গলায় কাটা নামানোর ঘরোয়া ১২টি উপায় - গলায় কাটা নামানোর দোয়া
গলায় কাটা নামানোর উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন। কারণ এই আর্টিকেলে অসাবধানতাবশতঃ হঠাৎ বিঁধে যাওয়া গলার কাঁটা সহজে নামানোর ঘরোয়া ১২টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। এছাড়া গলায় কাটা নামানোর দোয়া সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃআমরা যারা মাছ-মাংস খেতে ভালবাসি তাদের জীবনে কোন না কোন সময় গলায় মাছের কাঁটা বিধেনি, এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। গলায় মাছের কাটা বিঁধে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে আজকের আর্টিকেলে বলা গলায় কাটা নামানোর ঘরোয়া সহজ ১২টি উপায় মেনে চলুন, সহজে গলার কাঁটা দূর হয়ে যাবে।
গলায় কাটা নামানোর উপায়
আর্টিকেলের শুরুতে, গলায় কাটা নামানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। গলায় কাটা বিঁধলে সহজ কিছু ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে এই কাটা সহজেই নামানো যায়। এই পদ্ধতি বা উপায় গুলো গলা থেকে কাটা নামানোর জন্য খুবই কার্যকর। হাতের কাছে থাকা এই সকল উপকরণ দিয়ে অনেকেই গলার কাটা সহজে নামাতে পেরেছেন।
তাই আপনি যদি গলা থেকে কাটা নামানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে নিচে উল্লেখিত ঘরোয়া ১২টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিন, এই উপায় গুলোর মাধ্যমে মুহূর্তে গলার কাঁটা নেমে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
তাহলে চলুন দেরি না করে গলায় কাঁটা নামানোর ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিন-
এক মুঠো ভাতে নেমে যাবে কাটা
গলায় কাটা নামানোর জন্য একটি সহজ এবং কার্যকরী উপায় হল এক মুঠো সাদা ভাতের দলা। এই উপায়টি এতই ফলপ্রসূ যে আমাদের দাদী নানীর সময় থেকেই চলে আসছে। এজন্য খুব বেশি কিছু করতে হবে না, সাদা এক মুঠো ভাত নিয়ে হাতের তালুতে দলা পাকিয়ে মুখে দিয়ে হালকা চিবিয়ে গিলে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ রাতে কি খেলে ওজন কমে - দ্রুত ওজন কমে কি খেলে
একটি ব্যাপার অবশ্যই ভালোভাবে খেয়াল রাখবেন, গলার যে সাইডে কাটা বিধেছে বলে মনে হয় সেই সাইড দিয়ে ভাতের দলাটি গেলার চেষ্টা করবেন। একবার প্রচেষ্টায় কাজ না হলে দুই তিনবার এভাবে চেষ্টা করুন। আশা করা যায় ২/৩ বারেই আপনার গলার কাঁটা নেমে যাবে।
কাটা নামাবে পাকা কলা
গলার কাটা দূর হবে পাকা কলায়। গলায় কাটা বিঁধলে নরম কিছু খাওয়ার মাধ্যমে তা সহজেই নামানো যায়। এই প্রসেসে পাকা কলার নাম অবশ্যই প্রথমে আসবে। গলায় কাঁটা নামানোর জন্য পাকা কলা একটি সহজ ঘরোয়া উপায় হিসেবে বিবেচিত।
গলায় কাটা বিঁধলে আস্ত একটি পাকা কলা, যে কোন কলা হতে পারে যেমনঃ সাগর কলা, সবরি কলা সাথে সাথে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন মুহূর্তেই আপনার গলার কাঁটা উধাও।
এক মুঠো মুড়িতে কাটা দূর
গলার কাটা নামানোর জন্য শুকনো যে কোন খাবার খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। আর এক্ষেত্রে মুড়ি হল কাটা নামানোর আরেকটি সহজ এবং জনপ্রিয় উপায়। যেহেতু গলায় কাঁটা বিঁধলে গলার খাঁজে আটকে থাকে, তাই শুকনো খাবার খেলে খাবারের সাথে কাটাটি নেমে যায়।
গলায় কাটা বিঁধলে বাসায় যদি মুড়ি থাকে তাহলে চট করে এক মুঠো মুড়ি মুখে পুরে হালকা চিবিয়ে গিলে ফেলুন। একবারে না হলে পরপর কয়েকবার এই চেষ্টাটি করে দেখতে পারেন। দেখবেন মুহূর্তেই আপনার গলার কাঁটা নেমে গিয়েছে।
