সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানুন

 

সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাদের জানাবো। আপনারা যারা সাজনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাদের জন্য আজকের পোস্টটি অনেক উপকারী হবে। সাথে জানবেন সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

সাজনা-পাতার-উপকারিতা-অপকারিতা

পোস্ট সূচিপত্রঃসাজনা পাতা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ভান্ডার, সাজনা পাতায় থাকা উপকারী সব পুষ্টি গুণের জন্য একে "সুপারফুড" বলা হয়ে থাকে। আবার সাজনা পাতা যেমন বিশেষ পুষ্টিগুণের জন্য বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সারাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তেমনি সাজনা ডাটা আমাদের দেশের খুবই পরিচিত একটি পুষ্টিকর সবজি। তাই যারা সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান এই পোস্ট থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভূমিকাঃ সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা

সাজনা পাতার উপকারিতা কোন কোন রোগ সারাতে বিশেষ কার্যকরী এবং কাদের জন্য সাজনা পাতা অপকারিতা বয়ে আনবে সে সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান, এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।

কারণ আজকের এই ব্লগ পোস্টে সাজনা পাতার উপকারিতা, সাজনা পাতার অপকারিতা, সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাজনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা, সাজনা পাতা খেলে কি হয়, অল্প কথায় সাজনা পরিচয় সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। তাহলে চলুন দেরি না করে আজকের পোস্টটি শুরু করা যাক।

সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, পোস্টের শুরুতেই আপনাদের সাজনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। সাজনা পাতা বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সারাতে ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকগণ অনেক রোগের চিকিৎসায় সাজনা পাতা ব্যবহার করে থাকেন।

এত উপকারিতা যে সাজনা পাতায় রয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়। নিচে আপনারা সাজনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কেও জানতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ আমলকির ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা আমলকি খাওয়ার ১২ টি উপকারী

সাজনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

সাজনা পাতা রোগব্যাধি সারাতে, বিভিন্ন রোগর প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এবং আমাদের স্বাস্থ্যের উপর এর উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। সাজনা পাতা থেকে এই সকল উপকারিতা পাওয়া যায় মূলতঃ এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিনের জন্য।

এখন আপনাদের সুবিধার্থে প্রথমে সাজনা পাতার ২১টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

রক্তস্বল্পতা দূর করে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে রক্তস্বল্পতা দূর করা সম্ভব। আপনি যদি অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভোগেন তাহলে নিয়মিত পাতে রাখুন সাজনা পাতা।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবে সাজনা পাতাঃ নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব ব্যক্তি ডায়েটে সাজনা পাতা রাখেন তাদের রক্তচাপ অন্যান্য ব্যক্তির তুলনায় তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

লিভারকে সুস্থ রাখবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় রয়েছে লিভার সুস্থ রাখার কার্যকরী উপাদান। যারা নিয়মিত সাজনা পাতা খান তারা লিভার জড়িত যেকোনো সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারেন।

স্নায়ুর যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য স্নায়ুজনিত যে কোন রোগ যেমনঃ অ্যালজাইমা, বিষন্নতা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া নিউরোপ্যাথিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতা। অর্থাৎ যারা নিয়মিত সাজনা পাতা ডায়েটে রাখেন এটা তাদের স্নায়ুতন্ত্রের উপর পজিটিভ প্রভাব ফেলে।

হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায় সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতা হার্টের যেকোন যেকোনো সমস্যায় বিশেষ কার্যকরী। সাজনা পাতায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতা রক্তে চিনি বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস রোগীরা যারা নিয়মিত সাজনা পাতা বা সাজনা পাতার গুঁড়ো খেয়েছেন তারা ইনসুলিন ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেকটাই সফল হয়েছেন।

কিডনি সুস্থ রাখে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতা কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষ উপকারী। বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি থেকে রেহাই মিলবে নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় রয়েছে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ উপকারী উপাদান। নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে কোলেস্টেরল এর মত মহামারী রোগ থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা নিউ জিনিস নামক বিশেষ উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই যৌগ শরীরে ক্যান্সার কোষ কে বৃদ্ধি হতে বাধা প্রদান করে থাকে।

হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে সাজনা পাতাঃ যারা প্রায়ই হজমজনিত সমস্যায় ভুগেন তারা নিয়মিত সাজনা পাতা খাওয়া শুরু করুন। সাজনা পাতায় থাকা বিশেষ উপাদান হজমজনিত যে কোন সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে।

পেপটিক আলসার থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতা হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়ার সাথে সাথে অতিরিক্ত এসিডিটির কারণে হওয়া পেপটিক আলসার বা পেটের ক্ষত সমস্যা থেকে দূরে রাখবে সাজনা পাতা।

বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা প্রদাহ বিরোধী উপাদান বাতের ব্যথার মতো কষ্টকর শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বদ্ধপরিকর। তাই যারা রিউমেটিক আর্থ্রাইটিস রোগে কষ্ট পাচ্ছেন, নিয়মিত সাজনা পাতা খাওয়া শুরু করুন।

এজমা বা শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা এক ধরনের বিশেষ অণু অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এটি শ্বাসনালীর যেকোনো প্রদাহ জনিত সমস্যা থেকেও দূরে রাখে।

চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা ভিটামিন এ বা বিটা ক্যারোটিন নামক উপাদান চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, চোখের যে কোন সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বিশেষ কার্যকরী। নিয়মিত সাজনা পাতাকে আপনার চোখে সুস্থ রাখতে পারেন।

ওজন কমাতে সাজনা পাতার উপকারিতাঃ সাজনা পাতা ফাইবার বা  আঁশ সমৃদ্ধ একটি খাবার। এই ফাইবার ওজন কমাতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান বা বাড়তি ওজন কমাতে চান তাহলে নিয়মিত সাজনা পাতা খাওয়া শুরু করুন।

সাজনা পাতা খাওয়ার ফলে আপনার পেট ভরার অনুভূতি হবে দীর্ঘ সময়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং আপনার ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে সাজনা পাতাঃ সাজনা পাতায় থাকা ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ উপকারী। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগেন তাহলে নিয়মিত সাজনা পাতা পাতে রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সহশাই রেহাই পাবেন।

আমিষের চাহিদা পূরণ করবে সাজনা পাতাঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা নিরামিষভোজি। এই নিরামিষভুজিদের শরীরে অনেক সময়ই প্রোটিন বা আমিষের ঘাটতি দেখা যায়। সাজনা পাতা আমিষ সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় আমিষের চাহিদা মেটাতে নিয়মিত সাজনা পাতা খেতে পারেন।

দুধের বিকল্প হিসেবে সাজনা পাতাঃ আপনি যদি দুধ বা দুগ্ধ জাত কোন খাবার খেতে না পারেন বা হজমে সমস্যা হয় তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই! দুধের ঘাটতি মেটাবে সাজনা পাতা। সাজনা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ই, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এজন্য দুধের বিকল্প হিসেবে সাজনা পাতার জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাজনা পাতার উপকারিতাঃ সাজনা পাতা বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই যারা অল্পতেই সর্দি-কাশি, সর্দি জনিত জ্বরে পড়েন তারা নিয়মিত সাজনা পাতা ডায়েটে রাখলে উপকার পাবেন।

হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সাজনা পাতার উপকারিতাঃ সাজনা পাতা বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ যেমনঃ আয়রন ক্যালসিয়াম ফসফরাস ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ। তাই আপনার হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে নিয়মিত সাজনা পাতা খেতে পারেন।

শিশুদের পুষ্টির চাহিদা মেটাবে সাজনা পাতাঃ অনেক শিশু আছে যারা সবকিছু খেতে চায় না। এ কারণে অপুষ্টিজনিত সমস্যা বা রোগব্যাধি হতে দেখা যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শিশুকে সাজনা পাতা খাওয়াতে পারেন। শিশুর অপুষ্টি জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে সাজনা পাতায় থাকা বিভিন্ন দরকারি ভিটামিন এবং মিনারেলস।

