের খাবার আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার সাথে সাথে শরীরের জন্য আরো বিভিন্ন উপকার বয়ে নিয়ে আসে। পোস্ট সূচীপত্রঃ

সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম

আর্টিকেলের প্রথমেই জানতে পারবেন, সবচেয়ে বেশি আশ যুক্ত খাবারের নামের তালিকা সহ বিস্তারিত তথ্য। অনেক ধরনের খাবার রয়েছে যে খাবারগুলোতে অন্যান্য খাবারের চেয়ে আঁশের পরিমাণ অনেক বেশি। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই আঁশযুক্ত খাবার রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই খাবার গুলো ওজন কমাতে ও হজমের শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

তাই অনেকেই খুঁজে থাকেন সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার কোনগুলো। এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে কোন কোন খাবারে আঁশের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, তাই আঁশযুক্ত খাবার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। 

তাহলে দেরি না করে সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার কোনগুলো জেনে নিন-

আঁশযুক্ত সবুজ শাক - সবজি

আমরা প্রতিদিন কোন না কোন সবজি আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখি। শরীরের সুস্থতা এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি হতে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ধরনের তাজা এবং টাটকা সবজির গুরুত্ব অনেক। এই সবজিগুলোর মধ্যে আবার কিছু সবজি রয়েছে যেগুলোতে আঁশের পরিমাণ অনেক বেশি। যেমনঃ

  • শিম
  • মটরশুঁটি
  • ব্রোকলি
  • গাজর
  • বরবটি
  • বাঁধাকপি
  • ঢেঁড়স
  • মূলা
  • বেগুন
  • সজনে
  • মিষ্টি আলু
  • ডাটা
  • কলার মোচা
  • কাঁচা মরিচ
সবজির পাশাপাশি সব ধরনের সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে, যা আমাদের শরীরের সুস্থতায় বিভিন্নভাবে উপকারিতা রয়েছে। যেমনঃ
  • পালং শাক
  • কলমি শাক
  • পুইশাক
  • লেটুস
  • লাল শাক
  • সবুজ শাক
  • সজনে পাতা
  • কচু শাক
  • লাউ শাক
  • মিষ্টি কুমড়ার শাক
সবচেয়ে-বেশি-আঁশযুক্ত-খাবারের-নাম

কিছু সবজি উচ্চ ফাইবার যুক্ত হলেও কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এই সবজিগুলোকে পরিমিত পরিমানে খাবার নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে। যেমনঃ
  • কাঁচকলা
  • মাটির নিচের আলু
  • কাসাভা
আঁশযুক্ত ফলের তালিকা

চিকিৎসা শাস্ত্রের মতে, প্রতিদিন যে কোনো একটি ফল গ্রহণ আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার এর মধ্যে এমন কিছু ফল রয়েছে যেসব ফলে আঁশের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি।

 আঁশযুক্ত ফলের মধ্যে রয়েছে-
  • কাঁঠাল
  • কলা
  • পেয়ারা
  • কামরাঙ্গা
  • আমড়া
  • শুকনো ডুমুর
  • খেজুর
  • স্ট্রবেরি
  • ব্ল্যাকবেরি, রাস্পবেরি
  • আপেল
  • অ্যাভোকাডো
  • নাশপাতি
  • বেল
  • কদবেল
  • নারিকেল
  • আতা ফল
  • জাম
  • গাব

উচ্চ আঁশযুক্ত খাদ্য শস্য

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত শাক সবজি এবং ফল রাখার পাশাপাশি উচ্চ আঁশযুক্ত খাদ্যশস্য আমাদের পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় এবং ওজন কমানো সহ ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ থেকে দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 উচ্চ আঁশযুক্ত খাদ্যশস্যার মধ্যে রয়েছে-

ফাইবার সমৃদ্ধ ডাল এবং বীজ

বিভিন্ন ধরনের ডাল রয়েছে যেগুলোতে আঁশের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। এছাড়া বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার থেকেও আমরা উচ্চ  আঁশ পেতে পারি।

এই ধরনের ডাল এবং বীজের মধ্যে রয়েছে-
  • মসুর ডাল
  • মুগ ডাল
  • খেসারি ডাল
  • বুটের ডাল
  • ছোলা
  • সিমের বীজ
  • কুমড়োর বীজ
  • কিডনি বিন
  • তিল, তিসি
  • সরিষার বীজ

