মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর কার্যকর ঘরোয়া উপায়

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে, অনেকেই নিজের কাঙ্ক্ষিত ওজন কমাতে ব্যর্থ হন। আপনি যদি আপনার অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমানোর চেষ্টায় থাকেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ওজন কমানোর কার্যকর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। সাথে জেনে নিন, প্রতিদিন ১ কেজি করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে।

মেয়েদের-দ্রুত-ওজন-কমানোর-উপায়

আজকের আর্টিকেলে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর কিছু ঘরোয়া পরীক্ষিত ও কার্যকর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করতে চলেছি, যা মেনে চললে আপনিও দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম হবেন। তাহলে চলুন আর্টিকেলটি শুরু করা যাক। পোস্ট সূচিপত্রঃ

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আর্টিকেলের শুরুতে আপনাদের জানাবো। এই উপায় গুলো পরীক্ষিত এবং অনেকেই মেনে চলে উপকৃত হয়েছেন। তাদের সম্ভব হয়েছে এক মাসেই ১০ কেজির মত ওজন কমিয়ে ফেলা বা এক সপ্তাহেই ১ কেজির মত ওজন কমানো। এই উপায় গুলো মেনে চললে আপনিও ওজন কমাতে সফল হবেন ইনশাআল্লাহ।

আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে যেসব খেলে দ্রুত ওজন কমে

বেশি মোটা হওয়া কখনোই ভালো লক্ষণ না। এই মোটা হওয়া মেয়েদের যেমন শরীরে প্রভাব ফেলে তেমনি মানসিক-শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে জীবনের বিভিন্ন ঝুঁকি পর্যন্ত বয়ে আনতে পারে।

মোটা মেয়েরা অনেক সময় শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেসব মেয়েদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তারা ওজন কমানোর বিভিন্ন প্রচেষ্টা গ্রহণ করলেও অনেক সময় তা বিফলে যায়। তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।

কারণ আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি সত্যিকার অর্থে আপনার অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমানোর কার্যকর উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

নিজের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় জন্য প্রথমে নিজে্র খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনা জরুরী। আপনার ওজনের বেশিরভাগ নির্ভর করে আপনার খাদ্যাভ্যাসের উপর। আপনি কতটুকু খান, আপনি কি খান তার উপর। তাই ওজন কমানোর জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে এই অংশে আলোচনা করব।

নিচের আলোচনা থেকে আপনাদের ব্যালেন্স্ড ডায়েট, ডায়েট প্ল্যান, যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন এবং বিশেষ স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ খাবার সম্পর্কে জেনে নিনঃ

ব্যালেন্সড ডায়েট

প্রথমেই জানাবো দ্রুত ওজন কমাতে সহায়ক ব্যালেন্সড ডায়েট সম্পর্কে। একটি সুষম খাদ্য তালিকা আপনার ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। নিচে এমন সব খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সুষম খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করলে উপকৃত হবেন।

প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহণঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানো জন্য প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি গ্রহণ করতে হবেযেমনঃ মাছ (সামুদ্রিক), মাংস, ডিম, দুধ, টোফু, বাদাম, বীজ, সয়াবিন, পনির এবং অন্যান্য দুধজাত খাবার। এগুলো হলো প্রোটিন যুক্ত খাবার। পেশি গঠন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হরমোন তৈরি এবং এনজাইমের বৃদ্ধিতেও প্রোটিন যুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফাইবার যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুনঃ ওজন কমানোর জন্য আপনাকে এমন খাবার বাছাই করতে হবে যা খেলে দীর্ঘ সময় পেটে থাকে সাথে অল্প খেয়ে পেট ভরা ভরা লাগে। অর্থাৎ ফাইবার যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে। 