সাজনা-পাতার-উপকারিতা-অপকারিতা

সাজনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা

আর্টিকেলের এই পর্যায়ে, সাজনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। সাজনা পাতা বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেলস সমৃদ্ধ হওয়ায় আমাদের স্বাস্থ্যের উপর এবং রোগ ব্যাধি সারাতে উপকারিতা অনেক। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে যা আমরা সাজনা পাতার অপকারিতা হিসেবে বলতে পারি।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সাজনা পাতার অপকারি দিক সম্পর্কেঃ

গর্ভবতী নারীদের জন্য সাজনা পাতার অপকারিতা

এ কথা শুনে আপনাদের এখন একটু মনে হতেই পারে যে, এত পুষ্টিকর আয়রন যুক্ত খাবার গর্ভবতী নারীদের জন্য কিভাবে ক্ষতিকর হতে পারে? এক্ষেত্রে বলা যায় যে, সাজনা পুষ্টিকর হলেও এটি কিছু ক্ষেত্রে প্রজননে বাধা দিতে পারে।

এছাড়া সাজনা পাতায় ক্ষতিকর প্লান্ট কেমিক্যাল থাকায় গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত সাজনা পাতা না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

থাইরয়েড চিকিৎসার সময় সাজনা পাতার অপকারী দিক

হ্যাঁ, মানছি যে সাজনা পাতা থাইরয়েডের চিকিৎসায় খুবই উপকারী। কিন্তু আপনি যদি থাইরয়েডের চিকিৎসার সময় ঔষধের সাথে এটি মিশিয়ে খান তাহলে সমস্যা আছে। থাইরয়েডের চিকিৎসার সময় যেহেতু বিভিন্ন ঔষধ খেতে হয় তাই সাজনা পাতা খাওয়া আপনার জন্য খুব উপকারের বদলে অপকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

ডায়রিয়া বা গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা

সজনে পাতার মধ্যে রয়েছে মিনারেলস ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যার জন্য আপনি তা বেশি খেলে আপনার পেটে অনেকক্ষণ ক্ষুদা আসবেনা। এবং এই ক্ষুধা না আসার কারণে, অনেক বেশি সম্ভাবনা আছে যে আপনি কিছু খাবেন না। আর এই না খাওয়ার ফলেই আপনার পেটে গ্যাস বা ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

তাই অতিরিক্ত সাজনা পাতা খাওয়ার এটি একটি অপকারী দিক।

রক্তচাপের ওষুধের সাথে খেলে

রক্তচাপ কমানোর জন্য তো সজনের ব্যবহার অনেক। তবে যদি আপনি রক্ত চাপের ওষুধ এবং সজনে পাতা একসাথে খাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে তা মাথা থেকে দ্রুত সরিয়ে নিন। কেননা রক্তচাপ কমানোর ওষুধ এবং সজনে পাতা একসাথে খেলে রক্তের চাপ অতিরিক্ত কমে যাবে। যার ফলে আপনার অনেক সমস্যাই হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ থানকুনি পাতার   ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা - থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম

তবে একটা কথা বলে রাখি, এখানে ওষুধ এবং সজনে পাতা একসাথে খাওয়া মানে একই সময় খাওয়া না। এখানে একসাথে খাওয়া বলতে বোঝাচ্ছে যে, আপনি ওষুধও খাচ্ছেন আবার একই সাথে অন্য সময় সজনে পাতাও খাচ্ছেন, এটি বোজানো হয়েছে। একইসময় খাওয়া এবং একই সাথে খাওয়া দুটি থেকেই বিরত থাকা উচিত।

ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সজিনা পাতা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ভালো। তবে তাই বলে যে আপনারা ডায়াবেটিক রোগীরা যত ইচ্ছা তত সাজনা পাতা খাবেন তাও নয়। এখানে পরিমাণ মতো খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সজনে পাতার পুষ্টি উপাদান রক্তের শর্করা কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত সাজনা পাতা খাওয়া কিন্তু মাঝে মাঝে অতিরিক্ত মাত্রায় রক্তের শর্করা কমিয়ে দেয়।