গলার কাটা নামাবে পাউরুটি
গলার কাটা নামানোর জন্য আরেকটি যে শুকনো খাবার কার্যকরী ঘরোয়া উপায় হিসেবে বিবেচিত হয় তা হল পাউরুটি। গলায় কাটা বিঁধলে কয়েক টুকরো পাউরুটি হালকা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন।
শুকনো খাবার পাউরুটি গলার খাজে আটকে থাকা কাটা নামিয়ে নিতে শতভাগ কার্যকরী দুর্দান্ত একটি উপায়। তাই গলায় কাটা বিঁধলে আতঙ্কিত না হয়ে এই উপায়টির মাধ্যমে সাথে সাথে গলার যে কোনো কাটা নামিয়ে ফেলুন।
লবণ পানি খেয়ে নামিয়ে ফেলুন কাটা
কাটা নামানোর জন্য লবণ পানি হতে পারে আরেকটি সহজ ঘরোয়া উপায়। কাঁটা বিধলে সাথে সাথে আপনি যতটুকু পারেন লবণ সামান্য পানি মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। লবণ গলার কাঁটা নরম করে নিচে নামিয়ে দিবে।
এছাড়া এক টুকরো লেবুর সাথে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে লেবুর টুকরাটি চুষে খেয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটিও গলার কাটা নামাতে দারুন কার্যকরী একটি ঘরোয়া উপায়।
কাঁটা নামাতে পারে কোমল পানীয়
গলায় কাঁটা নামানোর জন্য কোমল পানীয় হতে পারে আরেকটি সহজ উপায়। এক্ষেত্রে হাতের কাছে থাকা যে কোনো কোমল পানীয় আপনি বেছে নিতে পারেন। গলায় কাঁটা বিঁধলে সাথে সাথে এক গ্লাস কোমল পানীয় খেয়ে ফেলুন।
ইচ্ছে করলে এই কোমল পানীয় এর সাথে একটি লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এই প্রসেসটি গলার কাঁটা নামানোর ক্ষেত্রে দুর্দান্ত একটি ঘরোয়া রেমিডি হিসেবে পরিচিত।
ভিনেগার খেয়ে কাটা হবে দূর
আমাদের সবার বাসার কিচেনে ভিনেগার থাকবে না এমনটা দেখা যায় না। বিভিন্ন রান্নার উপকরণ হিসেবে ভিনেগার ব্যবহার হলেও কাটা নামাতেও এটি বদ্ধপরিকর। কারণ ভিনেগার গলায় আটকে থাকা কাটা নরম করে নেমে যেতে সহায়তা করে।
এজন্য এক গ্লাস পানির সাথে দুই টেবিল চামচ ভিনেগার মিশিয়ে নিন। গলায় কাটা বিঁধলে সাথে সাথে এই পানিওটি তৈরি করে পান করে ফেলুন। ঘরোয়া এই উপকরণটির সাহায্যে আপনার গলার কাঁটা সহজেই নেমে যাবে।
জোরে কাশিতে কাঁটা দূর করুন
অনেক সময় গলার কাঁটা নামানোর জন্য জোরে কাশি দিলেও কাজ হয়ে থাকে। গলায় কাটা বিঁধলে আমরা নিজের অজান্তেই আতঙ্কিত হয়ে জোরে জোরে কাশি দিয়ে ফেলি।
অনেক ক্ষেত্রে এই কাশির সাথে গলার কাঁটা চলে আসে। কারণ জোরে কাশির সাথে গলায় যে কোন কিছু আটকে থাকলেই তা বের হয়ে আসার সম্ভাবনা বেশি। তাই আপনি গলার কাঁটা দূর করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে কয়েকবার কাশি দিতে পারেন। এটাও ম্যাজিকের মত কাজ করবে।
কাটা নামাতে পারে লেবু
গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে তা নামানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকরী যে ঘরোয়া উপায়টি ব্যবহার করতে পারেন তা হলো লেবু। গলায় কাটা বিঁধলে সাথে সাথে আস্ত একটি লেবুর রস বের করে বা চুষে খেয়ে ফেলুন।
এছাড়া লেবুর রসের সাথে এক চিমটি লবণ মিশিয়েও খেতে পারেন। এই রেমেডিটি এতটাই দুর্দান্ত যে, এই উপায়ে আমার পরিচিত অনেকেই কাটা বের করতে পেরেছেন, এমনকি কৈ মাছের মত জেদি কাটাও ঘরোয়া এই উপায়ে দূর করা সম্ভব। তাই আপনিও নিশ্চিন্তে ঘরোয়া এই উপায়টি কাজে লাগাতে পারেন।
মার্সমেলো খেয়ে কাটা নামান
