নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি, কোন কোন কারন জেনে নিন

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি, আপনি যদি না জেনে থাকেন কোন কোন কারণ গুলোর জন্য নামাজ ভেঙ্গে যায় তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। কারণ এই আর্টিকেলে যে ১৯টি কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। সাথে জানবেন, নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে।

নামাজ-ভঙ্গের-কারণ-১৯টি

পোস্ট সূচিপত্রঃনামাজ ভঙ্গের কারণ গুলো জানা থাকলে শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করা সম্ভব, আর শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করা প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য ফরজ। এজন্য নামাজ ভেঙে যাওয়ার যে ১৯টি কারণ বলা হয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের জানা জরুরী, যা এই আর্টিকেলে আলোচনা করতে চলেছি।

ভূমিকাঃ নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি

নামাজ ভঙ্গের ১৯টি কারণ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা তাগিদ দিয়েছেন, কিন্তু অনেক সময় নানা কারণে আমাদের নামাজ ভেঙ্গে যেতে পারে। কিছু কারণ আমাদের জানা যেগুলো সম্পর্কে আমরা সচেতন থাকতে পারি, আবার নামাজ ভঙ্গের কিছু অজানা কারণ রয়েছে যেগুলো হয়তো আমরা ঠিক মত জানিনা।

আরো পড়ুনঃ চাশতের নামাজের নিয়ম, সময় ও আরবি নিয়ত - চাশতের নামাজের ফজিলত

এছাড়া নামাজে এমন কিছু কাজের জন্য নামাজ ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে যা হয়তো আমরা অতটা গুরুত্ব দেই না। কিন্তু নামাজ ভঙ্গের জানা-অজানা কারণগুলো শুধরিয়ে শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করা ফরজ কাজ। আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে যে ১৯টি কারণে নামাজ ভঙ্গ হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

তাহলে চলুন দেরি না করে আজকের আর্টিকেলটি শুরু করা যাক।

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি জেনে নিন

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি সম্পর্কে আর্টিকেলের শুরুতে আপনাদের জানাবো। প্রতিটি মুসলমান এর জন্য শুদ্ধভাবে এবং সময়মতো নামাজ আদায় করা ফরজ। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় স্তম্ভ হল নামাজ। ইসলামে নামাজ এর গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজ হলো বেহেস্তের চাবি অর্থাৎ নামাজ ব্যতীত কোন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

কিন্তু শুধু নামাজ পড়লেই হবে না নামাজের ফরজ গুলো গুরুত্ব সহকারে মেনে নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজ আদায় করার সময় ভুল গুলো এড়ানোর জন্য নামাজ ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে জানা মুসলমানদের জানা ঈমানী দায়িত্ব। নামাজ ভঙ্গের এই কারণ গুলো জানার জন্য আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

নামাজ ভঙ্গের কারণ নামাজে সুরা অশুদ্ধ পড়া

নামাজ ভঙ্গের প্রথম কারণ নামাজে কুরআনের সূরা বা আয়াত অশুদ্ধভাবে পড়া। অর্থাৎ নামাজে কুরআন তেলাওয়াত অশুদ্ধভাবে পড়লে এবং সেই কারণে যদি অর্থের পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যায় বা ভঙ্গ হয়।

এ কারণে আমাদের উচিত শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করে নামাজ আদায় করা।

নামাজ ভঙ্গের কারণ কথা বলা

নামাজরত অবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি কথা বলে তাহলে সেই ব্যক্তি নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কারণ মনোযোগের সহিত একাগ্র চিত্তে নামাজ আদায় আদায় করতে হবে।

নামাজ ভেঙ্গে যাবে সালাম দিলে

নামাজরত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তিকে সালাম প্রদান করে তাহলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজে থাকা অবস্থায় সালাম দেওয়া নিষেধ বা সালাম দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

নামাজ ভঙ্গের কারণ সালাম এর উত্তর দেওয়া

নামাজ আদায় রত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি অন্য কারো সালামের জবাব বা উত্তর দেয় তাহলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজ আদায় করা অবস্থায় কোনভাবেই সালামের উত্তর দেওয়া যাবে না।

নাপাক জায়গায় সেজদা দেওয়া

কোন ব্যক্তি এমন জায়গায় নামাজ পড়ছেন যেখানে সেজদার জায়গা নাপাক তাহলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ পরিষ্কার জায়গায় নামাজ আদায় করা উত্তম। নাপাক জায়গায় সিজদা দেওয়া যাবে না।

নামাজের ব্যক্তির সিনা কেবলামুখী থেকে ঘুরে গেলে

নামাজ আদায় করার সময় খেয়াল রাখতে হবে কোনভাবেই যেন কেবলামুখ থেকে সিনা ঘুরে না যায়। কারণ নামাজে যে ব্যক্তির সিনা কেবলামুখী থেকে ঘুরে যাবে সে ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