আঁশযুক্ত মাছ গুলো কি কি

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশি আঁশযুক্ত শাকসবজি, ফলমূল এবং খাদ্যশস্য রাখার সাথে সাথে আঁশযুক্ত মাছ রাখাও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমাদের বাঙালির প্রতিদিনের পাতে মাছ থাকবে না এমনটা হয় না, কিন্তু কিছু কিছু মাছে  আঁশের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি থাকে। এই ধরনের উচ্চ আঁশযুক্ত মাছ প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন রাখা উচিত।

তাহলে নিচে সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত মাছের নাম গুলো দেখে নিনঃ

  • শিং মাছ
  • মাগুর মাছ
  • বাইম মাছ
  • গুচি মাছ
  • ইলিশ মাছ
  • পুঁটি, টেংরা
  • টুনা মাছ
  • রূপচাঁদা মাছ

বিভিন্ন ধরনের বাদাম

বিভিন্ন ধরনের বাদামে ফাইবারে পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। তাই প্রতিদিন উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে বাদাম খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, বাদামে যেহেতু ফ্যাটের পরিমাণ বেশি তাই দিনে এক মুঠো পরিমাণ বাদাম গ্রহণ করা ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের বাদামের মধ্যে রয়েছে-
  • আখরোট
  • কাঠবাদাম
  • পেস্তা বাদাম
  • চিনেবাদাম
  • কাজুবাদাম

আঁশযুক্ত খাবার কি

সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম সম্পর্কে জানার পর, এখন আপনাদের জানাবো আঁশযুক্ত খাবার কি সে সম্পর্কে। অর্থাৎ আঁশযুক্ত খাবার বলতে আসলে আমরা কি বুঝি। আঁশ, যার ইংরেজি হলো ফাইবার, মূলতঃ হজমে সাহায্য করার জন্য এই পুষ্টি উপাদান বেশি পরিচিত। এই পুষ্টি উপাদান শরীরে তেমনভাবে হজম হতে পারে না। মল দিয়ে বেশিরভাগটা বেড়িয়ে আসে।

বলা হয়ে থাকে, এটি উদ্ভিদ কোষের ভোজ্য অংশ। আমাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় এবং খাবার গুলো সুষ্ঠুভাবে পরিপাক করার জন্য আঁশযুক্ত খাবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণত আঁশ দুই ধরনের থাকে, দ্রবণীয় আঁশ এবং অদ্রবনীয় আঁশ

দ্রবণীয় আঁশ

সাধারণত দ্রবণীয় আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়ার পর পানির সাথে মিশে এক ধরনের জেলে পরিণত হয়। এই জেল খাবার হজম প্রক্রিয়াকে ধীরগতিতে করে এবং এর ফলে আমরা অনেকক্ষণ পেট ভরার অনুভূতি পাই।

এজন্যই ওজন কমাতে আঁশযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখার কথা বলা হয়ে থাকে। দ্রবণীয় আঁশ যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে-সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য, ফলমূল, ডাল এবং বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার।

অদ্রবনীয় আঁশ

এই ধরনের আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পর তা পানির সাথে মিশে যায় না। এজন্য খাবারগুলো পরিপাকতন্ত্রে হজমের সময় এই আঁশ অদ্রবণীয় অবস্থায় থাকে অর্থাৎ এই আঁশ পরিপাকতন্ত্রে হজম হতে পারে না।

এর ফলে পায়খানার পরিমান বৃদ্ধি করা সহ পায়খানা নরম করে দ্রুত বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। এ কারণে যারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগেন তাদের অদ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে।

অদ্রবনীয় আঁশ যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছেঃ

  • লাল চালের ভাত
  • লাল আটা রুটি
  • খোসা সহ সবজি
  • খোসা সহ ফল
  • বিভিন্ন ধরনের বাদাম

বেশি আঁশযুক্ত খাবার কেন খাবেন

সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম জানার সাথে সাথে আর্টিকেলের এই পয়েন্টে জানতে পারবেন, উচ্চ বেশি আঁশযুক্ত খাবার কেন খাওয়া প্রয়োজন? ওজন নিয়ন্ত্রণ সহ আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতা নিশ্চিত করতে আঁশযুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। আঁশ যুক্ত খাবার কেন খাওয়া প্রয়োজন তা নিচে জেনে নিন-