গলায় কাটা নামানোর ক্ষেত্রে নরম যে কোন কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে, এই কথাটি উপরে বলেছি। এরকম আরেকটি নরম খাবার হল মার্সমেলো ।
আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
গলায় কাটা বিঁধলে দুই থেকে তিনটি মার্সমেলো খেয়ে ফেলুন। দেখবেন মার্সমেলো এর সাথে আপনার গলার কাটাও নিচে নেমে গিয়েছে। এটিও একটি গলার কাটা নামানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়।
অলিভ অয়েলে হবে কাটা দূর
কাটা নামানোর ক্ষেত্রে আরেকটি যে নরম উপকরণের কথা বলা হয়ে থাকে তা হল অলিভ অয়েল। কাটা বিঁধলে সাথে সাথে দুই তিন চামচ অলিভ অয়েল খেয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার গলার কাঁটা মুহূর্তেই অলিভ অয়েলের সাথে চলে গিয়েছে। অলিভ অয়েল গলার কাঁটা নরম করে নেমে যেতে সাহায্য করবে।
এই উপায়টিও একটি কার্যকরী ঘরোয়া উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
গলার কাঁটা নামাতে পারে পানি
গলায় কাঁটা ফুটলে বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া শুরু করুন। এক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানি অল্প অল্প করে খেতে হবে। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার অল্প অল্প করে পানি খান। বারবার পানি খাওয়ার ফলে পানির সাথে কাটা নিচে চলে যাবে।
কাটা নামানোর জন্য এটিও একটি বেশ কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে অনেকে গলা থেকে কাটা দূর করতে পেরেছেন।
গলায় কাটা বিঁধলে করণীয়
আর্টিকেলের এই পর্যায়ে, গলায় কাটা বিঁধলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব। গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে স্বভাবতই আমরা আতঙ্কে অস্থির হয়ে যায়। ভাবি কিভাবে এই গলার কাঁটা তাড়াতাড়ি নামানো যাবে। কিন্তু ভয় না পেয়ে কাটা নামানোর জন্য ঘরোয়া উপায় গুলির আমরা সাহায্য নিতে পারি। সবচেয়ে আশার কথা হল, এই ঘরোয়া উপায় গুলি কাটা নামানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
তাই গলায় কাটা বিঁধলে নিচে উল্লেখিত করণীয় কাজগুলোর মাধ্যমে সহজে গলার কাঁটা দূর করতে পারেন।
লবণ খেতে পারেন কুসুম গরম পানির সাথে
গলায় কাটা বিঁধলে আমাদের রান্না ঘরের সহজ একটি উপকরণ লবণ। কাটা নামানোর জন্য শতভাগ কার্যকরী একটি ঘরোয়া উপায়। হালকা কুসুম গরম পানির সাথে সামান্য লবন মিশিয়ে পান করুন। লবণ গলার কাঁটা নরম করে নেমে যেতে সহায়তা করে।
ভিনেগার খান কুসুম গরম পানির সাথে
আবার হালকা কুসুম গরম পানির সাথে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে খেলেও গলার কাঁটা দ্রুত নেমে যাবে। ভিনেগারে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান গলার কাঁটা নরম করে নামাতে সহায়তা করে। তবে কখনোই শুধু ভিনেগার খাবেন না, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কেবলমাত্র পানির সাথে মিশিয়ে ভিনেগার পান করতে পারেন।
সত্যি কলায় কাটা বিঁধেছে কিনা খেয়াল করুন
আপনার গলায় সত্যিই কাটা ফুটেছে কিনা তা ভালোভাবে খেয়াল করুন। অনেক সময় দেখা যায়, গলায় আসলে কাটাই বিধেনি, হয়তো গলার মাংস ছুঁয়ে কাটাটি চলে গেছে। এমন সময় আমরা গলায় কাঁটা বিধার মত অনুভূতি পেয়ে থাকি। এক্ষেত্রে প্রথমে ঘন ঘন ঢোক গিলে খেয়াল করুন গলার একপাশে কাটার মত বিধেছে কিনা।