নামাজে কোরআন দেখে পড়লে নামাজ ভেঙ্গে যাবে

নামাজ আদায় করার সময় কোন ব্যক্তি যদি কোরআন দেখে সূরা এবং আয়াত পড়েন তাহলে সে ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

নামাজের ভেতর শব্দ করা

নামাজ আদায় রত অবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনরকম শব্দ করে তাহলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজে থাকা অবস্থায় শব্দ পরলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই নামাজরত অবস্থায় কোন প্রকার শব্দ করা যাবে না।

নামাজের ভেতর জোরে কাশি দিলে

নামাজ রত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে কাশি দেয় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

নামাজ ভঙ্গের কারণ আমলে কাসির করা

নামাজ আদায় রত অবস্থায় যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে শরীরের কোন অঙ্গ এমনভাবে নাড়াচাড়া করে বা শরীরের অঙ্গ দ্বারা এমন কাজ করে যাতে দূর থেকে কেউ দেখলে মনে করে যে সে ব্যক্তি নামাজরত অবস্থায় নেই, তাহলে ওই ব্যক্তি নামাজ ভেঙ্গে যাবে। আর একে বলা হয় আমলে কাসির।

নামাজ ভঙ্গের কারণ শব্দ করে কাঁদা

নামাজে আমরা আল্লাহর কাছে বিপদ আপদ থেকে দূরে থাকার জন্য পানাহ চেয়ে থাকি। তবে আল্লাহ তাআলার কাছে নিরবে তা চাইতে হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা দুনিয়ার বিপদ-আপদের কথা মনে করে নামাজের ভেতর শব্দ করে কাঁদেন, এতে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

নামাজ ভঙ্গের কারণ সতর ঠিকমতো না ঢাকা

নামাজ আদায় করার সময় সতর ঠিকমতো না ঢাকার কারণে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তিন তাসবিহ পড়তে যেমনঃ সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ তিনবার পড়তে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় যদি সতর খোলা থাকে তাহলে নামাজ ভেঙে যাবে। এক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর জন্য সতর ঢাকার নিয়ম হলোঃ

পুরুষের ক্ষেত্রেঃ কোমর থেকে অর্থাৎ নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর ঢাকা

নারীর ক্ষেত্রেঃ মুখ মন্ডল, হাতের কব্জি এবং পায়ের তালু ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢাকা।

নামাজে ইমামের ভুল অন্য কেউ সংশোধন করলে

নামাজ পড়ানোর সময় নামাজের ইমাম যদি নামাজে কোন ভুল করে থাকে তাহলে মুক্তাদী ব্যতীত অর্থাৎ ইমামের পিছনে যারা নামাজ রত অবস্থায় রয়েছেন তারা ব্যতীত অন্য কেউ নামাজ সংশোধন করে দিলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজে মুক্তাদি ছাড়া অন্য কারো লোকমা নিলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

কোন খবর শোনার পর উত্তর দিলে

নামাজে থাকা অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি কোন সুসংবাদ অথবা দুঃসংবাদ শুনে থাকে এবং এই সংবাদের প্রেক্ষিতে কোন প্রকার উত্তর দিয়ে থাকেন তাহলে ওই ব্যক্তি নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজ রত অবস্থায় কোন অবস্থাতেই কোন কিছু শোনার পর প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে না।

শব্দ করে হাসলে

নামাজরত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি কোন কারণে শব্দ করে হেসে ওঠেন তাহলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজে কোন কারনেও শব্দ করে হাসা যাবে না।

দুনিয়াবি কোন কিছু প্রার্থনা করা

নামাজরত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি দুনিয়ার বা সাংসারিক কোন জিনিসের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তাহলে সে ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

নামাজ-ভঙ্গের-কারণ-১৯টি

হাঁচির উত্তর দিলে

নামাজ রত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি হাচি দেয়ার পর হাঁচির উত্তর দেন তাহলে সে ব্যক্তির নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

কোন কিছু খেলে বা পান করলে

নামাজরত অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি নামাজে মাঝখানে কোন খাবার খেয়ে থাকেন বা পান করে থাকেন তাহলে সে ব্যক্তি নামাজ ভেঙ্গে যাবে। অর্থাৎ নামাজে থাকা অবস্থায় খাওয়া এবং পান করা যাবে না।

ইমামের আগে মুক্তাদি চলে গেলে

নামাজে থাকা অবস্থায় ইমামের আগে যদি মুক্তাদী চলে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। এখানে ইমামের আগে মুক্তাদি চলে যাওয়া মানে কোন মুক্তাদির পায়ের গোড়ালি যদি ইমামের আগে চলে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