এমন খাবার হল শাকসবজি (ব্রকলি, পালং শাক, গাজর প্রভৃতি), ফল (আপেল, কমলা, পেয়ারা প্রভৃতি), সম্পূর্ণ শস্য (ওট, ব্রাউন রাইস, কুইনোইয়া প্রভৃতি) সিম ও মটরশুটি। এগুলো সাধারণত ফাইবার যুক্ত খাবার হিসেবে বিবেচিত।

স্বাস্থ্যকর চর্বি ওজন কমানোর সহায়কঃ দ্রুত ওজন কমাতে গ্রহণ করতে হবে স্বাস্থ্যকর চর্বি। যেমনঃ অয়েল, অ্যাভোকাডো, বাদাম, কাজু, চিনাবাদাম, সূর্যমুখি তেল ভালো চর্বি হিসেবে পরিচিত। ভালো চর্বিতে রয়েছে এমন খাদ্য উপাদান যা হরমোনের সঠিক কার্যকারীতা এবং মস্তিষ্কের কার্যক্রমে সহায়তা করে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।

এই ধরনের চর্বি হৃদরোগের ঝুঁকি সহ শরীরের প্রদাহ কমায়। এজন্য এটিকে ভালো চর্বি বলা হয়।

ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি এর রাখুন খাদ্য তালিকায়ঃ জুতো ওজন কমানোর জন্য ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এছাড়া ওজন কমানোর পাশাপাশি দেহকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন এবং মিনারেল খাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।

কারণ প্রত্যেকটি ভিটামিন বিভিন্ন রকমের কাজ করে। ভিটামিন সি যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তেমনি ভিটামিন ডি হাড়ের শক্তি বাড়ায়। বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি, ফলমূল (আপেল, কমলা, বেরি), পনির, দই, দানা শস্য প্রভৃতি খাবার খাওয়া যেতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনঃ আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে দৈনিক পানি গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ পানি অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করে। কমপক্ষে১০-১২ গ্লাস পানি খাওয়া (প্রতিদিন) সবার জন্যই একটি অপরিহার্য বিষয়।

এক্ষেত্রে চাইলে কুসুম গরম পানি পান করতে পারেন। এটাও উপকার মিলবে। এছাড়া প্রতিবার খাওয়ার আগে অবশ্যই এক গ্লাস করে পানি পান করতে হবে। এতে আপনার খাওয়ার পরিমাণ কম এবং শরীর হাইড্রেট রাখার পাশাপাশি ক্যালোরি পুড়াতেও সহায়তা করবে।

এখন আপনাদের জানাবো দ্রুত ওজন কমাতে আপনার প্রতিদিনের খাবার গুলো কতটুকু পরিমাণে খাবেন নিচে এ সম্পর্কে গবেষণা থেকে পাওয়া অথ্যগুলোঃ
  • ছোট পাত্রে খাবার খেলে খাবার খাওয়া তুলনামূলকভাবে কম হয়। তাই অতিরিক্ত ক্যালরি নেওয়া থেকে বিরত থাকতে ছোট পাত্রে খাবার পরিবেশন করার চেষ্টা করুন।
  • একেবারে খালি পেটে না থেকে একটু একটু করে খেয়ে হালকা ভরা পেট রাখা ভালো। সে ক্ষেত্রে দিনে তিনটি প্রধান খাবারের (সকালের খাবার, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার) পাশাপাশি দিনে দুইবার স্ন্যাক্স (দুই প্রধান খাবারের মাঝে খাবার) খেতে পারেন।
  • স্ন্যাক্স বা হালকা নাস্তা হিসেবে ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া না খেয়ে আপনি ফল, বাদাম, হালকা দই ইত্যাদি খেতে পারেন।
  • আপনি চেষ্টা করবেন আপনার খাদ্যা পাশে এমন পরিমাণে শাক-সবজি থাকুক যাতে আপনার পেটের অর্ধেক অর্থাৎ ৫০% শাক সবজি দিয়ে ভরা থাকবে।