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে আঁশযুক্ত খাবার

যারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্যের মত কঠিন সমস্যায় ভুগেন, তাদের নিয়মিত উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সাধারণত আঁশযুক্ত খাবারের আশ অংশটুকু হজম হয় না, এই আঁশ জলীয় উপাদান ধরে রেখে মলকে নরম এবং মলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে নিয়মিত মলত্যাগ হওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিবে আঁশযুক্ত খাবার

নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পাইলস, এনাল ফিসা্র, পায়ুপথের আশেপাশে ফোড়া হওয়া প্রতিরোধসহ কোলন ক্যান্সার এবং ডাইভার টিকুনাইটিস রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়। এছাড়া হার্নিয়ার মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি দিবে আঁশযুক্ত খাবার

নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করবে। কারণ খাবারের ফাইবার গুলি কোলেস্টেরল শোষণে বাধা প্রদান করে এর ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। তাই যারা উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন তারা নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখলে উপকার পাবেন।

হার্টের সুস্থতায় আঁশযুক্ত খাবার

আঁশযুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণের ফলে হার্টের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আঁশযুক্ত খাবারের আঁশ অংশটুকু রক্ত প্রবাহের সময় রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে হার্ট এটাক সহ হার্টের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়া রক্তনালীর বিভিন্ন সমস্যা বা রোগর ঝুঁকি অনেক অংশে কমে যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আঁশযুক্ত খাবার

আমরা খাবার গ্রহণের পর শরীরে ভেতরে গিয়ে তা ভেঙে শর্করা বা গ্লুকোজ এ পরিণত হয়। আঁশযুক্ত খাবারের আশ যেহেতু হজম হয় না তাই এই খাবারগুলো হজম প্রক্রিয়া ধীরগতিতে হয় এবং এর ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। তাই যারা  ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় উচ্চ আঁশ যুক্ত খাবার রাখলে উপকার পাবেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে আঁশ যুক্ত খাবার

যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখলে বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সম্ভব হবে। কারণ আঁশযুক্ত খাবার সহজে হজম না হওয়ার ফলে আপনাকে অনেকক্ষণ পেট ভরার অনুভূতি দিবে, যা আপনাকে অতিরিক্ত খাবার ক্রেবিং থেকে রক্ষা করবে। যা আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।

লিভারের সুস্থতায় আঁশযুক্ত খাবার

বলা হয়ে থাকে আঁশযুক্ত খাবার লিভারের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনার লিভারকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম রাখতে নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়া পিত্তথলির পাথর হওয়া থেকে দূরে থাকতেও আঁশ জাতীয় খাবারের ভূমিকা অনেক।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আঁশযুক্ত খাবার

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে শরীরের সুস্থতার উপর। আমাদের শরীর যদি সবদিক দিয়ে সুস্থ এবং কর্মক্ষম থাকে তাহলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। এজন্যই বলা হয়, শরীর ফিট তো আপনি সব দিক দিয়েই সুখী একজন মানুষ।

দৈনিক কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন

উপরে আপনারা জেনেছেন সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম সাথে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ধরনের খাবার রাখার সুফল। তেমনি প্রতিদিন কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার শরীরের জন্য প্রয়োজন তাও ভালোভাবে জানতে হবে। কারণ আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়ার ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। 

তাহলে নিচে জেনে নিন দৈনিক কতটুকু আর যুক্ত খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন সে সম্পর্কেঃ

সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ ৩০ গ্রাম বলা হয়।

পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে দৈনিক আঁশযুক্ত খাবারের সঠিক পরিমাণ ১৫ গ্রাম। আবার ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য খাবারের দৈনিক পরিমাণ ২০ গ্রাম। ১১ বছর থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দৈনিক আঁশযুক্ত খাবারের সঠিক পরিমাণ হল ২৫ গ্রাম।
সবচেয়ে-বেশি-আঁশযুক্ত-খাবারের-নাম