উপরে নামাজ ভঙ্গের নির্ধারিত এবং প্রসিদ্ধ ১৯টি কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই ১৯টি কারণ ছাড়াও আরো কিছু কারণে নামাজ ভেঙ্গে যেতে পারে। সেই কারণগুলোর জন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। যেমনঃ

  • এমন কোন কিছু করলে যার কারণে ওযু ভেঙ্গে গেলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে
  • নামাজে থাকা অবস্থায় কোন প্রাপ্তবয়স্ক নারী পাশে নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে গেলে
  • ইমাম নামাজের ইমাম সাহেবের আগে কোনরকম আদায় করে ফেললে
  • নামাজের মধ্যে অচেতন হয়ে গেলে

মহান আল্লাহতালা নামাজের ভুলগুলো শুধরিয়ে আমাদের শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন আমীন।

নামাজ শব্দের অর্থ কি

নামাজ এর আরবি শব্দ সালাত বা সালাহ। নামাজ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো দোয়া, ক্ষমা, প্রার্থনা করা, রহমত, প্রশংসা, ইবাদত।

নামাজ হল আল্লাহর উদ্দেশ্যে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত নিয়মে একান্ত বিশ্বাসের সাথে করা প্রার্থনা বা ইবাদত। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। নামাজ হলো ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ।

নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহতালা বলেন, "তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং যাকাত আদায় করো"

অর্থাৎ নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং সঠিক নিয়তে নামাজ আদায় করার উপর আল্লাহতালা গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি

প্রিয় পাঠক, নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি সম্পর্কে আপনারা উপরে জেনেছেন। এখন জানবেন, নামাজের ফরজ কাজ গুলো কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে। আল্লাহতালা নামাজের জন্য কতগুলো ফরজ কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যে ফরজ গুলো পালন করা অবশ্য কর্তব্য। তাই সহি ভাবে নামাজ পড়ার জন্য এই ফরজ কাজ গুলো সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

আরো পড়ুনঃ বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজ পড়ার নিয়ম - ইস্তেখারা নামাজ কখন পড়তে হয়

নামাজের ১৩টি ফরজের মধ্যে সাতটি নামাজের বাইরের ফরজ কাজ বা আহকাম বলা হয়ে থাকে। এবং নামাজের ভিতরের ছয়টি ফরজ কাজকে আরকান বলা হয়। এই ফরজ কাজগুলো পালন না করলে নামাজ আদায় হবে না। তাহলে নিচে জেনে নিন নামাজের জন্য ১৩ টি ফরজ কাজ সম্পর্কে।

নিচে জেনে নিন নামাজের ৭টি আহকাম সম্পর্কেঃ

  • নামাজ ফরজ হওয়ার প্রথম শর্ত শরীর পাক-পবিত্র হওয়া
  • নামাজ ফরজ হওয়ার শর্ত পরিধেয় বস্ত্র বা কাপড় পবিত্র হওয়া
  • যে স্থানে নামাজ আদায় করা হবে তা পবিত্র হওয়া
  • নারী পুরুষ এর বিধান অনুযায়ী সতর ঢাকা
  • কিবলামুখী হওয়া
  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময় অনুযায়ী আদায় করা
  • নির্দিষ্ট নামাজের জন্য নিয়ত করা
এখন আপনারা জানতে পারবেন, নামাজের ভেতরের ছয়টি ফরজ কাজ সম্পর্কে। নামাজের ভেতরের এই ফরজ কাজগুলোকে আরকান বলা হয়।
  • তাকবীরে তাহরীমা বলে নামাজ শুরু করা। অর্থাৎ নামাজের শুরুতে আল্লাহু আকবার বলা
  • সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া
  • নামাজে কিরাত পাঠ করা
  • নামাজের মধ্যে রুকু করা
  • নামাজের মধ্যে সেজদা দেওয়া
  • শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ করা
তবে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করাও ব্যক্তির ফরজ কাজের অন্তর্ভুক্ত। উপরে উল্লেখিত নামাজের জন্য নির্ধারণ করা ফরজ গুলো পালন করা অফ কর্তব্য। এই ১৩টি ফরজের মধ্যে কোন একটি খরচ বাদ পড়লে নামাজ সহি হবে না। এছাড়া সাহু সিজদা করলেও নামাজ শুদ্ধ হবে না।

নামাজের ওয়াজিব গুলো কি কি

ওয়াজিব শব্দের অর্থ হলো কর্তব্য। যে সকল কাজ করার জন্য আদেশ রয়েছে কিন্তু ফরজের চেয়ে দুর্বল দলিল দ্বারা প্রমাণিত তাই ওয়াজিব। ফরজ কাজ করার পরের স্থানই হলো ওয়াজিব। নামাজের জন্য ফরজ কাজ গুলো করা যেমন অবশ্য কর্তব্য তেমনি নামাজের ওয়াজিব গুলোও অবশ্যই পালন করতে হবে।

নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি। যেমনঃ

  • সুরা ফাতিহা পাঠ করা
  • সুরা ফাতিহার পর অন্য কোন সূরা মিলিয়ে পড়া
  • ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে কিরাত পাঠের জন্য নির্ধারণ করা
  • নামাজে কিরাত, রুকু ও সিজদার মধ্যে তোর টিপ ঠিক রাখা
  • রুকু দেয়ার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো
  • দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা
  • নামাজে রুকু, সিজদা দাঁড়ানো ও বৈঠকের মধ্যে অন্ততপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ স্থির থাকা।
  • তিন রাকাত বা চার রাকাত নামাজে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের পর বসে তাশাহুদ পাঠ করা বা ওই ওই পরিমাণ সময় বসা।
  • নামাজের প্রথম ও শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া।
  • ফজর, মাগরিব ও এশার নামাজের প্রথম দুই রাকাতে ইমাম সাহেবের জন্য উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করা এবং জোহর ও আসরের নামাজের মধ্যে ইমাম সাহেব ও ব্যক্তি নিজে অনুচ্চ স্বরে কিরাত পাঠ করা।
  • নামাজ শেষে সালাম ফেরানো।
  • এশার নামাজ শেষে বেতর নামাজ আদায় করার সময় দোয়া কুনুত পড়া।
  • দুই ঈদের নামাজ আদায় করার সময় ছয় তাকবীর বলা।
  • নামাজের প্রত্যেক রাকাতে ফরজ ও ওয়াজিবগুলোর তরতিব ঠিক রাখা।
নামাজ-ভঙ্গের-কারণ-১৯টি
নামাজে ফরজ কাজগুলো যেমন অবশ্য পালনীয় তেমনি ওয়াজিব কাজগুলো পালনের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিনা কারণে ওয়াজিব বাদ দেওয়া যাবেনা। ওয়াজিব আমল পালন করলে সওয়াব পাওয়া যায় এবং বাদ দিলে গুনাগার হবে। কোন কারনে ওয়াজিব বাদ গেলে কাজা বা আদায় করে নিতে হবে।

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি সম্পর্কিত প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্নঃ দীর্ঘশ্বাস ফেললে কি নামাজ ভঙ্গ হয়?

উত্তরঃ নামাজের মধ্যে অবশ্য পালনীয় কর্তব্য সর্তকতা হল নিজের ইচ্ছায় দীর্ঘশ্বাস বা আর্তনাদ করা, হাহাকার করা উচিত নয়। তবে নামাজ রত অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে আহ, উহ বা এরূপ শব্দ করলে নামাজ ভঙ্গ হয়।

প্রশ্নঃ কথা বললে কি নামাজ ভঙ্গ হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, নামাজের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে কথা বললে নামাজ ভঙ্গ হয়। নামাজ একাগ্রচিত্তে মনোযোগ সহকারে আদায় করার কথা বলা হয়েছে। নামাজের মধ্যে কথা বলা মানে নামাজ থেকে মন ছুটে যাওয়া যে কারণে নামাজ ভঙ্গ হয়।

প্রশ্নঃ মুখে খাবার খেলে কি নামাজ নষ্ট হয়?
উত্তরঃ মুখে খাবার খেলে ওযু বজায় থাকে। কারণ খাবার অপবিত্রতা নয় এবং মুখে খাবার রেখে দিলে ওযু নষ্ট হয় না তাই নামাজও বৈধ থাকে। অর্থাৎ নামাজ নষ্ট হয় না।

প্রশ্নঃ কাশি দিলে কি নামাজ নষ্ট হয়?
উত্তরঃ নামাজের সময় সামান্য কাশির জোরে যেখানে দুই শব্দ উচ্চারিত হয় তাহলে নামাজ নষ্ট বা বাতিল হয়ে যায়। তবে কোন ব্যক্তি যদি নামাজের সময় কাশি না দিলে নিঃশ্বাস নিতে না পারে তাহলে সে ক্ষেত্রে নামাজ নষ্ট হবে না।

প্রশ্নঃ নামাজের মধ্যে হাঁচি দিলে করনীয় কি?
উত্তরঃ নামাজ রত অবস্থায় কোন ব্যক্তি হাঁচি দিলে আলহামদুলিল্লাহ পড়তে হবে। তবে সূরা আল ফাতিহা পড়ার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে বললে এর বিরতি ভেঙে যাওয়ার কারণে পুনরায় সূরা পাঠ করা ফরজ

পরিশেষে

আজকের আর্টিকেলে নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। নামাজ ভঙ্গের এই ১৯ টি কারণ সম্পর্কে আমাদের সচেতন থেকে শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করা ফরজ। এছাড়া নামাজের ফরজ কাজগুলো সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন।এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন যাতে তারা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url