ব্যালেন্সড ডায়েট মানে শুধু খাবার খাওয়া না, এমন সব খাবার আছে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হয়। নিচে এমন সব খাবারের নাম ও কারণ উল্লেখ করা হলোঃ

চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুনঃ অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার যেমন সোডা, কেক, কুকি, মিষ্টান্ন, প্যাকেট জাত পানীয় ও স্ন্যাক্স এর মতো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কেননা অতিরিক্ত চিনি অতিরিক্ত ক্যালরির শরীরের যোগ করে। এর ফলে কমানোর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবারকে না বলুনঃ সময় বাঁচানোর জন্য অনেকেই প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়ে থাকেন, তবে এই খাবারেই থাকে অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও তেল যা আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। তাই দ্রুত ওজন কমাতে প্রক্রিয়াজাত খাবারকে না বলতে হবে। যেমনঃ চিপস, ফাস্টফুড, পিজ্জা, বার্গার, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস ইত্যাদি।

কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ সীমিত করুনঃ আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ সীমিত করতে হবে। এই খাদ্য উপাদানের মধ্যে পড়ে সাদা রুটি, সাদা পাস্তা, পিঠা, কেক, প্যানকেক ইত্যাদি।

তেল যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিনঃ দ্রুত ওজন কমাতে তেল যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত তেলে ভাজা হয় বা রান্না করা হয় এমন সব খাবারের মধ্যে পড়ে বিভিন্ন ফ্রাইড ফুড, প্যাস্ট্রি, মাংসের তেলযুক্ত খাবার ইত্যাদি।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বাদ দিনঃ দ্রুত ওজন কমানোর জন্য অতিরিক্ত চিনি ও তেলের পাশাপাশি অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এর মধ্যে পড়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার, উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার (উদাহরণস্বরূপ সস), স্ন্যাকস, ইন্সট্যান্ট খাবার ইত্যাদি।

বিশেষ স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ খাদ্যাভ্যাস

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য বিশেষ কোনো রোগ শরীরে আছে কিনা, সে ব্যাপারেও বিশেষ নজর দিতে হবে। অনেকেই আছেন যারা ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত কিন্তু ওজন কমানো জরুরী। এক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য বিশেষ ডায়েট প্লান সম্পর্কে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

নিচে বিশেষ স্বাস্থ্যের জন্য যে বিশেষ খাদ্যাভ্যাস জরুরী তা আলোচনা করা হলোঃ

ডায়েবেটিস থাকলে যে ডায়েট পরিকল্পনা করতে পারেনঃ

বন্ধু বানানঃ হালকা শর্করা যুক্ত খাবার, পুরো শস্যজাতীয় খাবার (ব্রাউন রাইস, ওট, কুইনোয়া), শাক-সবজি, মাছ, মুরগি, ডিম।

শত্রু বানানঃ সাদা রুটি, সাদা চাল, মিষ্টি খাবার, চিনিযুক্ত পানীয়।

মেনে চলুনঃ খাদ্য গ্রহণের সময় সমান ভাবে ভাগ করে নিতে হবে। যেমন তিনবার প্রধান খাবার এবং দুইবার স্ন্যাক্স গ্রহণ করা।

হৃদরোগ থাকলে যে ডায়েট পরিকল্পনা করতে পারেনঃ

বন্ধু বানানঃ স্বাস্থ্যকর চর্বি (অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো), শাক সবজি, ফলমূল, সম্পূর্ণ শস্য (ব্রাউন রাইস, গম, ওট প্রভৃতি), কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন (উদাহরণস্বরূপ- মাছ,মাংস)

শত্রু বানানঃ অতিরিক্ত লবণ, উচ্চ ট্রান্সফ্যাট বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার, নিয়মিত তেল, সস, মাখ্‌ অতিরিক্ত লবণ।

মেনে চলুনঃ খাদ্য গ্রহণের সময় সমান ভাবে ভাগ করে নিতে হবে। যেমন তিনবার প্রধান খাবার এবং দুইবার স্ন্যাক্স গ্রহণ করা।