এছাড়া আপনি যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রেও আপনাকে সাজনা পাতা খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

কিডনি রোগীদের সাজনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা

এমনিতে তো আপনার যদি কিডনি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে নির্দ্বিধায় সাজনা পাতা খেতে পারেন। কিন্তু যদি আপনার কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা থাকে তাহলে সাজনা পাতা না খাওয়াই ভালো হবে। কারণ সাজনা পাতায় থাকা ফসফরাস এবং প্রোটিন কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত সাজনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা

সাজনা পাতা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কিন্তু তাই বলে কোনভাবেই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। কেননা আপনি যদি বেশি সজিনা পাতা খান হলে আপনার বমি বমি ভাব, ক্ষুধা আসা, পেটের সমস্যা ও ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

আবার সজনে পাতার সাথে যে ডাল থাকে তা আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বলা হয়ে থাকে, এই ডালগুলো তেমন ক্ষতিকর উপাদান থাকে যা আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম ধ্বংস করে দিতে পারে।

এছাড়া একদম ছোট শিশুদের সাজনা পাতা না খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ এতে শিশুর উপকারের চেয়ে অপকার হতে পারে।

সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন

উপরে আলোচনা করেছি সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আপনাদের জানাবো, সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। যদিও সাজনা পাতা আপনি কিভাবে খাবেন তা অনেকটাই আপনার উপর নির্ভর করে। তবে সাজনা পাতার উপকারিতা পুরোপুরি পেতে হলে খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।

কারণ আপনি যদি শুধু আপনার স্বাদের পরিবর্তনের জন্য সাজনা পাতা মজা করে খাচ্ছেন, তাহলে খুব একটা উপকার সাজনা পাতা থেকে আপনি পাবেন না। 

তাই আপনাদের সুবিধার্থে নিচে সাজনা পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম দেওয়া হল-

  • আপনি চাইলে সজনে পাতা ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড করে জুসের মতো তৈরি করে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে স্বাদের পরিবর্তন আনার জন্য আদা, জিরা বা বিট লবন দিতে পারেন। অবশ্যই সজনে পাতা ব্লেন্ডা করার সময় কিছু পরিমাণে পানি যোগ করবেন। ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে ছেঁকে নিন। এরপর আপনি চাইলে জুসের সাথে একটু মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল, আপনার সুপারম্যানের এনার্জি জুস খাওয়া;
  • যদি আপনার মনে হয়, যে আপনি এত ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছেন না। তাহলে আপনার জন্য হয়তো চায়ের সাথে সাজনা পাতা খাওয়া সুবিধার হবে; এক্ষেত্রে চায়ের সাথে কিছুটা সাজনা পাতা বা সাজনা পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হবে সাজনা পাতার চা। চাইলে আপনি চায়ের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • ভাতের সাথে যদি সাজনা পাতা খেতে চান, তাহলে সাজনা পাতাকে শাকের মতো ভেজে নিতে পারেন। তবে একটি কথা বলে রাখা ভালো যে, সাজনা পাতা রান্না করলে তার গুনাগুন অনেক আংশিক কমে যায়; তাই সাজনা পাতা কাঁচা অথবা সাজনা পাতার গুড়ো যেকোন ভাবে খেতে পারেন।
  •  আপনি ভর্তা করেও সজনে পাতা খেতে পারবেন। এক্ষেত্রে সাজনা পাতা সিদ্ধ করার প্রয়োজন নেই, কাঁচা সাজনা পাতা পাটায় বেটে তারপর আপনার স্বাদ অনুযায়ী আদা, রসু্‌ পেঁয়াজ ইত্যাদি মিশিয়ে তৈরি করে নিন আপনার নিজের তৈরি ভর্তা।
  • এখন ভাবছেন, সজিনা পাতা তো সারা বছর পাওয়া যায় না। তাহলে শুধু সিজনেই এগুলো খাওয়া হবে। সিজন ছাড়া সজিনা পাতা খাওয়া হবে না। কিন্তু এমনটা না, আপনি চাইলে সিজনেই সজিনা পাতা গুলো রোদে শুকা পরে গুড়ো করে খেতে পারেন। এতেও পুষ্টি গুণের কোনো হেরফের হবেনা।