যদি প্রথমদিকে বুঝতে না পারেন, তাহলে কয়েক মিনিট বিরতি দিয়ে আবার ঘন ঘন কয়েকবার ঢোক গিলতে থাকুন। যদি সত্যিই আপনার গলায় কাটা বেঁধে থাকে তাহলে এই সময় গলায় কাটা বিধার অনুভূতি দিবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয় - লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা
কিন্তু যদি দেখেন গলায় কোনরকম কাটা কাটা বিধছে না তাহলে আসলে আপনার কাটা বিধেনি। এই নিয়মটি আমি সত্যি কাটা বিঁধেছে কিনা কয়েকবার অনুসরণ করেছি এবং উপকৃত হয়েছি।
বিড়ালের পা ধরলে কাটা যায় কি
আমাদের দেশে কুসংস্কার রয়েছে যে, গলায় মাছের কাটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরলে মাছের কাঁটা আপনি আপনি চলে যায়। কিন্তু আসলে এটা কুসংস্কারই মাত্র। এটা আসলে যার কাটা বিঁধেছে তাকে সান্তনা দেওয়ার একটা উপায় মাত্র। তাই যদি সত্যিই মনে হয় আপনার গলায় কাটা বেধেছে তাহলে উপরে উল্লেখিত ঘরোয়া উপায় গুলির সাহায্য নিতে পারেন।
কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন
আপনার গলায় কাটা বেঁধেছে কিন্তু কোনভাবেই সেই কাটা ঘরোয়া উপায়ে নামাতে পারছেন না, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এক্ষেত্রে নাক, কান, গলার ডক্টরের কাছে যাওয়া বেস্ট সিদ্ধান্ত হবে। তবে আপনার সুবিধা মতো কাছের কোন হাসপাতালে জরুরী বিভাগে গেলেও কাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
গলায় কাঁটা বিঁধলে কোনভাবেই বেশি দিন রাখা ঠিক হবে না। এতে আপনার পরবর্তীতে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নির্দিষ্ট যন্ত্রের সাহায্যে কোনরকম সার্জারি ছাড়াই গলায় বেঁধে থাকা কম সময়ে কাটা খুব সহজে বের করে আনতে পারবেন।
গলার কাটা নামানোর দোয়া
আর্টিকেলের এই পয়েন্টে জানতে পারবেন, গলার কাঁটা নামানোর দোয়া সম্পর্কে। গলায় কাটা বিঁধলে ঘরোয়া উপায় গুলির সাহায্যে কলার কাঁটা সহজে নামানো যায়। ঘরোয়া উপায় গুলি ব্যবহারের সাথে সাথে কাটা নামানোর কুরআনের আয়াত বা দোয়া বিশেষ কার্যকরী। এই দোয়া মনে বিশ্বাস রেখে নিয়ম করে পড়লে অবশ্যই গলায় ফুটে থাকা কাঁটা চলে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
এই দোয়াটি হলো-
"ফালাওলা ইযা-বালাগাতিল হুলকুম"
দোয়াটির অর্থঃ অতঃপর যখন কারো প্রাণ কণ্ঠাগত হয়
(সূরাঃ আল ওয়া-কিয়াহ, আয়াতঃ ৮৩)
এই দোয়াটি পড়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই-
- পাক পবিত্র হয়ে নিতে হবে
- বিসমিল্লাহ বলে দোয়া পড়া শুরু করুন
- দোয়া পড়তে পড়তে ঢোক গিলতে থাকুন
- অথবা দোয়া পড়তে পড়তে হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে গলায় নিচের দিকে মালিশ করুন
যতক্ষণ না পর্যন্ত গলার কাঁটা চলে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত দোয়াটি পড়তে থাকুন। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার গলা কাটা চলে যাবে, ইনশাল্লাহ।
গলায় কাটা কতদিন থাকে
গলায় কাটা নামানোর উপায় সম্পর্কে উপরে আলোচনা করেছি। তবে গলার কাঁটা যতক্ষণ না নিচে নেমে যায়, ততক্ষণ যেমন অস্বস্তি বোধ হয় তেমনি অনেক সময় তা কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ গলায় কাঁটা সহজে না নামলে গলায় ব্যথা হতে শুরু করে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব গলার কাঁটা নামানো ব্যবস্থা করতে হবে।
অনেক সময়ই ঘরোয়া উপায়ে গলার কাঁটা তৎক্ষণাৎ নেমে যায়। এক্ষেত্রে যদি মনে হয় আপনার গলার কাঁটা নামছে না তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, গলায় কাটা কতদিন থাকে বা থাকতে পারে?