পেটের সমস্যা (রিফ্লাক্স, গ্যাস্ট্রাইটিস) থাকলে যে ডায়েট পরিকল্পনা করতে পারেনঃ

বন্ধু বানানঃ ওট মিল, সবজি, ভাত, মুরগি, মাছ (হালকা ও সহজে হজম করা যায় এমন খাবার), দই (প্রবায়োটিক খাবার) প্রভৃতি।

শত্রু বানানঃ অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার, মসলা, টমেটো, ক্যাফেইন, সোডা, তিতা খাবার প্রভৃতি

মেনে চলুনঃ খাবার ছোট ছোট ভাগে খাওয়ার চেষ্টা করুন, বড় খাবার বা একসাথে অনেক খাবার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।

থাইরয়েড থাকলে যে ডায়েট পরিকল্পনা করতে পারেন

বন্ধু বানানঃ সয়া প্রোডাক্ট, ওটস্, ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, বাদাম প্রভৃতি 

শত্রু বানানঃ গলিত খাবার

মেনে চলুনঃ আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার (সল্ট, মাছ প্রভৃতি) খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং সব সময় পরিমিত সয়া প্রোডাক্টস গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।

ডায়েট প্ল্যান

এখন জেনে নিন মেয়েদের ওজন দ্রুত কমানোর জন্য সকাল দুপুর ও রাতের বিশেষ ডায়েট প্ল্যান সম্পর্কে। আপনি যদি আপনার ওজন দ্রুত কমাতে চান তাহলে সঠিক খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রথমেই জেনে নিন দিনের প্রথম খাবার অর্থাৎ সকালের খাবারের ডায়েট প্লান।

সকাল (ব্রেকফাস্ট)

সকাল শুরু করতে পারেন আপনি কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পানিও পান করে। এরপর সকালের নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন এক বাটি সবজি দিয়ে একটি লাল আটার রুটি। বা টক দই সাথে চিয়া সিড এবং একটি ডিম। কিছুক্ষণ বের হতে দিয়ে পান করতে পারেন এক কাপ গ্রিন টি।

সকাল এবং দুপুরের মধ্যবর্তী সময়ে খেতে পারেন এক বাটি ফ্রুটস বা সবজির সালাড। পান করতে পারেন ডিটক্স ওয়াটার।

দুপুরের খাবার

দুপুরের খাবারে আপনি খেতে পারেন ওটস দিয়ে তৈরি এক কাপ সবজির খিচুড়ি সাথে এক পিস মাছ বা মুরগির মাংস। খেতে পারেন হাফ বাটি ডাল।

দুপুরের খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা পর খেতে পারেন এক গ্লাস ডিটক্স ওয়াটার।

দুপুর এবং এর খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে খেতে পারেন এক মুঠো বাদাম এবং গ্রিন টি।

 রাতের খাবার

রাতের খাবার অবশ্যই সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এই সময় খেতে পারেন এক বাটি সবজি, এক টুকরো মাছ বা মুরগির মাংস এবং ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ।

প্রিয় পাঠক, দ্রুত ওজন কমানোর জন্য উপরের খাবার পরিকল্পনা অনুসরণ করতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য ঘরোয়া এই উপায় গুলো অনুসরণ করে আমার পরিচিত একজন দ্রুত ওজন কমানোর লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছেন।

তবে আপনি যদি বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান বা আপনার শারীরিক কোন সমস্যা থাকলে, সঠিক ডায়েট প্লান করার জন্য অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

লাইফ স্টাইলে ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমাতে ব্যায়াম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য খাবারের পরপরই ব্যায়ামের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ওজন কমানোর বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে। তবে ওজন কমানোর জন্য সব ব্যায়াম করা প্রয়োজন হয় না। এই আর্টিকেলে যে ব্যায়াম গুলো করলে ওজন দ্রুত কমবে সেই ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