ডায়াবেটিস রোগীদের সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা

এখন জানতে পারবেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাজনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। সাজনা পাতাকে ডায়াবেটিস রোগের ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক মহৌষধ হিসেবে অভিহিত করা হয়। কারণ সাজনা পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ভেষজ ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন একটি খাবার।

সাজনা পাতায় থাকা এসকরবিক এসিড ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর ফলে নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। এছাড়া সাজনা পাতায় থাকা প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ শরীরে রক্তের চিনি বা শর্করার মাত্রায় স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সাজনা-পাতার-উপকারিতা-অপকারিতা

এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন অন্তত ৫০ গ্রাম করে হলেও সাজনা পাতা খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। নিয়মিত সাজনা পাতা ডায়েটে রাখলে ধীরে ধীরে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে রক্ত গ্লুকোজের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করবে।

একজন ডায়াবেটিস রোগী বিভিন্নভাবে সাজনা পাতার ডায়েটে রাখতে পারেন। যেমনঃ সকালে খালি পেটে সাজনা পাতার গুঁড়ো বা সাজনা পাতা এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন। এছাড়া আপনার নিয়মিত চায়ের সাথে সাজনা পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন।

ভাতের সাথে আপনি সাজনা পাতার গুড়ো বা কচি সাজনা পাতা সালাদ হিসেবে খেতে পারেন।

তবে দৈনিক কতটুকু পরিমাণ সহজ না পাতার বা সাজনা পাতার গুড়ো ডায়েটে রাখতে হবে তা চিকিৎসকের পরামর্শ মত নির্ধারণ করে নিতে হবে। কারণ অতিরিক্ত সাজনা পাতা খাওয়ার ফলে রক্তে চিনির পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে যার কারণে অন্যান্য শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

এছাড়া আপনি যদি ইনসুলিন গ্রহণ করেন তাহলে সাজনা পাতা গ্রহণের সঠিক পরিমাপ রাখতে হবে।

সাজনা পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও অতিরিক্ত সাজনা পাতা কখনোই খাওয়া যাবে না।

ডায়াবেটিস রোগীদের সাজনা পাতা খাবার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার এই পোস্ট পড়ে আসতে পারেন।

সাজনা পাতা খেলে কি হয়

প্রিয় পাঠক, সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে উপরে আপনারা জেনেছেন। এখন আপনাদের জানাবো, সাজনা পাতা খেলে কি হয়! সাজনা পাতা বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর উপকারী একটি খাবার।

এজন্য আপনারা অনেকেই জানতে চান, সাজনা পাতা খেলে কি হয় সে সম্পর্কে। এখন আপনাদের সুবিধার্থে, সাজনা পাতা খাওয়ার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
  • সাজনা পাতা বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ হওয়ায় আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে যাদের এজমা বা হাঁপানি সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত সজনে পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
  • শিশুদের প্রায়ই বদহজম বা হজমজনিত সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাজনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খাওয়ানোর কথা বলা হয়ে থাকে, এতে শিশুর হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। তবে শিশুর বয়স অবশ্যই দুই থেকে তিন বছরের বেশি হতে হবে।
  • নিয়মিত সাজনা পাতা খেলে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল এল ডি এল কমিয়ে রক্তক্ষয় স্বাভাবিক গতিশীল করতে সহায়তা করে।
  • সিজনাল জ্বর এবং সর্দি ভালো করতে সাজনা পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যায় সাজনা পাতার গুঁড়ো দিয়ে চা বানিয়ে খেলে মুহূর্তেই মাথাব্যথা দূর হয়ে যাবে।
  • শরীরে ক্ষতস্থানে সাজনা পাতা পেস্ট বানিয়ে লাগালে উপকার মিলবে।
  • শরীরে কোথাও বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ালে সাজনা পাতার রস সাথে সাথে কামড়ানোর স্থানে লাগালে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা থেকে পাওয়া যাবে।
  • ত্বকের ব্রণ সহ যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাজনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার সাথে সাথে সাজনা পাতার গুড়ো পেস্ট বানিয়ে ত্বকে লাগালে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
  • চুল পড়া বন্ধ করতে সাজনা পাতার গুঁড়ো এর সাথে টক দই মিশে চুলে লাগালে উপকার মিলবে।

