বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম - ইস্তেখারা নামাজ কখন পড়তে হয়
বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম এবং দোয়া সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করতে চলেছি। আপনারা যারা বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তারা এ পোস্টে বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। সাথে জানবেন ইস্তেখারা নামাজ কখন পড়তে হয়।
পোস্ট সূচিপত্রঃমহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়াও আরো অনেক ধরনের নফল নামাজ আমাদের দিয়েছেন, যে নামাজ গুলো আদায়ের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি। এর মধ্যে অন্যতম একটি নামাজ হলো ইস্তেখারা নামাজ। আজকের আর্টিকেলে বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
ইস্তেখারা নামাজ কি
প্রিয় পাঠক, বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে জেনে নেই ইস্তেখারা নামাজ কি! "ইস্তেখারা" একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ কোন কাজের জন্য আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করা। অর্থাৎ কোন কাজ বা জিনিসের জন্য আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করে যে নামাজ আদায় করতে হয় তাই ইস্তেখারা নামাজ।
আরো পড়ুনঃ চাশতের নামাজের নিয়ম, সময়, আরবি নিয়ত - চাশতের নামাজের ফজিলত
সাধারণত কোন বিষয়ে বা কোন কাজে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে ইস্তেখারা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ইঙ্গিতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়। কোন বিষয়ে ইস্তেখারা নামাজ পড়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে ব্যক্তির মনের মধ্যে যে ভাবটি অনুভব হবে তাই আল্লাহর সিদ্ধান্ত বলে ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া স্বপ্নের মাধ্যমেও আল্লাহ তাআলা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারেন।
ইস্তেখারা সম্পর্কে ইসলামের বিধান সম্পর্কে নিচে জেনে নিন-
- ইস্তেখারা করা সুন্নত। আমাদের নবী সঠিকভাবে ইস্তেখারা করার বিষয় গুরুত্ব আরোপ করে নির্দেশনা দিয়েছেন।
- নতুন কোন কাজ শুরু করার আগে ইস্তেখারা নামাজ পড়া
- কোন কাজে সিদ্ধান্তহীনতায় বা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলে ইস্তেখারা নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া
- সঠিক নিয়মে এবং সুন্নত অনুসারে ইস্তেখারা করলে মহান আল্লাহতালা খুশি হয়ে বান্দাকে ইঙ্গিত এর মাধ্যমে ফয়সালা প্রেরণ করেন।
বিয়ের ক্ষেত্রে ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম
- প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার পর আল্লাহর নামে প্রশংসা করতে হবে অর্থাৎ আল্লাহর নামে হামদ পড়তে হবে। (এক্ষেত্রে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর এই শব্দগুলো বেশি বেশি পাঠ করতে হবে)
- তারপর রাসূলে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামে দরুদ পাঠ করতে হবে।
ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম
- প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার পর আল্লাহর নামে প্রশংসা করতে হয় অর্থাৎ আল্লাহর নামে হামদ পড়তে হয়।
- তারপর রাসূলে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর দরুদ পড়তে হয়।
নামাজ শেষে ইস্তেখারা দোয়া তিন বার পড়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
(এক্ষেত্রে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর এই শব্দগুলো বেশি বেশি পাঠ করতে হয়)
কোন কাজের জন্য ইস্তেখারা নামাজের দোয়া
নতুন কোন কাজ শুরু করার পূর্বে বা কোন কাজ সম্পর্কে দ্বিধা দ্বন্দ্বে উপনীত হলে ইস্তেখারা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ভালো মন্দের ফয়সালা চাওয়া। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো সময় হলো এশার নামাজের পর অজু করে একাগ্র চিত্তে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে ইস্তেখারা দোয়াটি তিনবার পড়া। তারপর ব্যক্তি শুয়ে পড়তে পারেন।
নিচে ইস্তেখারা দোয়াটি দেয়া হলো-
"আল্লাহুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বিইল্মিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বিকুদরাতিকা অয়া আস আলুকা মিন ফদলিকাল আজীম ফাইন্নাকা তাকাদিরু ওয়ালা আকদিরু অয়া তা'লামু ওয়া আন্তা আলামুল গুযুব। আল্লাহুম্মা ইনঁকুন্তা তা'লামূ আন্না হাজাল আমরা খাইরুল লী ফীদ্বীনি অয়া মায়াশী অয়া আকিবাতি আমরী ফাকদিরুহু লী ওয়া ইয়াসসিরহু লী ছুম্মা বারিকলী ফীহি। অয়া ইনকুনতা তা'লামু আন্নাঁ হাজাল আমরা শাররুললী ফীদ্বীনি অয়া মায়াশী অয়া আক্বিবাতি আমরী ফাছরিফহু আন্নী ওয়াছ রিফনী আনহু। ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইছু কা-না ছুম্মার দিনী বিহ্।"
পবিত্র বিছানায় শুয়ে কিবলার দিকে মুখ করে যে উদ্দেশ্যে ইস্তেখারা নামাজ পড়া হয়েছে তা ভালোভাবে স্মরণ করতে হবে। ইস্তেখারা নামাজ পড়ার পর একদিনে যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন ইশারা না আসে তাহলে একাধিকবার এভাবে নামাজ পড়া চালিয়ে যেতে হবে। নির্দিষ্ট দিনে নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম ফয়সালা মনের ভেতর প্রেরণ করবেন।
ইস্তেখারা নামাজ কখন পড়তে হয়
প্রিয় পাঠক, বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার সাথে সাথে আরেকটি যে বিষয় আপনারা জানতে চান তা হলো, ইস্তেখারা নামাজ কখন পড়তে হয়! আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনার উদ্দেশ্যে দিনে বা রাতে যে কোন সময় ইস্তেখারা নামাজ আদায় করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার সুবিধা মত যে কোন সময়ে ইস্তেখারা নামাজ আদায় করতে পারেন।
তবে তিনটি সময়ের ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। যেমনঃ
- ফজর নামাজের পর থেকে সূর্য উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত না
- সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ার আগ পর্যন্ত
- আসরের নামাজ থেকে মাগরিবে নামাজ এর আগ পর্যন্ত
ইস্তেখারা নামাজে শর্ত সমূহ কি
- মনে মনে নামাজের জন্য নিয়ত করা
- প্রয়োজন অনুসারে সর্বোচ্চ ভাবে চেষ্টা করা অর্থাৎ ওয়াসিলা গ্রহণ করা
- যেকোনো বৈধ বা হালাল বিষয়ে ইস্তেখারা নামাজ আদায় করা
- মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুমে খুশি থাকা
- মন থেকে তওবা করা
- অন্যায় যে কোন কিছু গ্রহণ থেকে বিরত থাকা
- হারাম উপার্জন না করা এবং হারাম খাবার না খাওয়া
- নিজে যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় সে বিষয়ে ইস্তেখারা না করা।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url