দ্রুত ওজন কমাবে কার্ডিও

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত কার্ডিও ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কার্ডিও ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। এসব ব্যায়াম করে আপনার পেশী শক্তিশালী হবে, পাশাপাশি আপনার ফ্যাট কমে যাবে অনেকাংশে। কার্ডিও এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু ব্যায়াম হলো হাটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, জাম্প রোপ এবং হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT)।

এখন কিভাবে দৌড়াবে বা হাঁটতে সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না, তবে চেষ্টা করবে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট দৌড়ানোর এবং ১০০০ স্টেপস হাটা। এতে করে আপনার ফ্যাট কমবে। চাইলে আপনি কিছু সময় সাইক্লিং করতে পারেন। এতেও ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা টানা সাইকেল করতে চেষ্টা করুন। এতে শুধু আপনার ফ্যাট কমবে না বরং আপনার পায়ের শক্তিও বাড়বে। এবার আসা যাক জাম্প রোপে। দড়ি দিয়ে তার উপর জাম্প করায় মূলতঃ চাপ প্রয়োগ। ২০ থেকে ৩০ মিনিট জাম্প রোপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

মেয়েদের-দ্রুত-ওজন-কমানোর-উপায়

এছাড়া আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী করতে পারেন হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং। এই ব্যায়ামে ২০ মিনিট হাটার পর ৫ মিনিটের একটা ব্রেক নিয়ে আবার ২০ মিনিট হেঁটে আবার ৫ মিনিটের ব্রেক নিয়ে করতে হয়। এই ব্যায়ামটিও দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করবে স্ট্রেংথ ট্রেনিং

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করবে আরেকটি ব্যায়াম তা হল স্ট্রেংথ ট্রেনিং। এই ব্যায়ামে অন্তর্ভুক্ত ট্রেনিং গুলো সাধারণত মেটাবলিজম বাড়াতে এবং পেশি গঠনে সাহায্য করে। যার কারণে ওজন কমান জন্য কার্ডিও ছাড়াও এই ব্যায়ামকে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হয়। আপনি চাইলে স্কোয়াট, হাফ স্কোয়াট, পুল আপস, পুশ আপস, লেগ প্রেস ও লঞ্জ পারেন।

স্কোয়াট এবং হাফ কোয়াটার মধ্যে একটাই পার্থক্য। হাফ স্কোয়াটে দাঁড়ানো-বসা চেয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। আবার স্কোয়াটে দাঁড়ানো বসে আপনি একেবারে মেঝেতে বসে আবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।তিন সেটে ১২ থেকে ১৩ বার অর্থাৎ ৩৬ থেকে ৩৯ বার করতে হবে। বাকি ব্যায়ামগুলো আপনি এই অনুযায়ী করতে পারেন।

তবে সময়ের সাথে সাথে এই সীমাবদ্ধতা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। তাহলে তা বেশি কার্যকরী হবে। প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন প্রতি সেশন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় নিয়ে করলে আপনার ফ্যাট অনেক কমে যাবে।

আরো যে সকল ব্যায়াম করতে পারেন

উপরোক্ত ব্যায়ামগুলো বেশিরভাগ মানুষ ফ্যাট কমাতে করে থাকে। তবে যদি আপনি এই ব্যায়ামগুলো ছাড়াও আরো ব্যায়াম করতে চান তাহলে যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। এছাড়া অনেকে মনে করে ওজন কমবে ও ক্যালোরি পুড়ে। আবার ফ্লেক্সিবিলিটি ও স্ট্রেচিং ট্রেনিং এর মাধ্যমেও আপনি আপনার বডি শেপে আনতে পারবেন, অর্থাৎ ফ্যাট কমাতে পারবেন।

দ্রুত ওজন কমাতে স্ট্রেস কমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমান

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর আরেকটি কার্যকর ঘরোয়া উপায় পর্যাপ্ত ঘুম। অর্থাৎ মানসিক স্ট্রেস কমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