অল্প কথায় সাজনা পাতার পরিচয় জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার পর, এখন আপনাদের সুবিধার্থে সংক্ষেপে সাজনা গাছ সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। সাজনা, যাকে সজিনা বাঁ সজনে হিসেবে অনেকে চিনে, বাংলাদেশের অন্যতম একটি পরিচিত সবজির মধ্যে একটি। পুরো বিশ্বে সাজনা সুপার ফুড হিসেবেও পরিচিত।

সাজনা গাছের পাতা, সাজনা ডাটা, বাকল, শিকড়, ফল, ফুল সবকিছুই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে সাজনা পাতা পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে সাজনা গাছের অন্যান্য অংশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। সাজনা পাতার গুড়ো "মরিঙ্গা পাউডার" হিসেবে আমাদের কাছে বহুল পরিচিত

আরো পড়ুনঃ আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন

কারণ সাজনা পাতায় রয়েছে লেবুর চেয়ে ৭ গুণ ভিটামিন সি, ডিমের চেয়ে চারগুণ বেশি প্রোটিন, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে তিনগুণ বেশি পটাশিয়াম। এছাড়া সাজনা পাতার গুড়ো তে গাজরের চেয়ে দশগুণ বেশি ভিটামিন এ এবং পালং শাকের চেয়ে ২৫ গুন বেশি আয়রন রয়েছে বলে দাবি করা হয়।

সাজনা পাতায় আরো রয়েছে, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়া্ম, ফসফরাস, অ্যামিনো এসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান।

সাজনা পাতা আমিষের পর্যাপ্ত ভান্ডার যার পরিমাণ প্রায় ৩৮ শতাংশ। এছাড়া ৯ ধরনের অ্যামিনো এসিড বিদ্যমান রয়েছে এই সাজনা পাতায়। এতসব পুষ্টির ভান্ডারের জন্যই সাজনা পাতাকে "সুপারফুড" বলা হয় এবং এমনকি অনেকে একে "অলৌকিক" গাছ হিসেবেও অভিহিত করে থাকেন।

আমাদের বাড়ির আঙ্গিনায় জন্মানো এই গাছ পুষ্টির ডিনামাইট ও অত্যাশ্চর্য বৃক্ষ হিসেবে উপাধি লাভ করেছে। বিজ্ঞানের ভাষায় Moringa Oleifera এবং ইংলিশ ভাষায় drumstick Tree (ড্রামস্টিক ট্রি) নামে পরিচিত সাজনার ১৩টি প্রজাতি পাওয়া গেছে। এফএও (জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) এর মতে, সজনের উৎপত্তি হয় দক্ষিণ এশিয়ায়।

শীত প্রধান দেশ বাদ দিয়ে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সজিনা কোথাও না কোথাও জন্মে।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক, আজকের ব্লগ পোস্টে সাজনা পাতার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাজনা পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং ঔষধি গুনাগুন।
 
সাজনা পাতায় থাকা এ সকল পুষ্টি উপাদান অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি সারাতে এবং সুস্থ জীবন যাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি আপনার ডায়েটে সাজনা পাতা বা সাজনা পাতার গুঁড়ো যা মরিঙ্গা পাউডার হিসেবে পরিচিত, দুটির যেকোনো একটি রাখতে পারেন।

আজকের পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে শেয়ার করতে পারেন যাতে তারা উপকৃত হতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url