তাই বয়স অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাবারের সঠিক পরিমাণ দৈনিক গ্রহণ করতে হবে, তবেই পরিপূর্ণভাবে উপকার পাওয়া যাবে। 

আঁশযুক্ত খাবার খাবেন যেভাবে

এখন জানতে পারবেন, বেশি আঁশযুক্ত খাবার যেভাবে প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারেন সে ব্যাপারে। সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল ডায়েটারি ফাইবারের পরিপূর্ণ ভান্ডার। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ রকমের বেশি আঁশযুক্ত সবজি এবং ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। আঁশযুক্ত কিছু কিছু সবজি দিয়ে আপনি সালাদ বা সুপ বানিয়ে খেতে পারেন।

যে সকল আঁশযুক্ত ফল খোসাসহ খাওয়া যায়, সে সকল ফল ভালোভাবে ধুয়ে খোসা সহ খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে ফাইবার পরিপূর্ণভাবে আপনার শরীর পাবে। এছাড়া এই সকল সবজি এবং ফলে ফাইবার সহ ভিটামিন এবং মিনারেলসে পরিপূর্ণ, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান।

আপনি চাইলে আঁশযুক্ত ফল বা সবজির জুস বানিয়ে খেতে পারেন, তবে জুস না ছেকে খেলে বেশী উপকার পাবেন।

একটি কথা না বললেই নয়, আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের পাশাপাশি দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার চেষ্টা করুন, তাহলেই আঁশযুক্ত খাবারের আশ আমাদের শরীরে সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে। কারণ খাবারের আঁশ পানি শোষণ বেশি করে থাকে।

এছাড়া আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন হঠাৎ করে বেশি পরিমাণ খাওয়া না হয়ে যায়। অর্থাৎ আঁশযুক্ত খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। এছাড়া আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। আজকে বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেলেন এবং কালকে একেবারেই খেলেন না, এমনটা যেন না হয়।

সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্নঃ উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার কোনগুলো?

উত্তরঃ উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে গোটা শস্য যেমনঃ লাল চাল, লাল আটা, ডাল জাতীয় খাবার যেমনঃ মসুর ডাল, বিভিন্ন ধরনের বীজ, বাদাম, সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল।

প্রশ্নঃ কোন সবজিতে ফাইবার সবচেয়ে বেশি?

উত্তরঃ সবজি গুলোর মধ্যে ব্রকলি, বাঁধাকপি, গাজর, বিটরুট ফাইবার সবচেয়ে বেশি নির্দেশ করে।

প্রশ্নঃ কোন ফলে সবচেয়ে বেশি ফাইবার রয়েছে?

উত্তরঃ ফলের মধ্যে বেরি জাতীয় ফল, নাশপাতি,এভোকাডো, কলা, আপেল উচ্চ ফাইবার যুক্ত ফল।

প্রশ্নঃ গাজরে কি ফাইবার বেশি?

উত্তরঃ হ্যাঁ, গাজর একটি উচ্চ ফাইবার যুক্ত সবজি। এক কাপ কাঁচা গাজর থেকে আপনি ৩.৬ গ্রাম ফাইবার পাবেন এবং রান্না করা এক কাপ গাজরে ৩ গ্রাম পরিমান ফাইবার পাবেন।

প্রশ্নঃ প্রতিদিন ফাইবার যুক্ত খাবার কতটুকু গ্রহণ করা উচিত?

উত্তরঃ প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ফাইবার গ্রহণের পরিমাণ ৩০ গ্রাম, ১১ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত ২৫ গ্রাম, ৫ থেকে১০ বছর বয়স পর্যন্ত ২০ গ্রাম এবং ২ থেকে ৫ বছর শিশুর জন্য ১৫ গ্রাম ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক, সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে জানতে পেরেছেন। সাথে জেনেছেন আঁশযুক্ত খাবার কেন খাবেন সম্পর্কেও। আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমাদের জানা প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি আঁশ রয়েছে কোন খাবারগুলোতে, যা আজকের পোস্টে জানতে পেরেছেন।

দৈনিক আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ ঠিক রেখে নিয়মিত ডায়েটে যোগ করলে স্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনবে এটা নিশ্চিত বলা যায়। তাই আজকের পোস্টে উল্লেখিত আঁশযুক্ত খাবার আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url