বয়স অনুযায়ী ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কমবেশি হতে থাকে। রাতে অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কারন যথাযথ ঘুমের অভাবে আপনার শরীরের মেটাবলিজম নষ্ট হতে পারে। যার ফলাফলে আপনার খাওয়ার প্রবণতা তুলনামূলক বেড়ে যায়। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই দ্রুত ওজন কমাতে ঘুমের দিকে নজর দিন।

আরো পড়ুনঃ কোলেস্টেরল কমাতে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে যেসব খাবার

এছাড়া অতিরিক্ত স্ট্রেস কখনোই ভালো জিনিস না। স্ট্রেসের কারণে শরীরে এক ধরনের হরমোন সৃষ্টি হয়। সেই হরমোনটি ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এই হরমোন সৃষ্টি হতে বাধা দিতে আপনাকে অবশ্যই স্ট্রেস কমাতে হবে। নিজের পছন্দের কাজ করে, যোগ ব্যায়াম করে, কোথাও ঘুরতে গিয়ে খুব সহজে স্ট্রেস কমানো সম্ভব।

স্ট্রেস কমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমানোর ফলে আপনার শরীরের মেটাবলিজম হার বৃদ্ধি পাবে, ফলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব হবে।

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি ডায়েট প্লান সহ সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও অন্যান্য কার্যাবলী অনুসরণ করতে পারে্ন, তাহলে এই উপায় গুলো আপনার ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই অনলাইনে সার্চ দিয়ে থাকেন। কিন্তু এটা কী আদৌ সম্ভব? তারপরেও আপনাদের এটি নিশ্চিত করতে পারবো যে, ১ কেজি করে ওজন কমানো সম্ভব। কিন্তু কাজটা অতটাও সহজ নয়। এজন্য মেনে চলতে হবে কঠোর ডায়েট প্লান ও ব্যায়াম।

নিচে দেওয়া সহজ কিন্তু প্রভাবশালী ডায়েট প্ল্যান ফলো করতে পারলে আপনি প্রতিদিন প্রায় এক কেজির মতো ওজন কমাতে পারবেন। ম্যাজিকের মত কাজ করে এই প্ল্যানগুলোঃ

  • বেশি বেশি করে পানি পান করুন। পানি পান করলে পেট সাধারণত অনেকটা ভরে যায় এবং ভরা ভরা ভাব হয়। যার কারণে বেশি খেতে হয় না। খাওয়ার আগে এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করে নিন। এরপর একটি ছোট প্লেটে ধীরে ধীরে খাবার খান।
  • স্ন্যাক্স খেতে চাইলে আপনি এক গ্লাস পানি খেয়ে বাদাম বা ফল খেয়ে তারপর গ্রিন টি পান করুন। তবে অবশ্যই একটি জিনিস খেয়াল রাখবেন গ্রিন টি যেন চিনিযুক্ত না হয়।
  • রাতের খাবারে ভাতের বদলে লাল রুটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ ভাতে অতিরিক্ত শর্করা থাকে কিন্তু লাল রুটিতে তুলনামূলক কম থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি ভাত বা রুটি না খেয়ে স্বাস্থ্যকর সবজি সালাদ খান।
  • সব সময় সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন। সক্রিয় থাকার ফলে আপনার শরীর ব্যস্ত থাকবে, যার ফলে ফ্যাট কমার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
  • বলা হয়ে থাকে শসা খেলে দ্রুত ওজন কমানো যাবে। কেননা শসা খেলে তাড়াতাড়ি পেট ভরে যায় ও অনেক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং এমন খাদ্য উপাদান রয়েছে যা শরীরের অ্যালকালাইন দূর করে।
  • তাড়াতাড়ি সকালে উঠুন এবং তাড়াতাড়ি রাতে শুয়ে পড়ুন। ৮ ঘন্টার ঘুম নিন।
  • সকালের খাবার ও দুপুরের খাবারের মাঝে এক ঘন্টা কার্ডিও বা যেকোনো ব্যায়াম এবং দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝে এক ঘন্টা হাই ইন্টেন্সিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা যেকোনো ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ুন।
এই উপায় বা অভ্যাসগুলো আপনার ওজন দ্রুত কমানোর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। অর্থাৎ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট হারে ওজন কমতে শুরু করবে। মূলতঃ এটাকেই বলা হয় প্রতিদিন এক কেজি করে ওজন কমানোর উপায়।