সত্যি কথা বলতে গলায় কাটা বিঁধলে কাঁটা নিয়ে বেশি দিন না থাকাই ভালো। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই তৎক্ষণাৎ গলার কাঁটা নামানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এবং বড়দের ক্ষেত্রে একদিনের মধ্যে যদি গলার কাঁটা না নামে তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে গলার কাঁটা সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
গলায় কাটা নামানোর ঔষধ আছে কি
গলায় কাটা ফুটলে আমরা বেশিরভাগ সময় ঘরোয়া টোটকা দিয়ে গলার কাটা নামানোর চেষ্টা করলেও, গলার কাঁটা নামানোর ঔষধ এর খোঁজ করে থাকি। গলায় কাঁটা ফুটলে আতঙ্কিত না হয়ে বারবার ঢোক গেলার চেষ্টা করুন। এই কাঁটা অনেক সময় গলার নরম টিস্যুর উপর আটকে থাকে, তাই বারবার ঢোক গেলার কারণে কাঁটাটি নিজে থেকেই পেটে চলে যায়।
আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা - সকালে টক দই খাওয়ার উপকারিতা
তারপরও আমরা ভাবি যে কোন বিশেষ ঔষধ খেলে হয়তো দ্রুত কাটা নামানো যাবে। অনেকে এটাও ভাবি, ঔষধ গলার কাঁটা নরম করে নেমে যেতে সাহায্য করে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। গলার কাঁটা নামানোর বিশেষ কোন ঔষধ নেই।
গলায় কাঁটা ফুটলে ঘরোয়া টোটকা বেশিরভাগ সময়ই কাজ করে থাকে। তারপরও ঘরোয়া টোটকায় যদি কাটা নামানো না যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গলায় কাটা নামাতে হোমিওপ্যাথি ঔষধের ব্যবহার
গলায় কাটা নামানোর উপায় গুলো ব্যবহারের সাথে সাথে অনেকেই আছেন যারা গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে হোমিওপ্যাথি ওষুধের উপর ভরসা করে থাকেন। তারা মনে করেন, হোমিওপ্যাথি ওষুধ কাটা নামানো বা গলানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
এক্ষেত্রে আপনি হোমিওপ্যাথি ঔষধ সাইলেশিয়া খেতে পারেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকগণ এই ঔষধকে মাছের কাঁটা গলানোর অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করেন। এমনকি কৈ মাছের মত শক্ত কাটাও এই ঔষধের সাহায্যে দূর করা সম্ভব বলে দাবি করা হয়।
গলায় কাটা নামানোর উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর
প্রশ্নঃ গলায় কাঁটা কিভাবে বের করব?
উত্তরঃ গলায় কাটা ফুটলে সেই কাঁটা বের করার জন্য পানির সাথে একটি লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। এছাড়া লেবুর রস এবং লবণ মিশিয়ে খেলেও গলার কাঁটা বের হয়ে যাবে। আরেকটি উপায় গলার কাঁটা বের করতে পারেন তা হল, পানি এবং ভিনেগার মিশিয়ে পান করা।
প্রশ্নঃ মাছের কাঁটা কি গলায় গলে যাবে?
উত্তরঃ অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে যে, মাছের কাঁটা গলায় গলানোর জন্য কোন বিশেষ উপাদান বা ঔষধ রয়েছে কিনা! এটার সত্যিই উত্তর হলো, মাছের কাঁটা গলায় ফুটলে তা কখনোই গলানো যায় না।
প্রশ্নঃ কি খেলে গলার কাঁটা চলে যায়?
উত্তরঃ গলায় কাঁটা ফুটলে ভাত, মুড়ি, পাউরুটি এই ধরনের শক্ত জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে গলার কাঁটা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই খাবারগুলোর সাথে গলার খাজে আটকে থাকা কাটা নিচে চলে যায়।
প্রশ্নঃ মাছের কাঁটা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ পুষ্টিবিদদের মতে, মাছের কাঁটা তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস। মাছের কাঁটা খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। এর ফলে হাড় এবং দাঁত মজবুত হওয়াসহ অস্ট্রিওপোরোসিস এবং অস্ট্রিওআর্থাইটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পরিশেষে
আজকের আর্টিকেলে গলায় কাটা নামানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আমাদের অনেকেরই খাওয়ার সময় গলায় মাছের কাঁটা বিধে যায়। গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে আমরা যেন আতঙ্কে অস্থির হয়ে পড়ি তা বের করার জন্য। কিন্তু ভয় না পেয়ে ধীর স্থির ভাবে গলার কাটা নামানোর জন্য আজকের পোস্টে যে ১২ টি ঘরোয়া উপায়ের কথা বলা হয়েছে তা নিশ্চিন্তে ব্যবহার করুন।
এই ঘরোয়া উপায় গুলি এতটাই কার্যকরী যে,গলার কাঁটা নামানোর ক্ষেত্রে আমাদের দাদি নানি সময়ের থেকেই চলে আসছে। এছাড়া গলার কাঁটা নামানোর দোয়া আলোচনা করেছি তা শতভাগ কার্যকরী। কিন্তু এরপরেও এই উপায় গুলির মাধ্যমে যদি আপনার গলার কাঁটা নামানো না যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url