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে এই অংশে জেনে নিন। মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য আর্টিকেলের উপরের অংশটি পড়ে আসতে পারেন। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় ফলো করতে গেলে আপনার খাবারের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে।

নিচে তাহলে জেনে নিন ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কেঃ

প্রোটিন ও ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবেঃ প্রোটিনযুক্ত ও ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।অতিরিক্ত চর্বি, অতিরিক্ত লবণ ও অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া একেবারে ভর পেটে না খেয়ে একটু একটু করে খান এবং বারবার খান। জাঙ্ক ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, রং মেশানো খাবার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।

আরো পড়ুনঃ যেসব খাবার খেলে ডায়াবেটিস থাকবে নিয়ন্ত্রণে

খাবারকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে গ্রহণ করুনঃ ছোট ছোট প্লেটে খাবার খান এবং বেশি বেশি করে ফলমূল ও শাকসবজি খান। আপনার পেট যেন ৫০% শাকসব্জিতে ভরে থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন।দিনে তিনবার প্রধান খাবার এবং দুইবার স্ন্যাকস খাওয়ার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনঃ প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন এবং খাবার আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন। এতে করে আপনি খাবার কম খাবেন এবং অতিরিক্ত ক্যালরি পড়তে সহায়তা করবে। গ্রিন টি পান করার চেষ্টা করুন।

ব্যায়াম ব্যতীত অন্যান্য শারীরিক একটিভিটিস করুনঃ হাঁটাচলা করুন, শরীরকে সচল রাখুন।ব্যায়াম না করলেও শরীরকে সচল রাখলে ফ্যাট কমানো সম্ভব। শরীরকে সচল রাখতে পারেন সব সময় হেঁটে আর লিফটের বদলে সিড়ির ব্যবহার করে। স্ট্রেস কমিয়ে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুম ছাড়া ওজন কমানোর স্বপ্ন দেখা প্রায় অসম্ভব। মেডিটেশন বা প্রিয় কাজ করে আপনি আপনার স্ট্রেস কমাতে পারেন।

ইন্টারমিটেন্ড ফাস্টিং পদ্ধতি অনুসরণ করুনঃ এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় যা ইচ্ছা তা খেয়ে যত ইচ্ছা তত খেয়ে পেট ভরাতে পারবেন কিন্তু বাকি সময় খাবার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ১৬ঃ৮। এখানে ১৬ ঘন্টা না খেয়ে এবং ৮ ঘন্টা খেয়ে দিন কাটাতে হবে। শুনতে সহজ মনে হলেও ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর এ পদ্ধতিটি প্রভাবশীল।

মেয়েদের-দ্রুত-ওজন-কমানোর-উপায়

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় সত্যিই খুব কার্যকর। বিভিন্ন উপায়ে লেবু দিয়ে ওজন কমানো সম্ভব। এখানে অবশ্য লেবু খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলোতে সহজেই লেবু যোগ করতে পারেন।

নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন লেবু দিয়ে কিভাবে ওজন কমানো সম্ভব সে বিষয়ে।

কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সকালে খাওয়ার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে একটা সম্পূর্ণ লেবুর রস মেশাতে হবে। এক্ষেত্রে কোন চিনি ব্যবহার করা যাবে না।

যদি খেতে না পারেন তাহলে একটু পরিমাণে মধু মেশাতে পারেন। যদি তাও খেতে না পারেন তাহলে সকালে এক চা চামচ মধুর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।

লেবু ও দারুচিনি মিশ্রিত পানিঃ আপনি দারুচিনির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাসও করতে পারে। এই পদ্ধতিও ফ্যাট কমাতে অনেক কার্যকর।

আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

লেবু দারুচিনি ও তেজপাতার পানিঃ লেবু ও তেজ পাতা দিয়ে তৈরি পানীয় সকালে খালি পেটে পান করলে ওজন কমাতে খুব উপকারে আসে। নিয়মিত এই পানীয়টি পান করতে পারেন।

লেবু ও আদা পানিঃ লেবু, একটা তেজপাতা, এক টুকরো দারুচিনি এবং এক ইঞ্চি পরিমাণ আদা কুচি করে আপনি যদি এগুলো একসাথে পিষে বা সবগুলো উপাদান কয়েক মিনিট ফুটিয়ে হালকা গরম অবস্থায় খেলে উপকার পাবেন। নিয়মিত সকালে খালি পেটে এই পানিটি পান করলে আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

উপরে উল্লেখিত লেবু পানীয় গুলো নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যাবে এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি পাবে। আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং অতিরিক্ত চর্বি কমে যাবে। এছাড়া  লেবুর রস আপনাকে দিনের বেলা হাইড্রেট রাখবে।

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানো সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ ওজন কমাতে কি কি খাবার বাদ দিতে হবে?

উত্তরঃ ওজন কমাতে কিছু কিছু খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। যেমনঃ অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার, মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাবার, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া, চিপস চকলেট জাতীয় খাবার। খেতে হবে প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি।

প্রশ্নঃ ৭ দিনে প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায়?

উত্তরঃ ৭ দিনে প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর চেষ্টা হিসেবে বেশি বেশি পানি পান, ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি ফলমূল গ্রহণ করতে হবে। সাথে ৪০ থেকে ১ ঘন্টার মত হাটা বা ব্যায়াম ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

প্রশ্নঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন কমে?

উত্তরঃ সকালে খালি পেটে বিশেষ কিছু পানীয় রয়েছে যা নিয়মিত পান করলে ওজন কমাতে সহায়তা করে। যেমনঃ লেবু পানি, জিরা পানি, গ্রিন ্টি, মধু দারুচিনি মিশানো পানি, হলুদ পা্নি, মৌরি ভেজানো পানি।

প্রশ্নঃ তিন দিনে ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় কি?

উত্তরঃ তিনদিনের ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনাকে একটি কঠোর ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান,  শর্করা জাতীয় খাবার কম গ্রহণ, শাকসবজি ও ফলমূল খাদ্য তালিকায় রাখা, যেকোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করা।

প্রশ্নঃ ওজন কমাতে দিনে কতবার খাওয়া উচিত?

উত্তরঃ ওজন কমানোর জন্য দিনের খাবারটি কয়েকটি ভাগে ভাগ করে অল্প অল্প খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আপনার তিন বেলা এবং একবেলার নাস্তা কে ভাগ করে ৬ বেলায় অল্প অল্প খেলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশি প্রভাব ফেলবে।

লেখকের কথা

প্রিয় পাঠক, মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনার দ্রুত ওজন কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে কার্যকর ঘরোয়া এই উপায় গুলো শুরু করতে পারেন। এই উপায় গুলো আপনার ওজন দ্রুত কমাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। তবে একেকজনের শরীরে ওজন কমানোর হার একেক রকম হয়ে থাকে।

দেখা যায় একই প্রচেষ্টায় একজনের বেশি ওজন কমলে আরেকজনের ওজন কমার হার কম হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি মনোবল শক্ত রেখে এই উপায়গুলি নিয়মিত মেনে চলতে পারেন, তাহলে একসময় আপনার ওজন দ্রুত কমতে শুরু করবে এবং আপনি কাঙ্খিত ওজনে পৌঁছাতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url